বিভিন্ন দেশের কয়েক হাজার যুদ্ধাপরাধী জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন উঠেছে৷ শরণার্থী সংকটের জের ধরে আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ তথ্য যাচাই করেনি, বলে দাবি করেছে জার্মানির একটি সংবাদপত্র৷
বিজ্ঞাপন
কয়েক হাজার তথ্যপ্রমাণ বলছে, গেল বছরগুলোতে বিভিন্ন দেশের হাজারও যুদ্ধাপরাধী জার্মানিতে আশ্রয় চেয়েছে, যাদের বিষয়ে কোনো ধরণের তদন্ত করেনি দেশটির সরকার৷ এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জার্মানির জনপ্রিয় দৈনিক ‘বিল্ড'৷
শরণার্থী শিবিরে জন্মানো এক নারী সাংবাদিকের কথা
২৪ বছর বয়সি রায়ান সুক্কর লেবাননের শাতিলা শরণার্থী ক্যাম্পে জন্মেছেন ও বেড়ে উঠেছেন৷ এখন সাংবাদিক হিসেবে তিনি শরণার্থীদের জীবনযাত্রা তুলে ধরেন৷
ছবি: DW/O. Ahmad
রায়ান সুক্কার, সাংবাদিক
আমি রায়ান সুক্কার, শাতিলার একজন সাংবাদিক৷ দুই বছর ধরে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ক্যাম্পজি’তে কাজ করছি৷ অন্যান্য শরণার্থী ক্যাম্প থেকেও রিপোর্ট করি৷ শাতিলার শরণার্থী শিবিরে প্রায় ৪০,০০০ মানুষের বাস৷ ফিলিস্তিনি শরণার্থীরা আছেন এখানে৷ এছাড়া গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা সিরীয় শরণার্থীদের সংখ্যাও অনেক৷
ছবি: DW/O. Ahmad
ক্যাম্পজি’র সম্পাদকীয় বিভাগ
আমরা একসাথে আমাদের আইডিয়া এবং বিষয় খুঁজে বের করি৷ আমরা শরণার্থীদের জীবনযাত্রা, তাঁদের নানা সমস্যা ছাড়াও বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ করি৷ কারণ আমরা শাতিলায় বাস করি বলে অন্য শরণার্থীদের উদ্বেগ সম্পর্কে ভালো করেই জানি এবং তা বুঝতেও পারি৷ আর এ কারণেই আমাদের ‘নাগরিক সাংবাদিক’ বলা হয়৷
ছবি: DW/O. Ahmad
পুরো দলের সাথে সম্পাদকীয় মিটিং
আমরা নতুন কিছু আইডিয়ার কথা সাপ্তাহিক মিটিংয়ে জানাই, তারপর আমাদের সেই আইডিয়া বা প্রস্তাবগুলো নিয়ে টিমের সবার সাথে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷
ছবি: DW/O. Ahmad
শুটিং-এর দিন
আজ শুটিং হবে! আমাদের গল্প অভিবাসন সম্পর্কে৷ অনেকেই ক্যাম্প ছেড়ে অন্য দেশে জীবন শুরু করতে যায়৷ তাই আমরা শুটিং করার জন্য আল-জলিল শরণার্থী ক্যাম্পে যাই৷ শুটিং-এর প্রযুক্তিগত দিকটি দেখে সামি৷ আর আমি সামগ্রিক দিকটি তুলে ধরি৷
ছবি: DW/O. Ahmad
অভিবাসন নিয়ে কথা
আমরা শরণার্থীদের সাথে কথা বলতে, তাঁদের জীবনযাত্রা নিয়ে মতামত জানতে ভীষণ আগ্রহী৷ যেমন ছবিতে শরণার্থী বাসেল-এর সঙ্গে আমাকে কথা বলতে দেখছেন৷ আমরা যখন শুটিং করেছিলাম তখন তিনি নিজে থেকে এসে আমাদের সঙ্গে তাঁর শরণার্থী জীবন নিয়ে কথা বলছিলেন তিনি৷ ক্যাম্পে বসবাসকারী অনেকের জীবনেই উত্তেজনাপূর্ণ গল্প রয়েছে৷
ছবি: DW/O. Ahmad
শুটিং-এর চ্যালেঞ্জ
একটি শরণার্থী ক্যাম্পে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া সহজ কাজ নয়, যাদের ভিন্ন ভিন্ন মত বা অন্যরকম চিন্তাভাবনা রয়েছে৷ তাছাড়া ক্যামেরা নিয়ে বিভিন্ন ক্যাম্পে ঘোরাফেরা করা আমাদের পক্ষে সবসময় সম্ভবও নয়৷
ছবি: DW/O. Ahmad
অফিসে ফেরার পথে
সারা দিন শুটিং আর কাজ শেষে আমরা ক্যাম্পজি অফিসে ফিরে যাই৷ আল-জলিল ক্যাম্পে এটা আমাদের প্রথম শুটিং ছিল৷ আগামীতে আরো শুটিং করতে হবে বলে মনে হচ্ছে৷ আমরা ইতোমধ্যে অনেক গল্প শুনেছি এবং কাছ থেকে দেখেছি৷ সেগুলো নিয়েই আমরা আগামীতে তথ্যপূর্ণ রিপোর্ট করতে চাই৷
ছবি: Reporter Campji/Omar Ahmad
7 ছবি1 | 7
সংবাদপত্রটি বলছে, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের শুরু পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় এমন পাঁচ হাজারটি মামলা পেয়েছে ‘ফেডারেল অফিস ফর মাইগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি' বা বাম্ফ৷ তারা সেগুলো ফেডারেল ক্রিমিনাল পুলিশ অফিস ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে পাঠায়৷ এর মধ্যে মাত্র ১২৯টি তদন্ত করে দেখা হয়েছে৷
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানান, সংখ্যাটি বড় হওয়ায় প্রতিটি তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত করা সম্ভব হয়নি৷ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি ৩,৮০০টি তথ্য খতিয়ে দেখার জন্য পাঠায় বাম্ফ, যার মধ্যে মাত্র ২৮টি তদন্ত করা হয়৷
স্বরাষ্ট্র বিষয়ক সংদীয় কমিটির সদস্য এবং মুক্ত গণতন্ত্রী এফডিপি দলের নেতা লিন্ডা টয়টেব্যার্গ বলেন, ‘‘যুদ্ধাপরাধীরা কোনোভাবেই জার্মানিতে নিরাপত্তা পাওয়া উচিত নয়৷ বিগত বছরগুলোতে ফেডিরেল সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখেছে কিনা তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে৷''
সিরিয়ায় ভয়াবহ সংকটের কারণে ২০১৫ সালে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন৷ সেসময় মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও আফ্রিকার যুদ্ধবিদ্ধস্ত ও দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চল থেকেও অনেকে পালিয়ে এসেছেন৷ তবে এরপর অবশ্য শরণার্থী আসার সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমে যায়৷