1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ইসলামি রাষ্ট্র’ কী ও কেন

১৮ আগস্ট ২০১৪

আজ বলতে হবে, এই জিহাদিরা মধ্যপ্রাচ্যে একটা উঠতি শক্তি, ইরাকের এক-তৃতীয়াংশ তাদের দখলে৷ ওবামা প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে বিমান হানা চালাচ্ছে, খোদ ভ্যাটিকান থেকে যার সমর্থন আসছে৷

জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়েদার চেয়ে বেশি বিপজ্জনক ‘ইসলামি রাষ্ট্র’ছবি: picture-alliance/abaca

জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়েদার চেয়ে বেশি বিপজ্জনক এই ‘ইসলামি রাষ্ট্র’৷

মধ্যপ্রাচ্যে ‘ইসলামি রাষ্ট্রের' উপস্থিতি হবে শক্তিশালী এবং সম্ভবত দীর্ঘমেয়াদি – বলছেন পণ্ডিতরা৷ শুধু বোমা মেরে তাদের অগ্রগতি থামানো যাবে না৷ সেজন্য লাগবে জাতিসংঘের সনদ-পুষ্ট একটি আন্তর্জাতিক জোট ও তাদের সেনাবল৷

‘ইসলামিক স্টেট' নামধারী জিহাদি বাহিনীর লক্ষ্য হলো, ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রিস নদের মধ্যবর্তী এলাকায় একটি আন্তঃ-সীমান্ত খলিফাৎ সৃষ্টি করা৷ গোড়ায় তাদের এই উচ্চাশার কথা শুনে লোকে হেসেছিল৷ আজ সেই ইসলামিক স্টেটের যোদ্ধারা আত্মবিশ্বাসে ভরপুর৷

ছবি: picture-alliance/dpa

আরব সমাজে যে সব সাম্প্রদায়িক ও জাতিগত ফাটল দেখা দিয়েছে, নতুন খলিফাতের যোদ্ধারা তার সুযোগ নিচ্ছে৷ অপরদিকে তারা চরম সহিংসতা প্রদর্শন করে স্থানীয় মানুষজনকে বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য করছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমের অন্যান্য শক্তি যে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে দ্বিধাগ্রস্ত, তারও সুযোগ নিয়েছে আইএস৷

নির্মম ও নৃশংস

ওসামা বিন লাদেনের আল কায়েদার লক্ষ্য ছিল পশ্চিমি সভ্যতার বিনাশ৷ সেক্ষেত্রে ইসলামি রাষ্ট্রের রাজ্যাঞ্চলীয় উচ্চাশা আছে; তারা অন্য ধরনের সামজিক কাঠামো গড়ে তুলতে আগ্রহী; এছাড়া সুদূর ১৯১৬ সালের সাইক্স-পিকো চুক্তি থেকে মধ্যপ্রাচ্যের যে বিভাজন শুরু, আইএস সেই বিভাজন মানে না৷

আইএস-এর অর্থ কিংবা অস্ত্রের কোনো অভাব নেই৷ গত গ্রীষ্মের অভিযানে তারা ইরাকি সামরিক বাহিনী এবং কুর্দ পেশমার্গা বাহিনীকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে৷ আইএস যোদ্ধাদের হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছে মূলত শিয়া, খ্রিষ্টান এবং সংখ্যালঘু ইয়াজিদিরা৷ এবং এই সামরিক অভিযানের সঙ্গে চলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইসলামিক স্টেটের ঝটিতি অভিযান৷

ইন্টারনেটে দেখানো হয়েছে বিরোধী-বিধর্মীদের ক্রুশবিদ্ধ করা কিংবা শিরচ্ছেদ করার নৃশংস দৃশ্য – যার উদ্দেশ্য হলো, এটা স্পষ্ট করে দেওয়া যে, ইসলামিক স্টেটের কাজ হল বিধর্মী নিধন – এবং সে কাজে তারা তাদের পূর্বসূরি আল-কায়েদার চেয়ে বেশি দড়, যার প্রমাণ: আল-কায়েদা স্বয়ং ইসলামি রাষ্ট্রকে অত্যধিক নির্মম বলে প্রত্যাখ্যান করেছে৷

অস্ত্রের নাম আতঙ্ক

সিরিয়া ও ইরাকে বিশৃঙ্খলা, এবং বিশেষ করে ইরাকে সুন্নি সম্প্রদায়ের অসন্তোষ থেকেই আইএস-এর সাফল্যের সূচনা৷ নয়ত আনুমানিক দশ থেকে পনেরো হাজার যোদ্ধা নিয়ে আইএস এত দ্রুত সিরিয়া থেকে ইরাকে অভিযান চালাতে পারত না৷ রাজ্য জয়ের পর তাদের রাজ্যাঞ্চল বাড়লেও, শুধু আতঙ্কের বলে বিজিত জনগণকে বিতাড়িত করা কিংবা নিয়ন্ত্রণে রাখার পন্থাটা তারা আবিষ্কার করে ফেলেছে৷ আতঙ্ক সৃষ্টি তাদের রণকৌশলের অঙ্গ৷

সবচেয়ে বড় কথা: তাদের তরুণ রংরুটের ছড়াছড়ি – সিরিয়া ও ইরাকে তাদের রংরুট ভর্তির কেন্দ্রের সামনে লাইন লেগে থাকে৷ প্রথমত, আইএস-এর অর্থের কোনো অভাব নেই, তা অস্ত্র কেনার জন্যই হোক আর রংরুটদের হাতখরচা দেবার জন্যই হোক৷ ইরাকি সেনাবাহিনী বিপুল পরিমাণ সর্বাধুনিক মার্কিন অস্ত্রশস্ত্র ফেলে পালানোর ফলে আইএস-এর অস্ত্রের ছছল-বছল৷

উপসাগরীয় অঞ্চলের ধনি সমর্থক ও পৃষ্ঠপোষকদের কাছ থেকে অর্থ আসছে৷ চুরি-ডাকাতি-অপহরণ থেকে অর্থ আসছে৷ এছাড়া পূর্ব সিরিয়ার ৫২টি তেলের খনির মধ্যে ৫০টি আইএস-এর দখলে; উত্তর-পশ্চিম ইরাকেও বিশটি তেলের খনি তাদের দখলে৷ ওসামা বিন লাদেনের আল-কায়েদা একটি সীমান্তবিহীন বহুজাতিক আন্দোলন হলেও, তাদের কোনো সামাজিক ভিত্তি ছিল না৷ ইসলামি রাষ্ট্র কিন্তু একটি রাজ্যাঞ্চলীয় সত্তা হিসেবেই মাঠে নেমেছে৷

আরব রাষ্ট্র বলতে আমরা যা জানি এবং বুঝি, তার ‘নেমেসিস' বা কাল হিসেবে এই ইসলামিক স্টেট মুভমেন্টের জন্ম৷ তরুণ প্রজন্ম থেকে রংরুট সংগ্রহ করার অদ্ভুত ক্ষমতা তাদের৷ এবং যে কাতার কিংবা সৌদি আরবের কোটিপতিরা আইএস-কে অর্থ যোগাচ্ছেন, সেই সব দেশের সরকারবর্গ স্বদেশে ইসলামি রাষ্ট্রের ছোঁয়া লাগার আতঙ্কে আতঙ্কিত৷

এসি/ডিজি (রয়টার্স, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ