আল জাজিরার প্রতিবেদনকে ‘বেপরোয়া অপপ্রচার’ বলছে ঢাকা
২ ফেব্রুয়ারি ২০২১
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’-কে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ সরকার৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এই প্রতিবেদন ‘অপপ্রচার’৷
বিজ্ঞাপন
সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনটি এরই মধ্যে সারাদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে৷ এর জবাবে সে রাতেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি প্রকাশ করা হয়৷ সেখানে এই প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা ও মানহানিকর' বলে আখ্যা দেয়া হয়৷ বলা হয়, একটি গোষ্ঠী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরাকে রাজনৈতিক ছক বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে৷
স্বৈরাচারী সরকারের ১০ লক্ষণ
গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে ‘গণতান্ত্রিক’ ও স্বৈরাচারী’ সরকারের মধ্যে তফাত করাটা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়৷ ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের তথ্য অনুসারে এই ছবিঘরে থাকছে স্বৈরাচারী সরকারের ১০টি লক্ষণ৷
ছবি: DW/S. Elkin
গণমাধ্যমকে ভয় দেখানো
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোতে গণমাধ্যম বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকে৷ সরকারের সমালোচনা ও ভুল ধরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনেক৷ ফলে সমালোচনার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সাংবাদিকদের দূরে রাখতে স্বৈরাচারী শাসকরা পত্রিকা, টেলিভিশনকে ভয় দেখিয়ে কোণঠাসা করতে চান৷
ছবি: DW/S. Elkin
সরকারপন্থি গণমাধ্যম সৃষ্টি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাব ক্রমশ বাড়ছে৷ ফলে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা সবক্ষেত্রে সম্ভব হয় না৷ পালটা ব্যবস্থা হিসেবে স্বৈরশাসকরা সরকারপন্থি গণমাধ্যম নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেন৷ এর ফলে ব্যাপক হারে সরকারের নানা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো সহজ হয়৷
ছবি: picture alliance/dpa/J. Büttner
রাষ্ট্রীয় সংস্থার দলীয়করণ
রাষ্ট্রের সকল স্তরে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে স্বৈরাচারী শাসকরা পুলিশ, সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে সরকারি আমলাদের মধ্যেও দলীয়করণ প্রতিষ্ঠা করে থাকেন৷ এর ফলে রাষ্ট্রের ভেতর থেকে ক্ষোভ দেখা দিলে তা নিয়ন্ত্রণ করতে সুবিধা হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP
বিরোধীদের ওপর রাষ্ট্রীয় নজরদারি
রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থাকে সরকারের রাজনৈতিক বিরোধীতাকারীদের ওপর নজরদারির কাজে লাগানো হয়৷ গোয়েন্দা মারফত পাওয়া তথ্য কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষকে নানাভাবে হেয় করা ও কোণঠাসা করতে অপব্যবহার করা হয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা৷
ছবি: picture alliance/dpa/Chromorange
বিশেষ সুবিধা ও দমনপীড়ণ
স্বৈরাচারী সরকার বা সরকারপ্রধানকে যেসব কর্পোরেট সংস্থা বা ব্যক্তি নানাভাবে সহায়তা করে থাকেন, তাদের বিশেষ রাষ্ট্রীয় সুবিধা দেয়া হয়৷ বেআইনি উপায়ে কাজ পাইয়ে দেয়া থেকে শুরু করে নানাভাবে সহায়তা করা হয়৷ অন্যদিকে, যেসব সংস্থা সহায়তা করে না, তাদের ক্ষেত্রে চলে যে-কোনো উপায়ে দেউলিয়া বানানোর প্রক্রিয়া৷
ছবি: Imago/blickwinkel
বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ
আদালত স্বাধীন থাকলে স্বৈরাচারী শাসকদের নানা সময়ে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়৷ ফলে শুরু থেকেই স্বৈরাচারী শাসকরা সুপ্রিম কোর্টকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করেন৷ অনুগত বিচারক নিয়োগ দেয়া, বিরোধীদের ছাঁটাই করা থেকে শুরু করে, নানাভাবে চেষ্টা চলে এ নিয়ন্ত্রণের৷
ছবি: Fotolia/Sebastian Duda
একপাক্ষিক আইন প্রয়োগ
স্বৈরাচারী শাসকদের শাসনামলে ‘আইন সবার জন্য সমান’ বাক্যটি থাকে শুধু কাগজে-কলমে৷ বাস্তবে প্রতিপক্ষকে দমনের জন্য পাস করা হয় নতুন নতুন আইন৷ বিরোধীদের নানা উছিলায় গ্রেপ্তার নির্যাতন করা হলেও, নিজের সমর্থকদের রাখা হয় আইনের আওতার বাইরে৷
ছবি: Fotolia/axentevlad
‘জুজুর ভয়’ দেখানো
বিরোধীরা ক্ষমতায় এলে ভয়াবহ অবস্থা হবে, দেশ রসাতলে যাবে, বিরোধীরা কত খারাপ, ক্রমাগত সে প্রচার চালানো হয়৷ এর ফলে এমন অবস্থা তৈরির চেষ্টা হয় যাতে জনগণের মনে প্রতিপক্ষ সম্পর্কে একটা নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করা যায়৷
ছবি: picture alliance/dpa/P. Pleul
দৃষ্টি সরাতে ভীতি সৃষ্টি
ভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্ন ধরনের ভীতি তৈরি করে থাকেন স্বৈরাচারী শাসকরা৷ অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, গণতন্ত্রহীনতা ও দুঃখ-দুর্দশা থেকে জনগণের দৃষ্টি সরিয়ে রাখতে কোথাও জঙ্গি সংকট, কোথাও মাদকবিরোধী যুদ্ধ, কোথাও অন্য দেশের সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করা হয়৷
ছবি: Fotolia/lassedesignen
নির্বাচনে কারচুপি
আগে জোর করে ক্ষমতায় থাকার উদাহরণ থাকলেও, এখন স্বৈরাচারী শাসকরাও নিয়মিত বিরতিতে নির্বাচন দিয়ে থাকেন৷ ‘গণতন্ত্র আছে’ জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলে এমন ধারণা দেয়ার জন্য তারা নির্বাচন দেন৷ কিন্তু সে নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের আয়োজন আগে থেকেই করা থাকে৷
ছবি: DW/A. Islam
10 ছবি1 | 10
"কিছু উগ্রপন্থি ও তাদের সহযোগী, যারা লন্ডন এবং বিভিন্ন জায়গায় থেকে এসব করছে, তাদের এই বেপরোয়া ‘অপপ্রচারকে' বাংলাদেশ সরকার প্রত্যাখ্যান করছে৷ বাংলাদেশের অসাধারণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য যেখানে সরকারের ভূমিকা প্রমাণিত, সেই অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সরকারকে কক্ষচ্যুত করার লক্ষ্য নিয়ে সাজানো হীন রাজনৈতিক ছক বাস্তবায়নে আল জাজিরা নিজেদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার সুযোগ দিচ্ছে, এটা হতাশাজনক,” বিবৃতিতে বলা হয়৷
কী ছিল সেই প্রতিবেদনে?
‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার'স মেন' নামের ঐ প্রতিবেদনে আল জাজিরা সামি (ছদ্মনাম) নামের হাঙ্গেরিতে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক ব্যক্তির সহায়তায় হারিস আহমেদ নামের এক ‘আসামী'র পরিচয় উন্মোচন করে৷ হারিস বুদাপেস্টে ‘মোহাম্মদ হাসান' নামে বসবাস করছিলেন৷ গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত সেই ব্যক্তির কথার ওপর ভিত্তি করে তারা ঘুস ও অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে বাংলাদেশে সরকারি ও রাজনৈতিক পদপদবী, কেনাকাটায় দুর্নীতির যোগসাজশের ইঙ্গিত দেয়৷
একইসঙ্গে সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের সহোদর হওয়ায় ঐ ব্যক্তি তার উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগকে ‘কাজে লাগিয়ে' এসব অর্থ উপার্জন করেন বলে অভিযোগ তোলা হয়৷ আহমেদ পরিবারের বাকি সদস্যরাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট, এমন যোগসূত্র তৈরির চেষ্টা করা হয় প্রতিবেদনে৷
প্রতিবেদনে তৃতীয় যে বিষয়টি তুলে ধরা হয়, তা হলো, ইসরায়েলের একটি কোম্পানির কাছ থেকে ফোনের নজরদারির প্রযুক্তি কিনছে বাংলাদেশ৷ ‘পিকসিক্স' নামের ঐ কোম্পানির সঙ্গে ২০১৮ সালে একটি চুক্তির দলিল হাজির করেছে আল জাজিরা৷ হাঙ্গেরিতে একজন আইরিশ মধ্যস্থতাকারীর সহযোগিতায় দুই ইসরায়েলির সঙ্গে একটি বৈঠকের কিছু অংশও তুলে ধরা হয়৷ পিকসিক্স প্রতিষ্ঠা করেছিল ইসরায়েলের কয়েকজন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা৷ তবে ক্রয় চুক্তিতে সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী দেশের নাম বদলে হাঙ্গেরি উল্লেখ করা হয়েছে৷
জার্মানিতে ভিডিও নজরদারি বিতর্ক
বিভিন্ন দেশে নিরাপত্তার খাতিরে ভিডিও নজরদারি যন্ত্র ব্যবহার করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী৷ জার্মানিতেও স্বল্পমাত্রায় চালু আছে এমন ব্যবস্থা৷ কিন্তু চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে কি যাবে না তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/imageBROKER/J. Tack
ভিডিও নজরদারি
জার্মানির বিভিন্ন রেল স্টেশনে ভিডিও নজরদারি যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে অনেক দিন থেকেই৷ তবে তার পরিসর বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার৷ ২০২৪ সালের মধ্যে প্রধান সব রেল স্টেশনগুলোকে এই ধরনের নজরদারির আওতায় আনার পরিকল্পনা করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ শুধু সিসি ক্যামেরা দিয়েই নয় তার সাথে চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তিও যোগ করতে চান তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Schreiber
চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তি
বার্লিনের সুডক্রয়েজ রেল স্টেশনে সম্প্রতি চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তির একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প শেষ হয়েছে৷ এই স্টেশন ব্যবহারকারী ৩০০ স্বেচ্ছাসেবী এক বছরের জন্য তাদের চেহারা শনাক্ত করার অনুমতি দেয় সরকারকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Schreiber
যেভাবে শনাক্ত করা হয়
প্রকল্পটি শুরুর আগে স্বেচ্ছাসেবীদের ছবি পুলিশের ডেটাবেজে দেয়া হয়েছে৷ ট্রেন স্টেশনে বসানো ক্যামেরা যখনই তাদের চিহ্নিত করে সেই তথ্য পুলিশের কাছে চলে যায়৷
ছবি: picture-alliance/imageBROKER/J. Tack
কতটা সঠিক?
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত প্রযুক্তিটি ৮০ ভাগ সঠিক তথ্য দিতে সক্ষম হয়েছে৷ অর্থাৎ স্বেচ্ছাসেবীদের প্রতি ৫ জনের চারজনকে শনাক্ত করতে পারছে সিস্টেমটি৷ অন্যদিকে এক হাজার জনে একজনকে ভুলভাবে শনাক্ত করেছে এই সফটওয়্যার৷
ছবি: DW/J. Chase
ভুলের মাশুল
প্রযুক্তিটির ভুলের সংখ্যা কম হলেও তা নিয়ে উদ্বেগ আছে৷ কেননা শতভাগ নির্ভুল না হলে যেকোন একজন নিরপরাধী ব্যক্তিও হয়রানির শিকার হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আগ্রহী পুলিশ
জার্মানির পুলিশ চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তিকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে৷ ফেডারেল পুলিশ বিভাগের প্রধান ডিয়েটার রোমান মনে করেন, এর ফলে বিশেষ পুলিশি অভিযান ছাড়াই দ্রুত অপরাধীকে সনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে, যা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বড় অর্জন হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Sparta
আইনি বাধা
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের আগ্রহ থাকলেও জার্মানিতে এখনই চেহারা শনাক্তকরণ প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার চালু করা সম্ভব না৷ কেননা এ ধরনের আধুনিক প্রযুক্তির ভিডিও নজরদারি ব্যবস্থা চালুর জন্য এখনও আইনী কাঠামো নেই দেশটিতে৷
ছবি: picture-alliance/picturedesk/H. Ringhofer
আদালতের রায়
আইনি কাঠামো না থাকলেও আদালতের সাম্প্রতিক একটি রায় অবশ্য পুলিশের পক্ষে গেছে৷ গত বুধবার হামবুর্গের প্রশাসনিক আদালত ২০১৭ সালে জি টুয়েন্টি সম্মেলনের বিক্ষোভে অংশ নেয়াদের ছবির বিতর্কিত তথ্যভাণ্ডার সংরক্ষণের অনুমতি দিয়েছে পুলিশকে৷ স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেহারা শনাক্তকরণ সফটওয়্যার ব্যবহার করে ঐ ঘটনায় সহিংসতায় জড়িতদের চিহ্নিত করে৷
ছবি: picture-alliance /dpa/B. Thissen
উদ্বেগও আছে
জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন নেতারা এ ধরনের প্রযুক্তির পক্ষে যেমন আছেন তেমনি বিপক্ষে থাকা রাজনীতিবিদের সংখ্যাও কম নয়৷ পুলিশ ও গোয়ান্দা বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট ছবি অনুসন্ধানের বিষয়ে গত জুলাইতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে বেসরকারি সংগঠন সোসাইটি ফর সিভিল রাইটস৷
ছবি: Reuters
9 ছবি1 | 9
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েল থেকে নজরদারি প্রযুক্তি কেনার চুক্তির বিষয়টি নাকচ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ বিবিসি বাংলাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘ইসরায়েলের সঙ্গে আমরা কোনো চুক্তি করিনি৷''
প্রতিবেদনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া জেমস ম্যালনি সিঙ্গাপুর-ভিত্তিক কোম্পানি সভরেইন সিস্টেমস-এর প্রতিনিধি৷ পরে আল জাজিরা তার প্রতিক্রিয়ার জন্য যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘‘সভরেইন সিস্টেমস বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি৷''
এছাড়া প্রতিবেদনের বাকি অংশগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে ঢাকা৷ এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বলে, ‘‘এই প্রতিবেদন একগুচ্ছ বিভ্রান্তিকর শ্লেষ আর বক্র ইংগিত ছাড়া আর কিছু নয়, যা আসলে চরমপন্থি গোষ্ঠী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কুখ্যাত কিছু ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ‘অপপ্রচার', যারা ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ রাষ্ট্রের প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক নীতির বিরোধিতা করে আসছে৷''
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘‘আল জাজিরার প্রতিবেদনে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মূল সূত্র একজন সন্দেহভাজন আন্তর্জাতিক অপরাধী, যাকে আল জাজিরাই ‘সাইকোপ্যাথ' আখ্যায়িত করেছে৷ প্রধানমন্ত্রী বা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ওই ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার সামান্যতম প্রমাণও সেখানে নেই৷ আর মানসিক ভারসাম্যহীন কারও কথার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাওয়া একটি আন্তর্জাতিক নিউজ চ্যানেলের জন্য বড় ধরনের দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক৷''
আইএসপিআর-এর বিবৃতি
আন্তবাহিনী জনযোগাযোগ পরিদপ্তর- আইএসপিআরও আল জাজিরার প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতোই সেখানে ‘কঠোর ভাষায় নিন্দা’ জানিয়ে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দেয়া হয়েছে৷
প্রতিবেদনের কিছু অংশের অভিযোগের ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টাও রয়েছে সে বিবৃতিতে৷ সেনাপ্রধানের ছেলের বিয়ের ভিডিও যে অংশে দেখানো হয়েছে, সে বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘দেশের উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাগণের বিভিন্ন দাপ্তরিক, সামাজিক এবং ব্যক্তিগত কার্যক্রমের ভিডিও ক্লিপ ও ছবি চাতূর্যের সাথে সম্পাদনা এবং অডিও সংযোজন করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে৷’’
ইসরায়েল থেকে ইন্টারনেট ও মোবাইল মনিটরিং সরঞ্জামাদি ক্রয় সংক্রান্ত তথ্যকে মিথ্যা দাবি করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে আইএসপিআর৷ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ব্যবহারের জন্য হাঙ্গেরির একটি কোম্পানি থেকে সিগন্যাল সরঞ্জাম ক্রয় করা হয়েছে, কিন্তু সেটিকে প্রতিবেদনে ইসরায়েল থেকে আমদানি করা মোবাইল মনিটরিং প্রযুক্তি হিসেবে অভিহিত করার অভিযোগ আল জাজিরার বিরুদ্ধে করেছে আইএসপিআর৷