ডাচ সাংবাদিকের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে, বিদেশি দম্পতি দত্তক নেয়া অন্তত ১১ হাজার শিশুকে বাবা-মায়ের কাছ থেকে চুরি করা হয়েছে, অথবা নগদ টাকা দিয়ে কিনে নেয়া হয়েছে৷ শ্রীলঙ্কা এবং নেদারল্যান্ডসে এ নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত৷
বিজ্ঞাপন
শ্রীলঙ্কা সরকার এই তথ্য স্বীকার করেছে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী রজিতা সেনারত্নে ডাচ ডকুমেন্টারি সিরিজ জেমব্লাতে এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন৷ এই পর্বটি প্রচার হয়েছে ২০ সেপ্টেম্বর৷ সেনারত্নে জানিয়েছেন, দেশটির সরকার এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং স্বজনদের মিলন ঘটাতে একটি ডিএনএ ডাটাবেইজ তৈরির কথাও ভাবছে৷
‘‘পরিবারগুলোর মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে এই ঘটনায়৷ সরকার এই বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছে'', ডাচ দৈনিক আলগেমিন ডাগব্লাডকে জানিয়েছেন সেনারত্নে৷
শিশুদের জন্য সেরা ১২টি দেশ
অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হলেও অনেক দেশ যে শিশুদের অধিকার রক্ষার বিষয়টিকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয় না – এ সত্যই প্রকাশ করল কিডসরাইটস ফাউন্ডেশন৷ তাই শিশু অধিকার রক্ষায় সেরা দেশগুলোর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র বা ব্রিটেনের মতো দেশও নেই৷
ছবি: picture-alliance/empics/G. Fuller
১২
স্লোভেনিয়া
শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠার দিক থেকে সেরা দেশগুলোর তালিকা করতে গিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার, স্বাস্থ্য অধিকার, শিক্ষা অধিকার, সুরক্ষার অধিকার এবং শিশু অধিকারের জন্য অনুকুল পরিবেশ – এই পাঁচটি বিষয়কে বিবেচনায় নিয়েছে কিডসরাইটস ফাউন্ডেশন৷ সার্বিক বিবেচনায় সেরা হওয়া দেশগুলির তালিকায় দ্বাদশ স্থানে রয়েছে স্লোভেনিয়া৷ মূল তালিকাটি দেখতে উপরে (+) চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Imago/J. Alexandre
১১
একাদশ স্থানে রয়েছে বেলজিয়াম৷
ছবি: Colourbox
১০
স্লোভেনিয়া আর বেলজিয়ামের ঠিক ওপরেই রয়েছে ফিনল্যান্ড৷
ছবি: picture-alliance/dpa
০৯
নবম স্থানে রয়েছে উত্তর আফ্রিকার দেশ টিউনিশিয়া৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Mazraawi
০৮
ইউরোপ বা অ্যামেরিকার অনেক দেশ স্থান না পেলেও এশিয়ার থাইল্যান্ড কিন্তু ঠিকই জায়গা করে নিয়েছে কিডসরাইটস ফাউন্ডেশনের তালিকায়৷ থাইল্যান্ড রয়েছে অষ্টম স্থানে৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/V. Poti
০৭
নাগরিকের সার্বিক জীবনমানের নিশ্চয়তা দেয়ায় সুইডেনের সুনাম আছে৷ শিশু অধিকার রক্ষায়ও অনেক দেশের তুলনায় এগিয়ে আছে তারা৷ এ তালিকায় সুইডেন আছে সাত নম্বরে৷
ছবি: Getty Images/D. Ramos
০৬
শিল্প-সাহিত্যের দেশ ফ্রান্সে শিশু অধিকার পরিস্থিতিও ভালোই বলতে হবে৷ তালিকায় ইউরোপের এই দেশটি আছে ষষ্ঠ স্থানে৷
ছবি: Eric Cabanis/AFP/Getty Images
০৫
পঞ্চম স্থানে রয়েছে স্পেন৷
ছবি: Fotolia/PinkShot
০৪
চতুর্থ স্থানে আইসল্যান্ড৷
ছবি: Fotolia/yanlev
০৩
মানবাধিকার বিষয়ক যে কোনো তালিকায় ওপরের দিকেই থাকে সুইজারল্যান্ড৷ এখানে তারা তৃতীয় স্থানে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
০২
কিডসরাইটস ফাউন্ডেশনের সমীক্ষা অনুযায়ী, শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠায় এ মুহূর্তে বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা দেশ নরওয়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
০১
সেরা পর্তুগাল শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠায় অর্থের গুরুত্ব অনেক, তবে সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা সবচেয়ে বেশি গরুত্বপূর্ণ৷ সেই বিবেচনায় অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশও শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বেশি প্রশংসনীয় হতে পারে৷ কিডসরাইটস ফাউন্ডেশন এভাবে পুরো বিষয়টিকে বিশ্লেষণ করে বলে সেরাদের তালিকায় উঠে গেছে এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ড৷
ছবি: Ilike - Fotolia.com
12 ছবি1 | 12
জেমব্লায় প্রচারিত তথ্য অনুযায়ী, এই ঘটনা আশির দশকে এতটাই মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল যে, তথাকথিত ‘শিশু খামারে' ইচ্ছেকৃতভাবে পাচারের উদ্দেশ্যে নারীদের গর্ভধারণ করানো হতো৷ এমনকি বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে শিশুদের চুরিও করা হতো৷ একজন মা জেমব্লাকে বলেছেন, জন্মের সময়ই শিশুটি মারা গেছে বলে তাঁকে জানানো হয়েছিল৷ কিন্তু তাঁর এক আত্মীয় কিছুক্ষণ পর এক ডাক্তারকে শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যেতে দেখেন৷
অপরাধী চক্র মায়ের অভিনয় করার জন্য কিছু নারীকে ভাড়া করতো৷ ফলে বিদেশ থেকে আসা দম্পতিরা মনে করতেন সত্যিকার মায়ের কাছ থেকেই শিশু দত্তক নিচ্ছেন তাঁরা৷ এসব বিদেশি দম্পতিদের বেশিরভাগই নেদারল্যান্ডস থেকে আসা, কিন্তু যুক্তরাজ্য, সুইডেন এমনকি জার্মানি থেকেও অনেকেই শ্রীলঙ্কা থেকে শিশু দত্তক নিয়েছেন৷ এমন কিছু ভুয়া মা জানিয়েছেন, তাদের এই কাজের জন্য হাসপাতালের কর্মচারীরা টাকা দিতেন৷
জেমব্লার দাবি, শ্রীলঙ্কা থেকে শিশু দত্তক নেয়ার সময় যে অর্থ লেনদেন হতো তারও ভুয়া হিসেব দেয়া হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে৷
এ যেন ‘কারাগার'
আশির দশকে এমন অপরাধ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে৷ অবশেষে ১৯৮৭ সালে এমন এক কারাগারের মতো পরিবেশে স্থাপিত ‘শিশু খামারে' পুলিশের অভিযানে উদ্ধার হয় ২২ জন নারী ও ২০ শিশু৷ এরপরই ভাটা পড়ে শিশু পাচার ব্যবসায়৷
নিরাপত্তা ও বিচার বিষয়ক ডাচ মন্ত্রী ক্লাস ডিকহফ জানিয়েছেন, ডিএনএ ডাটাবেইজ এবং সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে শ্রীলঙ্কা সরকারের সাথে কথা বলবেন তিনি৷ ডিকহফ আরও জানান, এই মুহূর্তে ‘‘কীভাবে দত্তক নেয়ার কাজ তদারকি হতো, কার কী ভূমিকা ছিল, এবং কোন সংস্থা ও ব্যক্তি এর দায়িত্বে ছিল, এ সবের তদন্ত চলছে৷''