দুর্দান্ত খেলা উপহার দিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের আশা বাঁচিয়ে রাখল কলম্বিয়া৷ পোল্যান্ডকে তাঁরা হারিয়েছে ৩-০ গোলে৷ আর পরপর দুই ম্যাচ হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের বাঁশি বাজলো পোলিশদের৷
বিজ্ঞাপন
এইচ গ্রুপে ফেবারিট ছিল দুই দলই৷ অথচ নিজেদের প্রথম ম্যাচেই উভয়কেই পরতে হয় পরাজয়ের মালা৷ তাই এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না পোল্যান্ড-কলম্বিয়া কারোরই৷ তাই শুরু থেকেই গোল পেতে মরিয়া হয়ে খেলে দুই দলই৷ কিন্তু পরিষ্কার আক্রমণ বলতে যা বোঝায় তেমন সুযোগই তৈরি হচ্ছিল না৷
কলম্বিয়ার হয়ে গত বিশ্বকাপের তারকা হামেস রদ্রিগেজ অবশ্য ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে কিছুটা এগিয়েই ছিলেন৷ শুধু প্রতিপক্ষের ডি-বক্সকে ব্যস্তই রাখছিলেন না, বল বানিয়েও দিচ্ছিলেন সতীর্থদের৷ সঙ্গ দিচ্ছিলেন ফালকাও, কুয়াদরাদোরা৷
তবে সাফল্য পেতে কলম্বিয়ানদের অপেক্ষা করতে হয় ৪০ মিনিট পর্যন্ত৷ এবারো রেয়াল মাদ্রিদ থেকে বায়ার্ন মিউনিখের ধার করা তারকা রদ্রিগেজ৷ চমৎকার এক চিপ-ইন করলেন বাঁ পায়ে৷ ক্রসটি প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক থেকে দু’হাত দূরে খুঁজে পেল সতীর্থ মিনা’র মাথা৷ তাতেই কেল্লাফতে৷ ১-০ ব্যবধানে প্রথমার্ধ শেষ করে তারা৷
এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে যতটা উজ্জীবিত ছিল কলম্বিয়ানরা, পোল্যান্ড ততটাই যেন ম্রিয়মান হয়ে গিয়েছিল৷
পাল্টা আক্রমনে সাদা লাল গ্যালারিতে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি করতে পারলেও হলুদ নীলদের চিৎকারকে ছাপিয়ে যেতে পারেনি৷ ছাপিয়ে যেতে দেননি রদ্রিগেজ-ফালকাওরা৷
৬৮ মিনিটে কুইন্টেরোর বাড়ানো একটি বল রাইট উইং থেকে দৌঁড়ে এসে প্রতিপক্ষের জাল খুঁজে পেলেন এএস মোনাকোর হয়ে লিগ ওয়ান খেলা ফালকাও৷ ব্যবধান দ্বিগুন থেকে তিনগুন হতে বেশি সময় নেননি কলম্বিয়ানরা৷ এবারো রেয়াল তারকা হামেস রদ্রিগেজ৷ কলম্বিয়ান হাফ থেকে বল টেনে মাঝমাঠ পেরিয়ে বাম পাশ থেকে বাঁ পায়ে মাটি কামড়ানো বাঁকানো ক্রস৷ কুয়াদরাদো একটুও ভুল করেননি৷ বল পায়ে এগিয়ে গিয়ে পরাস্ত করলেন পোলিশ গোলরক্ষক চেসনিকে৷
ব্যবধান কমাবার চেষ্টা ছিল পোলিশদের মাঝে৷ কিন্তু বিদায়ের ঘন্টা তাদের বেজে গেলো এক ম্যাচ হাতে রেখেই৷ তবে আশা বেঁচে রইল কলম্বিয়ার৷ দুই ম্যাচ করে খেলে জাপান ও সেনেগালের পয়েন্ট হলো ৪, কলম্বিয়ার ৩, আর পোল্যান্ডের শূন্য পয়েন্ট৷
২০১৮ বিশ্বকাপ: সমর্থকদের সৃষ্টিশীলতা
মেসি-রোনাল্ডো, কিংবা নেইমার-সালেহ, মাঠে তো পায়ের জাদু চলছেই৷ কিন্তু সমর্থকেরাই তো আসলে খেলার প্রাণ৷ সেই প্রাণে নানাভাবে রঙের জাদু দেখাচ্ছেন সমর্থকরা৷
ছবি: Reuters/S. Pivovarov
জার্মানি
পতাকার রঙে নানাভাবে সাজছেন জার্মান দর্শকরা৷ লাল, কালো আর সোনালি রং শুধু গায়েই নয়, মেখে আসছেন পুরো শরীরে৷ কেই নিয়ে আসছেন পুতুল, কেউ আবার দলকে সমর্থন জোগাতে গিটার হাতেই চলে এসেছেন মাঠে৷ তাতে অবশ্য মেক্সিকোর কাছে ১-০ গোলের হার এড়াতে পারেনি দলটি৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Stollarz
মেক্সিকো
মেক্সিকোর খেলা মানেই মাঠে সবুজ আর লালের ছড়াছড়ি৷ মাথায় ঐতিহ্যবাহী সমব্রেরো হ্যাট আর গায়ে যোদ্ধার পোশাক, কেউ আবার পড়ে এসেছেন মেক্সিকান রেসলিংয়ের মুখোশ৷
ছবি: Reuters/K. Pfaffenbach
আইসল্যান্ড
দেশটির অনেক সমর্থকই সেজে এসেছেন ভাইকিংয়ের বেশে৷ মাথায় শিংওয়ালা টুপি৷ আর গায়ে লাল-নীলের সাজ৷ মাঠেও দেখা গেছে ভাইকিংদের৷ ফেবারিট আর্জেন্টিনাকে রুখে দিয়েছে ১-১ ড্রতে৷
ছবি: Getty Images/AFP/Y. Cortez
ফ্রান্স
ফরাসি সমর্থকরাই বা অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে থাকবেন কেন! জনপ্রিয় কমিক সিরিজ অ্যাসটেরিক্সের চরিত্র ওবেলিক্সের পোশাকে সেজে এসেছেন অনেকে৷ প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় এসেছে ২-১ গোলের৷
ছবি: Reuters/J. Silva
মিশর
মস্কোর রেড স্কোয়্যার৷ কিন্তু সমর্থকরা ফিরে গেছেন সেই ফারাওদের রহস্যময় মিশরে৷ তারকা খেলোয়াড় মোহাম্মদ সালেহ খেলতে পারেননি উরুগুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ৷ দারুণ লড়াই করেও ১-০ গোলে হারতে হয় দলটিকে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Zmeyev
নাইজেরিয়া
আফ্রিকা মানেই রঙের ঝলক৷ সবুজ আর সাদায় শুধু ১১ খেলোয়াড় মাঠ দাপিয়ে বেড়াননি৷ জাতীয় পতাকার সাজে সেজে, নেচে গেয়ে গ্যালারি মাতিয়ে রেখেছেন দর্শকরাও৷ তবে ক্রোয়েশিয়ার কাছে প্রথম ম্যাচ তাদের হারতে হয়েছে ২-০ গোলে৷
ছবি: Getty Images/AFP/O. Kose
পেরু
পেরু মানেই সবার আগে মাথায় আসে ইনকা সভ্যতার নাম৷ ফলে যথারীতি দলের সমর্থকদের গ্যালারিতে দেখা গেছে দুর্ধর্ষ ইনকা যোদ্ধার সাজে৷ ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপের মূল আসরে খেলতে এসেছে পেরু৷ ফলে সমর্থকদের উচ্ছ্বাসটাও ছিল দেখার মতোই৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. Monteforte
আর্জেন্টিনা
দলের সমর্থকরা রীতিমতো মেসির জন্য ভার্জিন মেরির কাছে প্রার্থনা শুরু করেছেন৷ তবে তাতে শেষ রক্ষা হয়নি৷ মাঠে মেসিকে দেখা যায়নি তার চিরাচরিত আগ্রাসী ভূমিকায়৷ বরং উলটো একটি পেনাল্টি মিস করে হতাশায় ডুবিয়েছেন সমর্থকদের৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Pagni
ব্রাজিল
হলুদ-সবুজ মানেই ব্রাজিল, আর ব্রাজিল মানেই সাম্বা৷ নানাভাবে শরীরে রম মেখে গ্যালারিতেই সাম্বার তালে সমর্থকরা উৎসাহ জুগিয়েছেন পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের৷ অবশ্য প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে নেইমারদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে ১-১ গোলের ড্র নিয়েই৷