1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আসমার স্বপ্ন ও বাস্তবতা

২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩

আসমা আখতারকে সবাই চিনবেন – এ আশা করাই ভুল৷ বিখ্যাত কেউ নন৷ সাধারণ এক গার্মেন্টস কর্মী৷ কয়েকদিন ধরে সংবাদমাধ্যমে খুব গুরুত্ব পাচ্ছে ন্যূনতম মজুরির দাবিতে তাঁদের আন্দোলনে নামার খবর৷ শুনুন এক আসমার জীবনের গল্প৷

Garments workers in Bangladesh are facing measurable problems in Bangladesh. After the building collapse in Savar, near Dhaka International organizations are pressuring Government to provide more legal support to Garments workers. DW/Harun Ur Rashid Swapan, Dhaka via: DW/ Arafatul Islam
বাংলাদেশের গার্মেন্টস কর্মীরাছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan

গল্পে তেমন কোনো রোমাঞ্চ নেই৷ সবাই জানেন, অনুমান করেন, বোঝেন, কিন্তু চলমান গল্পের শেষে তবু থেকে যায় ‘ন্যূনতম' অধিকার আদায়ে প্রাণপণ লড়াইয়ের কথা৷ গাজীপুরের এক পোষাক শিল্প কারখানার কর্মী আসমা গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকা এসেছিলেন এক খালার হাত ধরে৷ স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল, এলে বৃদ্ধ পিতা-মাতা বড় মেয়ের ঘামের দামে একটু সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য কিনতে পারবেন৷ নয় বছর ধরে স্বপ্নের সিঁড়ি খুঁজেই চলেছেন আসমা৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, নয় বছর আগে সিঁড়িতে পা রাখার পর মাস শেষে মাত্র ৬০০ টাকা হাতে পাওয়ার আনন্দের কথা৷ অভাবের সংসার যে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সুযোগ দিয়েছিল, তার জোরে পরের মাসেই হাজার টাকা বেতন! আসমার আনন্দ তখন দেখে কে!

নয় বছরে বেতন হয়েছে পাঁচ হাজার৷ এখন শক্ত হাতে কারখানার মেশিন চালাতে পারেন৷ দেড় হাজার টাকা ভাড়ার ঘরটিতে মাসে একদিন মাংস আর বাকি দিনগুলোতে মোটা চালের ভাতে শাক-আলু ভর্তা বা ডাল – এই খেয়ে বাবার কাছে মাসে অন্তত দু'হাজার টাকা পাঠাতে পারেন৷ ওভারটাইমের টাকা হাতে এলে মায়ের মুখের স্মিত হাসি আরো আলো ছড়ায়৷ আসমা সে কথা ভেবে সব কষ্ট ভুলে হেঁটে হেঁটে যান কারখানায়৷ ফেরেন হেঁটে হেঁটে৷ রিকশা বা টেম্পোতে চড়ে একটু আরাম করে বাড়ি ফিরতে খুব বাঁধে, মন বলে, ‘‘রিক্সায় যাবো যে টাকা খরচ কইরা সেই টাকা তো বাড়িতে পাঠাইতে পারবো, বা অসুস্থ হইলে ওষুধ খাইতে পারবো৷''

[No title]

This browser does not support the audio element.

আসমার তাই রিক্সায় চড়ে বাড়ি ফেরা হয় না৷ সপ্তাহে একটা দিনও মাছ-মাংশ ওঠে না মুখে৷ তবুও নিজেকে সুখি মনে হয়৷ যাঁরা মাস শেষে তিন হাজার টাকা বেতন পান, তাঁদের চেয়ে তো ভালোই আছেন৷ এইটুকু ভালো থাকতে গিয়ে কোথাও সামান্য আপোশও করেননি৷ তেজগাঁওয়ের আগের চাকরিটা যেতে বসেছিল এক সুপারভাইজারের হাত মুচড়ে দেয়ার অপরাধে৷ সুপারভাইজার সাহেব কথা না শোনার ছুতোয় আসমার গায়ে হাত দিয়েছিলেন৷

রানা প্লাজা ধসের পর...ছবি: Getty Images/STRDEL

সুপারভাইজারের হাত মুচড়ে দিয়ে তবু চাকরি বাঁচানো বা নতুন চাকরি খুঁজে পাওয়া যায়৷ তবে গত নয় বছরে আসমা জেনেছেন, ন্যূনতম প্রাপ্তি আদায় করাটা এত সহজ নয়৷ সহজ হলে তো কবেই মাসে কমপক্ষে আট হাজার টাকা বেতনের দাবি পোশাক কারখানার মালিকরা মেনে নিতেন৷ মালিকপক্ষ তো মানছেই না, উল্টো আসমা দেখছেন, দাবি আদায়ে রাস্তায় নেমে মালিকের লেলিয়ে দেয়া মাস্তানের পিটুনি খেয়ে তাঁর সহকর্মী ভাইয়ের ঠিকানা হয়েছে হাসপাতাল৷ সরকারের সদিচ্ছা আসমার কাছেও সন্দেহাতীত নয়৷ বিরোধী দলেরও নীরবতা দেখে পঞ্চম শ্রেণি পাশ আসমা খাতুন ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘সবাই এক৷ কেউ ভালো না৷ কোনো সরকারই ভালো না৷ আওয়ামী লীগ কন আর বিএনপি কন, সবাই কয় বড়লোকের কথা৷''

সাক্ষাৎকার ও প্রতিবেদন: আশীষ চক্রবর্ত্তী

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ