1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আল্লামা শফীর ছেলে আউট, বাবুনগরী ইন?

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

হেফাজতে ইসলামে আবারও প্রভাবশালী হয়ে উঠেছেন মাওলা জুনায়েদ বাবুনগরী৷ পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছেন হেফাজতের আমীর আল্লামা আহমদ শফীর পুত্র আনাস মাদানী৷ তার প্রভাব পড়েছে হেফাজতের মূল কেন্দ্র চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায়৷

বুধবার মাদ্রাসায় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছেছবি: bdnews24.com

হাটহাজারী মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে তা-ই নির্ধারণ করে দেয় হেফাজতের নিয়ন্ত্রণ কোন দিকে থাকবে৷ হেফাজতের আমীর আল্লামা আহমদ শফীর পুত্র আনাস মাদানীকে নিয়েই এখন সংকট তৈরি হয়েছে৷ তিনি তার বাবার মাদ্রাসা এবং হেফাজতের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে রাখতে গিয়ে নানা কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠছে৷ তার প্রভাবে গত জুন মাসে বাবুনগরীকে মাদ্রাসার সহযোগী পরিচালকের (মুঈনে মুহতামিম) দায়িত্ব থেকে বাদ দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে৷ বাবুনগরী অবশ্য এখনো হেফাজতের মহাসচিব পদে আছেন৷

মাওলানা শফীর ছেলে আনাস মাদানী হেফাজতের প্রচার সম্পাদক৷ তিনি একই সঙ্গে হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষক৷ কিন্তু অভিযোগ আছে, তার পিতা অসুস্থ হওয়ায় তিনি মাদ্রাসা এবং হেফাজতের মধ্যে তার প্রভাব বাড়াতে থাকেন৷ বাবুনগরীকে মাদ্রাসা থেকে বাদ দেয়ার পর তিনি কয়েকজন শিক্ষককে মাদ্রাসা থেকে বাদ দেন এবং তার বিরোধী ছাত্রদের নানাভাবে কোণঠাসা করেন৷  

হাটহাজারী মাদ্রাসায় প্রায় ২০ হাজার ছাত্র আছে৷ তারাও শিক্ষকদের অনুসারী হিসেবে নানা ভাগে বিভক্ত৷ গত ৯ জুলাই অবশ্য মাওলানা আহমেদ শফি তার ছেলে এবং বাবুনগরীকে নিয়ে এক টেবিলে বসে তাদের মিলিয়ে দেন৷ কিন্তু বাবুনগরী মাদ্রাসায় তার পদ ফিরে পাননি৷

মাদানীর ভূমিকাকে কেউ ভালো চোখে দেখছেনা: আজিজুল হক ইসলামাবাদী

This browser does not support the audio element.

এই সময়ে আনাস মাদানীর বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহারের নানা অভিযোগ ওঠে, যার শিকার হন মাদ্রাসার ছাত্ররাও৷ তারাই বুধবার মাদ্রাসায় ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায়৷ তারা ভাঙচুরও করে৷ আনাস মাদানীর অনুসারী এক শিক্ষক তাদের হাতে প্রহৃতও হন৷ বিক্ষোভের এক পর্যায়ে সুরা সদস্যরা বৈঠক করে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসার শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কার করেন৷

ছাত্ররা মোট পাঁচ দফা দাবি দিয়েছে৷ দাবিগুলো হলো: মাওলানা আনাস মাদানীকে অনতিবিলম্বে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করতে হবে, ছাত্রদের প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান ও সবধরনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে, আল্লামা আহমদ শফী অক্ষম হওয়ায় মহাপরিচালকের পদ থেকে সম্মানজনকভাবে অব্যাহতি দিয়ে উপদেষ্টা বানাতে হবে, উস্তাদদের পূর্ণ অধিকার ও নিয়োগ-বিয়োগকে শূরার কাছে পূর্ণ ন্যাস্ত করতে হবে, বিগত শূরার হাক্কানি আলেমদেরকে পুনর্বহাল ও বিতর্কিত সদস্যদের পদচ্যূত করতে হবে৷ এর মধ্যে প্রথম দাবি আনাস মাদানীকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করে ছাত্রদের শান্ত রাখা হয়েছে৷ কিন্তু অন্যান্য দাবির ব্যাপারেও তারা অনড় রয়েছে বলে জানা গেছে৷

বিভিন্ন পক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেছে এখন মাওলানা বাবুনগরীর অনুসারীরাই মাদ্রাসা এবং হেফাজতে প্রাধান্য বিস্তার করছে৷

মাদানীকে নানা সমস্যার কারণে সর্বসম্মতিক্রমে বহিষ্কার করা হয়েছে: মজলিশে সূরার সদস্য নোমান ফয়েজি

This browser does not support the audio element.

হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ‘‘আনাস মাদানী কিছু ছাত্রের ভর্তি প্রক্রিয়ায় বাধা দিয়ে আসছিলেন৷ তাদের ভর্তি ফর্ম আটকে রেখেছিলেন৷ কয়েকজন শিক্ষককে অন্যায়ভাবে অব্যাহতিও দেন৷ তার এই ভূমিকাকে কেউ ভালো চোখে দেখছে না৷’’ তিনি বলেন, ‘‘ছাত্ররা যে পাঁচ দফা দাবি দিয়েছে তা যৌক্তিক এ কারণেই আনাস মাদানীকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে৷’’

তার মতে, আনাস মাদানী শফী হুজুরের ছেলে হলেও মাদ্রাসা চলে মাদ্রাসার নিয়মে৷ তারপরও তিনি শিক্ষতায় অনেক জুনিয়র হয়েও এমন কাজ করেছেন, যাতে শিক্ষক, ছাত্র এবং এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ৷

তাকে বহিষ্কারের পিছনে মাওলামা বাবুনগরীর কোনো হাত আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘না তার কোনো ভূমিকা নেই৷’’

বুধবারের ছাত্র বিক্ষোভের পর মাদ্রাসার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানান মাদ্রাসার মজলিশে শূরার সদস্য আল্লামা নোমান ফয়েজি৷ তিনি বলেন, ‘‘আনাস মাদানীকে নানা সমস্যার কারণে সর্বসম্মতিক্রমে বহিস্কার করা হয়েছে৷গত জুন মাসে মাওলানা বাবুনগরীকেও শফি হুজুরের মতামতের ভিত্তিতে বাদ দেয়া হয়েছিল৷” তিনি দাবি করেন, হেফাজতের কোনো বিষয় এর ভিতরে নেই৷’’

এ নিয়ে কথা বলার জন্য মাওলানা বাবুনগরী ও আনাস মাদানীর সঙ্গে যোগাযোগর চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি৷

গতবছর জুনের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ