আল্পস এখন মানুষের কব্জায়
১৬ অক্টোবর ২০১০![Gotthard Tunnel Durchbruch](https://static.dw.com/image/6116194_800.webp)
ইউরোপের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের কাছ থেকে উত্তরাঞ্চলকে আলাদা করে রেখেছে পৃথিবীর অন্যতম পর্বতমালা আল্পস৷ এই পর্বতমালার গা বেয়ে যে রাস্তা তৈরি হয়েছে তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করে হাজার হাজার গাড়ি৷ কিন্তু বিশাল পর্বতমালা ঘুরে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যেতে সময়ও লাগে অনেক৷ তাছাড়া গাড়ি চলাচলের কারণে আল্পসের পরিবেশও দিন দিন দূষিত হয়ে পড়ছিল৷ তাই সুইজারল্যান্ডের সরকার এই আল্পসের ভেতর দিয়েই টানেল তৈরির পরিকল্পনা নেয়, যার মধ্য দিয়ে রেলগাড়িতে করে এক দেশ থেকে অন্য দেশে মালামাল পরিবহণ করা যাবে৷
এই সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শুরু হয় প্রায় ১৪ বছর আগে৷ এর দৈর্ঘ্য ৫৭ কিলোমিটারের বেশি, ব্যাস সাড়ে নয় মিটার৷ এতদিন ধরে জাপানের হোনশু ও হোক্কাইডো দ্বীপকে এক করা প্রায় ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটি ছিল বিশ্বের দীর্ঘতম ভূগর্ভস্থ টানেল৷ এরপরে রয়েছে ব্রিটেন ও ফ্রান্সকে একত্র করা ইংলিশ চ্যানেলের টানেল যার দৈর্ঘ্য ৫০ কিলোমিটারের বেশি৷
এই টানেলের নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হতে সময় লাগবে আগামী ২০১৭ সাল৷ এরপর এই টানেলের ভেতর দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ২০০ ট্রেন যাতায়াত করবে, গতি থাকবে ঘন্টায় আড়াইশ কিলোমিটার৷ ফলে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ থেকে মিলানে যেতে সময় লাগবে আড়াই ঘন্টার মত, যা এখনকার চেয়ে এক ঘন্টা কম৷ পাথুরে আল্পসের ভেতর দিয়ে পাথর কেটে কেটে এত বছর ধরে এই সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছে৷ যে পরিমাণ পাথর কাটা হয়েছে তা দিয়ে মিশরের পাঁচটি দ্য গ্রেট পিরামিড তৈরি করা সম্ভব! এই পাথর কাটতে গিয়ে নানা সময় দুর্ঘটনাও ঘটেছে, আর তাতে এখন পর্যন্ত প্রাণ দিয়েছেন আট জন শ্রমিক৷
এদিকে, সুইজারল্যান্ডের মত অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স ও ইটালিও আল্পসের পশ্চিম ও পূর্বে সুড়ঙ্গপথ তৈরির কাজ শুরু করেছে৷ এই কাজ শেষ হওয়ার কথা আগামী ২০২০ সালে৷ আর বেশিদিন নয়, মাত্র এক দশক পরেই বিশ্বের অন্যতম এই পর্বতমালা চলে আসবে মানব সভ্যতার হাতের মুঠোয়৷
প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার