আরব রাষ্ট্রগুলি সম্প্রতি সিরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান আসাদের প্রতি নরম মনোভাব নিয়েছে। এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন বেয়ারবক।
বিজ্ঞাপন
সিরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান বাশার আল-আসাদকে কোনোভাবেই ক্ষমা করা যায় না। তার প্রতি নরম মনোভাব দেখানোর প্রশ্নই ওঠে না। সোমবার রাখাঢাক না রেখেই এই অভিমত প্রকাশ করেছেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক। তিনি বলেছেন, ''আসাদের প্রতি সামান্য হাত বাড়ানোও অন্যায়। কারণ প্রতিদিন তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছেন।''
পূর্ণ বিজয় নিশ্চিত করতে রাশিয়ার সহায়তায় আসাদ বাহিনী ফেব্রুয়ারিতে ইদলিবে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে, যার সবচেয়ে বড় শিকার হচ্ছে শিশুরা৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Watad
নয় লাখ বাস্তুহারা
ইদলিবে গত তিন মাসে প্রায় নয় লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে৷ শুধু ফ্রেব্রুয়ারিতেই বাস্তুহারা হয়েছে তিন লাখ মানুষ৷
ছবি: picture-alliance/AA/M. Said
তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে
প্রাণ বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়াদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু৷ তুরস্ক সীমান্তের কাছে তুষার ঢাকা পাহাড়ি এলাকায় নানা অস্থায়ী ক্যাম্পে তারা আশ্রয় নিয়েছে৷ সেখানে তাপমাত্রা মাইনাস সাতের নীচে নেমে যাচ্ছে৷ প্রচণ্ড ঠান্ডায় বিশেষ করে শিশুদের মৃত্যু হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/AA/H. Harrat
সমরযানের দীর্ঘ সারি
তুরস্ক সমর্থন দিচ্ছে বিদ্রোহীদের আর রাশিয়া সমর্থিত সিরীয় বাহিনী বিদ্রোহীদের শেষ ঘাঁটি ইদলিব দখলে ফেব্রুয়ারি থেকে মরিয়া৷ আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির চেষ্টাও ভেস্তে যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/AA/C. Genco
এম৫ মহাসড়ক
গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটি সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী আলেপ্পোর সঙ্গে ইদলিবকে জুড়েছে৷ দীর্ঘদিন ধরে এটির দখল নিতে চাইছে সিরীয় বাহিনী৷ গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার বোমারু বিমানের সহায়তায় মহাসড়কটিসহ ইদলিবের প্রায় পুরোটাই দখলে নিয়েছে তারা৷
ছবি: picture-alliance/AA/M. Said
রাশিয়ার বোমা হামলা
শরণার্থী ক্যাম্প, হাসপাতাল বা স্কুল- কোনো বাছবিচার না করেই রুশ বিমান হামলা চালাচ্ছে৷ জাতিসংঘ জানায়, গত দেড় মাসে ইদলিবে প্রায় তিনশ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে৷ তাদের ৯৩ শতাংশকে হত্যা করেছে আসাদ বাহিনী ও তাদের মিত্ররা৷
বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েও সাধারণ মানুষ প্রাণ রক্ষা করতে পারছে না৷ কারণ, শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতেও হামলা হচ্ছে৷ অনেক পরিবার রাস্তাতেই থাকছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Alkharboutli
ফাঁদে বন্দি মানুষ
প্রায় ৩৫ লাখ সিরীয় শারণার্থী আগে থেকেই তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছে৷ ওই বোঝা আর বাড়াতে রাজি নয় তুরস্ক সরকার৷ তাই সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে৷ ফলে ইদলিবের সাধারণ মানুষদের আশ্রয়ের কোনো জায়গা নেই৷
ছবি: picture-alliance/AA/M. Said
9 ছবি1 | 9
আপাতত জেড্ডায় আছেন বেয়ারবক। সেখানে সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ জানিয়েছেন, বেয়ারবকের সঙ্গে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক একাধিক বিষয় নিয়ে তার আলোচনা হয়েছে। জেড্ডাতেই ইয়েমেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ বিন মুবারকের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক হওয়ার কথা জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। এরপর ফিরতি পথে তিনি কাতারেও যেতে পারেন।
আগামী শুক্রবার থেকে ২২ দেশের আরব লিগের বৈঠক শুরু হওয়ার কথা। ২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আরব লিগ সিরিয়াকে এই মঞ্চ থেকে বাদ দেয়। সম্প্রতি আসাদকে আবার এই বৈঠকে ডাকা হয়েছে। বেয়ারবকের মতে, আসাদকে ডাকার অর্থ, তার প্রতি নরম মনোভাব দেখানো। গত দুই দশকে আসাদ প্রায় প্রতিদিন মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বলে বেয়ারবকের অভিমত। শুধু তা-ই নয়, গৃহযুদ্ধ বন্ধ করার কোনো চেষ্টাই তিনি করেননি বলে জার্মানি মনে করে। এবং সে কারণেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা অ্যামেরিকা আসাদের বিরুদ্ধে জারি করা নিষেধাজ্ঞা তোলেনি বলে তিনি জানিয়েছেন। জেড্ডায় বসে বেয়ারবকের এই মন্তব্য সমকালীন ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।