আসছে ম্যালেরিয়া ঠেকানোর ভ্যাকসিন ‘আরটিএস,এস’
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১০সম্মেলনের আয়োজকদের বরাতে এক ভয়াবহ তথ্য জানা গেছে৷ তাঁরা জানিয়েছেন, আফ্রিকায় প্রতি ঘন্টায় ২০০ জন মৃত্যুবরণ করে কেবল ম্যালেরিয়ার কারণেই! আর এই ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু বরণকারীদের অধিকাংশই হচ্ছে শিশু৷
জানা গেছে, ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিষেধক আবিষ্কারে তাঁরা কতদূর এগিয়েছেন, মূলত তা নিয়েই ওয়াশিংটনের এই সম্মেলনে তাঁদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে৷ আলোচনা শেষে ম্যালেরিয়া ঠেকানোর এই টিকা প্রসঙ্গে এক আশার কথাই শুনিয়েছেন গবেষকরা, পাশাপাশি তাঁরা আশা প্রকাশ করেছেন যে, বছর পাঁচেকের মধ্যেই এই ম্যালেরিয়ার টিকা মানব কল্যাণে কাজে আসতে যাচ্ছে৷
এদিকে ইন্টারন্যাশনাল কনসালট্যান্ট'স গ্লোবাল হেলথ্ স্ট্রাটেজি'র ভাইস প্রেসিডেন্ট গোয়েন অস্টারবান জানিয়েছেন,‘‘এটা সবার জন্যই একটি আনন্দের খবর যে, আমরা সম্ভবত ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের এই যুদ্ধে শেষপর্যন্ত জয়ী হতে যাচ্ছি৷'' তিনি ম্যালেরিয়ার এই নব আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘ সুড়ঙ্গের শেষে যেন আলোর রেখা দেখতে পাচ্ছি আমরা৷''
জানা গেছে, গ্ল্যাক্সো স্মিথসক্লাইন এবং পাথ ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন ইনিশিয়েটিভের উদ্যোগে আরটিএস,এস ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন আবিষ্কারের এই যুগান্তকারী গবেষণাটি পরিচালিত হচ্ছে৷ আর এ'গবেষণার অর্থ সহায়তা করছে ফিলানথ্রপিক বা জনকল্যাণমূলক ফাউন্ডেশন৷ উল্লেখ্য, মাইক্রোসফট'এর কোটিপতি বিল গেটস এবং তাঁর স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস এই ফাউন্ডেশনের উদ্যোক্তা৷
গবেষকদের গবেষণা
গবেষকরা জানিয়েছেন, দ্বিতীয় পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ক্লিনিক্যাল ফ্যালসিপ্যারম ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ১০০ জনের প্রায় ৫৩ জনের ক্ষেত্রেই কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পেরেছিল এই আরটিএস,এস ভ্যাকসিনটি৷
সংশ্লিষ্ট গবেষকদের বরাতে আরো জানা গেছে, আরটিএস,এস ভ্যাকসিনটি এখন গবেষণার তৃতীয় ধাপটিতে রয়েছে, যাকে বলা হচ্ছে – ফেজ ৩ ট্রায়াল৷ যেখানে বড় পরিসরে প্রয়োগ করে ভ্যাকসিনটি কতটা নিরাপদ এবং কতখানি কার্যকরী সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়৷ আর একারণে ইতোমধ্যেই এই ম্যালেরিয়ার ভ্যাকসিন আফ্রিকা'র বুরকিনা ফাসো, গাবন, ঘানা, কেনিয়া, মালাউয়ি মোজাম্বিক এবং তানজানিয়া – এই সাতটি দেশে ব্যবহারের জন্য পৌঁছেছে৷ ভ্যাকসিন সেবার লক্ষ্য এই সাতটি দেশের প্রায় ১৬ হাজার শিশু, যারা ম্যালেরিয়ার সবচেয়ে সহজ শিকারে পরিণত হয়৷
এদিকে ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন ইনিশিয়েটিভের বরাতে জানা গেছে, গবেষণাটির তৃতীয় পরীক্ষাটিতে উৎরে গেলে পরে পৃথিবীর পয়লা প্রজন্মের ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন হিসেবে মৃত্যু আর অসুস্থতা ঠেকাতে নিদেনপক্ষে ৫০ ভাগ কার্যকরী ভূমিকা রাখবে ভ্যাকসিনটি৷ আর এর কার্যকারিতা বহাল থাকবে কমপক্ষে ১ বছর৷
প্রতিবেদন : হুমায়ূন রেজা
সম্পাদনা : সঞ্জীব বর্মন