বিরোধী জোট ইন্ডিয়া পার্টির দলগুলির মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা শুরু হলো। দিল্লিতে কংগ্রেসকে তিনটি আসন ছাড়তে আপ রাজি।
বিজ্ঞাপন
বিজেপি-র বিরুদ্ধে একজন প্রার্থী দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে ইন্ডিয়া জোটের শরিক ও সহযোগী দলগুলি। দিল্লিতে সোমবার আপ ও কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই বৈঠকে আপ দিল্লির তিনটি আসন কংগ্রেসকে দিতে চাইছে। আপ লড়তে চায় চারটি আসনে। ভারতে লোকসভা নির্বাচনের অনেক আগেই আসন সমঝোতা করে ফেলতে চায় বিরোধীরা।
দিল্লি নিয়ে আলোচনা
আপের হয়ে বৈঠকে ছিলেন দুই মন্ত্রী অতিশি ও সৌরভ ভরদ্বাজ এবং সংগঠনের দায়িত্বে থাকা সন্দীপ পাঠক। কংগ্রেসের পক্ষে ছিলেন মুকুল ওয়াসনিক, অশোক গেহলট, অজয় মাকেনরা।
এই বৈঠকেই চার-তিন ফর্মুলার কথা বলেন আপ নেতারা। কংগ্রেসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তারা বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করবেন। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আবার বৈঠকে বসবে দুই দল।
আপ নেতা অনুপ ঠাকুর ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''আমরা সমঝোতা করতে চাই। তাতে আপ ও কংগ্রেস দুই দলই লাভবান হবে। দিল্লিতে একবার আসন সমঝোতা হলে পাঞ্জাবেও সম্ভবত হবে।''
পাঞ্জাবে দুই দলের রাজ্য নেতারা জানিয়েছেন, তারা আসন সমঝোতা চান না। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছে, সমঝোতা করলে লাভ হবে। তবে পাঞ্জাবের রাজ্য নেতৃত্বকে তাদের আগে রাজি করাতে হবে।
কংগ্রেস হাইকম্যান্ডও এবার আসন সমঝোতা করার বিষয়ে রীতিমতো আগ্রহ দেখাচ্ছে।
সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিরোধী জোটের আসন সমঝোতা
ভারতের প্রধান বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার তৃতীয় বৈঠক চলছে মুম্বইতে। ২৮ দলের ৬৩ জন নেতা বৈঠকে উপস্থিত।
ছবি: Indian National Congress
পাটনা, বেঙ্গালুরুর পর মুম্বই
প্রথম বৈঠক হয়েছিল পাটনায়। তারপর বেঙ্গালুরুতে জোটের নাম ঠিক হয়, ইন্ডিয়া। ২৮টি দল একজোট হয়ে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে লড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এবার মুম্বইতে জোটের তৃতীয় বৈঠকে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। উপরের ছবিটি বেঙ্গালুরু বৈঠকের।
ছবি: Bihar state Chief Minister's Office/AP/picture alliance
আসন বন্টন নিয়ে সিদ্ধান্ত সেপ্টেম্বরেই
ঠিক হয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই জোট শরিকেরা নিজেদের মধ্যে আসন বন্টনের বিষয়টি চূড়ান্ত করে ফেলবেন। এনিয়ে প্রাথমিকভাবে কিছু কথা হয়েছে পাটনা ও বেঙ্গালুরুর বৈঠকে। বৃহস্পতিবার মুম্বইতে ঠিক হয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তারা আসন বন্টন শেষ করে ফেলবেন।
ছবি: MOHAN KUMAR/AFP
রাহুল-অভিষেক কথা
মুম্বই যাওয়ার আগে দিল্লি এসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ভোরে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন অভিষেক। তাদের মধ্যে এক ঘণ্টা ধরে কথা হয়। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের বিষয়েই কথা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ও আসন বন্টনের বিষয়টিই প্রাধান্য পেয়েছে।
ছবি: Congress Party/AP Photo/picture alliance
অধীর যা বলেছেন
লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা ও পশ্চিমবঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী আগে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ হলো পুকুর, আর দেশের রাজনীতি হলো নদী। কংগ্রেস এখন নদী নিয়ে বেশি ব্যস্ত। তবে অধীর এখনো রাজ্যে তৃণমূল ও মমতার কড়া সমালোচনা করছেন। দত্তপুকুর বিস্ফোরণ নিয়েও করেছেন।
ছবি: Syamantak Ghosh/DW
কংগ্রেস যেখানে প্রধান বিরোধী
মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, গুজরাট, কেরালা, হরিয়ানা, ত্রিপুরা, গোয়ার মতো কিছু রাজ্যে লড়াইটা সরাসরি বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে। কংগ্রেস এখানে মূল বিরোধী দল। সেখানে অন্য বিরোধী দলের শক্তি খুব বেশি নয়। ফলে সেখানে সামান্য কিছু আসন তাদের ছাড়তে হতে পারে কংগ্রেসকে। কিন্তু দিল্লি নিয়ে সমস্যা আছে। দিল্লিতে আপ ও কংগ্রেস জোট করে লড়বে কি না, তা নির্ভর করছে, কেজরিওয়াল ও রাহুল গান্ধীর উপর।
ছবি: Pradeep Gaur/SOPA/Zuma/picture alliance
কংগ্রেস যেখানে ক্ষমতায়
ছত্তিশগড়, রাজস্থান, কর্ণাটক, হিমাচলে কংগ্রেস এককভাবে ক্ষমতায় আছে। এর মধ্যে রাজস্থান, কর্ণাটকে আপ আসন চাইতে পারে। তবে দুই রাজ্যেই তাদের শক্তি খুবই কম। এনসিপি কিছু আসনের দাবিদার। ফলে এখানেও খুব বেশি আসন ছাড়তে হবে না কংগ্রেসকে। উপরের ছবিটি কর্ণাটকে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার।
ছবি: IANS
মহাজোটের রাজ্যে
মহারাষ্ট্র, বিহার, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ুতে মহাজোট আছে। কংগ্রেস তার শরিক। এই রাজ্যগুলিতেও আসন বন্টন নিয়ে খুব বেশি অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। উপরের ছবিতে বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ ও রাবড়ি দেবী। বিহারের মহাজোটে আছে কংগ্রেসও।
ছবি: Santosh Kumar/Hindustan Times/IMAGO
উত্তরপ্রদেশ নিয়ে
উত্তরপ্রদেশ নিয়ে সমস্যা আছে। সেখানে সমাজবাদী পার্টি প্রধান বিরোধী দল। তারা এখনো পর্যন্ত কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাতে চায় না। সেক্ষেত্রে আসন সমঝোতা হবে নাকি দুই দল কৌশলগত সমঝোতা করবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ছবি: Samiratmaj Mishra/DW
বামেরা কী করবে?
সিপিএম জানিয়ে দিয়েছে, তারা পশ্চিমবঙ্গ বা কেরালায় কোনো জোটে যাবে না। তারা জাতীয় স্তরে জোটে থাকবে। এই অবস্থান বদলের সম্ভাবনা কম। পশ্চিমবঙ্গে তারা আইএসএফের সঙ্গে সমঝোতায় আছে। কংগ্রেসের সঙ্গেও তাদের অঘোষিত সমঝোতা রয়েছে। কেরলে তারা ক্ষমতায়। সেখানে তারা বা কংগ্রেস কেউই জোটে যেতে রাজি নয়।
ছবি: Sandip Saha/Pacific Press/picture alliance
অন্য রাজ্যে
তেলেঙ্গানায় লড়াইটা হবে টিআরএসের সঙ্গে কংগ্রেসের। তবে অন্ধ্রে লড়াই হওয়ার কথা ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সঙ্গে চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলুগু দেশমের। নাইডু বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলির পরিস্থিতি আলাদা। সেখানে কংগ্রেস প্রধান বিরোধী দল। দু-একটা রাজ্যে তৃণমূল আছে। আছে কিছু আঞ্চলিক দলও। উপরের ছবিতে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও।
ছবি: Ians
জোটের মুখ
জোটের মুখ হিসাবে আগে থেকে কাউকে তুলে ধরা হবে না। তাহলে লড়াইটা মোদী বনাম তার বিরুদ্ধে হবে। বিরোধী নেতারা চাইছেন, লড়াইটা এনডিএ বনাম ইন্ডিয়া জোটের মধ্যে হোক। তবে জোটের আহ্বায়ক হিসাবে নীতীশ কুমার ও মল্লিকার্জুন খাড়গের নাম শোনা যাচ্ছে।
ছবি: Bihar Chief Ministers Office/AP/picture
কংগ্রেস চাইছে
সোনিয়া ও রাহুল গান্ধী এবার এই জোট নিয়ে চলতে চান। তাই খুব ভেবেচিন্তে প্রতিটি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে, বিরোধের জায়গাগুলিকে সরিয়ে রেখে যে সব বিষয়ে মতৈক্য হতে পারে, সেই জায়গাগুলি বেছে নিতে।
ছবি: Manjunath Kiran/AFP/Getty Images
12 ছবি1 | 12
বিহারের আলোচনা
বিহারে আসন সমঝোতা নিয়ে লালুপ্রসাদের দল আরজেডির সঙ্গে কংগ্রেসের একদফা আলোচনা হয়েছে। এবার জেডি ইউ-র সঙ্গে হবে। বিহারের যে ফর্মুলা নিয়ে কথা চলছে তা হলো, জেডি ইউ ও আরজেডি ১৭টি করে আসনে লড়বে, কংগ্রেস লড়বে চারটিতে এবং সিপিআইএমএল ও সিপিআই একটি করে আসন পাবে। কংগ্রেস রাজ্যসভার একটি আসন পাবে।
এই বৈঠকের পর কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ বলেছেন, ''আমরা আসন নিয়ে আমাদের মতামত জানিয়েছি। ওরাও জানাবে। বিভিন্ন দলের সঙ্গে বৈঠক হবে।''
সিপিআই নেতা পল্লব সেনগুপ্ত ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, তাদের এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তারা বিহার একটি আসন ছাড়াও ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ আসনটিতে লড়তে চান। সেই আসন না পেলে তারা বেশ কিছু আসনে প্রার্থী দিতে পারেন।
পল্লব সেনগুপ্ত বলেছেন, ''আমরা মণিপুরে একটি আসনে লড়ব। আমরা চাই, মণিপুরে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট আমাদের সমর্খন করুক। মণিপুরের মেইতেই অধ্যুষিত আসনে আমরা সাধারণত দ্বিতীয় স্থানে থাকি। তাছাড়া মণিপুরে আমরা বিধানসভায় সাড়ে সাত শতাংশ ভোট পেয়েছিলাম। তাই এখানে আমাদের লড়তেই হবে।''
লম্বা রেসের ঘোড়া কেজরিওয়াল
খড়গপুর আইআইটি-র ছাত্র অরবিন্দ কেজরিওয়ালের রাজনৈতিক দৌড় পুরোপুরি স্বপ্নের মতোই।
ছবি: DW/S. Kumar
বিজেপি এবং কেজরি
গোটা দেশ জুড়ে যখন বিজেপির গাড়ি পাঁচ নম্বর গিয়ারে চলছে, তখন নরমে-গরমে বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন কেজরিওয়াল। পাঞ্জাব আরো একবার তা প্রমাণ করে দিল।
ছবি: Narinder Nanu/AFP/Getty Images
পাঞ্জাবে কেজরি
২০২২ বিধানসভা নির্বাচনে পাঞ্জাবে বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে সরকার গড়তে চলেছে কেজরিওয়ালের দল। বাকি সমস্ত রাজ্যে যখন বিজেপি কার্যত বুলডোজার চালিয়েছে, পাঞ্জাবে আম আদমি পার্টির জয় নিঃসন্দেহে অর্থবহ।
ছবি: DW/S. Kumar
রাজনৈতিক অঙ্ক
কংগ্রেস এবং বিজেপি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখাই কেজরিওয়ালের রাজনৈতিক অঙ্ক। যে কারণে বিরোধী শক্তিগুলিকে নিয়ে তৈরি বিজেপি-বিরোধী জোটেও সেভাবে যোগ দিতে চাননি কেজরিওয়াল। নিজের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ধরে রাখতে চেয়েছেন।
ছবি: DW/S. Kumar
দিল্লি থেকে উত্থান
দিল্লি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। সেখানে বিধানসভা থাকলেও রাজ্য সরকারের হাতে তত বেশি ক্ষমতা নেই। এই প্রথম পূর্ণ রাজ্যে শাসন করবে আপ।
ছবি: DW/S. Kumar
উন্নয়নই ভরসা
গোটা দেশ যখন ধর্মীয় মেরুকরণের অঙ্কে চলছে, কেজরিওয়াল তখন উন্নয়নকেই হাতিয়ার করে লড়াইয়ে নেমেছেন। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য তার প্রথম লক্ষ্য। দিল্লিতে সেই মডেল তিনি তৈরি করতে পেরেছেন। পাঞ্জাবে পারেন কি না, সেটাই এখন দেখার।
ছবি: Getty Images/AFP/N. Nau
'পানি মাফ, বিজলি হাফ'
দিল্লিতে কেজরিওয়ালের স্লোগান ছিল 'পানি মাফ, বিজলি হাফ', অর্থাৎ, জল ব্যবহারের জন্য কোনো পয়সা লাগবে না, বিদ্যুতের বিল অর্ধেক করা হবে। কম নবিদ্যুৎ ব্যবহার করলে কোনো পয়সাই দিতে হবে না। তার সেই প্রতিশ্রুতি রূপায়ণ করেছেন কেজরিওয়াল।
ছবি: Reuters/A. Fadnavis
অন্য রাজ্যে নজর
কেজরিওয়ালের দল গোয়াতেও দুইটি আসনে জিতেছে। কেজরিওয়ালের লক্ষ্য এবার অন্য রাজ্যেও আপকে ছড়িয়ে দেয়া। কংগ্রেস ক্রমশ হীনবল হচ্ছে। সেই জায়গাটা দখল করা। ফলে হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাটের মতো রাজ্যগুলিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন কেজরিওয়াল।
ছবি: Reuters/A. Fadnavis
রাস্তা সহজ নয়
জাতীয় রাজনীতিতে কেজরিওয়াল কতটা প্রভাব ফেলতে পারেন, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিজেপি এবং কংগ্রেসের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাই কেজরিওয়ালের এখন সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।
ছবি: DW/S. Kumar
8 ছবি1 | 8
মহারাষ্ট্রের আসন নিয়ে
মহারাষ্ট্র নিয়ে মঙ্গলবারই দিল্লিতে আলোচনায় বসছেন শিবসেনা, কংগ্রেস ও এনসিপি নেতারা। এনসিপি জানিয়েছে, তারা ২৩টি আসনে লড়তে চায়। তবে উদ্ধব ঠাকরে বলেছেন, তারা কোনোভাবেই চাইবেন না যে, জোট ভেঙে যাক। তারা একসঙ্গেই লড়বেন।
প্রবীণ সাংবাদিক সুনীল চাওকে ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''গতবার এনসিপি ১৮টি আসনে জিতেছিল। তার মধ্যে এখন মাত্র পাঁচজনই ঠাকরের সঙ্গে আছেন। কিন্তু ওই ১৮টি আসনের দাবি কারা ছাড়বে না। কংগ্রেস গতবার একটি আসনে জিতলেও ১৭টি জায়গায় যেখানে বিজেপি জিতেছিল, সেখানে তারা দুই নম্বরে ছি্ল। এমন হতে পারে এনসিপি ও কংগ্রেস প্রায় সমান সংখ্যক আসনে লড়বে। এনসিপিও গোটা ১২ আসনে লড়বে। প্রকাশ আম্বেডকরকে ঠাকরে বা কংগ্রেস একটি আসন ছাড়বে।''
দক্ষিণ ভারতের ছবি
তামিলনাড়ুতে গতবারের ফর্মুলাই বজায় থাকবে বলে প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে। কংগ্রেস নয়টি আসন পাবে। সিপিআই ও সিপিএম পাবে দুইটি করে আসন। বাকি ডিএমকে লড়বে। তারা গোটা দুই আসন ছোট কোনো দলকে ছাড়তে পারে।
তেলেঙ্গানাতে সিপিআই একটি আসনে লড়তে চায়। কিন্তু কংগ্রেস এখানে ১৭টি আসনেই লড়তে চায়। কর্ণাটকেও কংগ্রেস ২০টি আসনেই লড়বে। কেরালায় তারা লড়বে ১৬টি আসনে, চারটি আসন তারা ছাড়বে ছোট শরিকদের। অন্ধ্রেও কংগ্রেস ২৫টি আসনে লড়ার পক্ষপাতী। তবে সিপিআই এখানে দুইটি আসন চায়। এনিয়ে কথা হবে।
উত্তর ও পশ্চিম ভারতের পরিস্থিতি
উত্তরপ্রদেশ আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেস চাপে আছে। সমাজবাদী পার্টি যদি কংগ্রেসকে এখানে গোটা আটেক আসন ছাড়ে, তাহলে তারা মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে আসন চাইবে। ছত্তিশগড়ে দান্তেওয়াড়া চায় সিপিআই।
রাজস্থানে সিপিএম একটি আসনের দাবিদার। গুজরাটে আপ পাঁচটি আসনে লড়তে চায়। গোয়াতেও তারা একটি আসন চায়।
ঝাড়খণ্ডে আসন সমঝোতার আপাতত ফর্মুলা হলো, কংগ্রেস সাতটি, জেএমএম চারটি ও বামেরা তিনটি আসন। তবে চূড়ান্ত আলোচনা বাকি।
কংগ্রেসের মনোভাবে পরিবর্তন?
গতবারের তুলনায় কংগ্রেসের এবারের মনোভাবে কিছুটা পরিবর্তন দেখছেন অন্য বিরোধী দলের নেতারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাম নেতার কথায়, কংগ্রেস এবার অনেক বেশি নমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছে। তবে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হলো রাজ্য নেতাদের কট্টর মনোভাবের মোকাবিলা করা এবং অন্য দলগুলিকে আসন ছাড়া। অনমনীয় মনোভাব দেখাতে গিয়ে তারা ছত্তিশগড় ও রাজস্থানে হেরেছে বলে ওই বাম নেতার মত।
রাতভর মমতার অবস্থান-বিক্ষোভ
রেডরোডে মঞ্চ বানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
ছবি: Subrata Goswami/DW
বিক্ষোভের মঞ্চ
বুধবার বেলা ১২টায় রেড রোডের বিক্ষোভ মঞ্চে পৌঁছান মমতা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, দোলা সেন, জ্যোৎস্না মান্ডি, সায়নী ঘোষ।
ছবি: Subrata Goswami/DW
মমতার বসার জায়গা
মঞ্চে সামান্য উঁচু প্রশস্ত জায়গা করা হয়েছে মমতার বসার জন্য। তার পায়ের কাছে দু’পাশে বসছেন নেতা-মন্ত্রীরা। মঞ্চের পিছনে তৈরি হয়েছে বিশ্রামাগার। সেখানেই রাতে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
ছবি: Subrata Goswami/DW
মুখ্যমন্ত্রী নয়, দলনেত্রী
বুধবার মঞ্চে পৌঁছেই মমতা জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী নয়, অবস্থান বিক্ষোভের মঞ্চে তিনি এসেছেন তৃণমূলনেত্রী হিসেবে। মঞ্চে বসে প্রশাসনিক ফাইলও দেখছেন না তিনি। ফাইল সই করছেন মঞ্চের পিছনে বিশ্রামাগারে।
বিক্ষোভের মঞ্চ এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে গাড়ি চলাচলে অসুবিধা না হয়।
ছবি: Subrata Goswami/DW
গান-কবিতা
মঞ্চ থেকে গান গেয়েছেন মমতা। অন্য সময় বাকি নেতা-মন্ত্রীরাও গান গাইছেন। কবিতা পড়ছেন।
ছবি: Subrata Goswami/DW
ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে
মমতা যেখানে বসেছেন, সেখান থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে বসে চাকরিপ্রার্থীরা। সাতশ-রও বেশি দিন ধরে তারা সেখানে বসে। তাদের মঞ্চ থেকে এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করা হয়।
ছবি: Subrata Goswami/DW
ডিএ মঞ্চে বিরোধীরা
চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে বৃহস্পতিবার আলাদা আলাদা করে যাবেন সিপিএম এবং বিজেপির নেতারা।
ছবি: Payel Samanta/DW
8 ছবি1 | 8
পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা
পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা এখনো স্পষ্ট হয়নি। প্রদেশ কংগ্রেস তৃণমূলের কাছ থেকে দশটিু আসন চায়। তৃণমূল দিতে চায় মাত্র দুইটি আসন। এনিয়ে আলোচনা হবে। শেষপর্যন্ত আসন সমঝোতা হবে নাকি কংগ্রেস ও বামেরা একসঙ্গে লড়বেন তা আরো কিছুদিন পর স্পষ্ট হবে।
তবে তৃণমূল যেমন কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা চাইছে, তেমনই কংগ্রেস হাইকম্যান্ডও সমঝোতার পক্ষে। কিন্তু অধীর রঞ্জন চৌধুরীরা সমঝোতার বিরোধী। তবে সবই নির্ভর করছে, তৃণমূল কটা আসন ছাড়তে রাজি হবে এবং রাহুল গান্ধীরা শেষপর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেবেন তার উপর।
এখনো পর্যন্ত যতগুলি বৈঠক হয়েছে, তাতে কংগ্রেস নেতারা এই নমনীয় মনোভাব দেখিয়েছেন। সম্প্রতি তিন রাজ্যে হারার পরে তাদের মধ্যে এই পরিবর্তন দেখছেন বিরোধীরা।