সিরিয়া সংকট নিয়ে উদ্বেগ এবং তা নিরসনের চেষ্টা চলছে৷ এরই মাঝে বিরোধ দেখা দিয়েছে আসাদ সরকারবিরোধী শিবিরে৷ সিরিয়ার বিরোধীদলগুলো দেশের বাইরে অবস্থানরত বিরোধীদের সমালোচনা করে তাদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে৷
বিজ্ঞাপন
দেশছাড়া বিরোধী দলগুলোর জোট ন্যাশনাল কোয়ালিশনকে আসাদ বিরোধীদের অনেক দুর্বলতাই তুলে ধরেছে সিরিয়ায় অবস্থানরত বিরোধী দলগুলো৷ এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ন্যাশনাল কংগ্রেসের আইনগত কোনো ভিত্তি নেই৷ জোটে অর্ধেক অন্তত বিদ্রোহীদের রাখতে হবে – এ দাবিও করেছে তারা৷ ন্যাশনাল কংগ্রেসে ঐক্যের অভাব সুস্পষ্ট৷ জেনেভায় যে শান্তি আলোচনা হবার কথা সেখানে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্তই নিতে পারছে না জোট৷ আলোচনায় কে বা কারা প্রতিনিধিত্ব করবে তা নিয়েই এখনো সিরিয়ার বিরোধী দলগুলোর সবচেয়ে বড় জোটটি দ্বিধাবিভক্ত৷ দেশের ভেতরের দলগুলো এই দুর্বলতাকেও তুলে ধরেছে৷
সিরিয়ার আন্দোলনের বার্ষিকী
সিরিয়ার সরকারবিরোধী আন্দোলনের দুই বছর পূর্ণ হলো৷ শুরুতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চললেও ক্রমেই তা সহিংস হয়ে উঠেছে৷
ছবি: Gaia Anderson
টিনএজারদের দিয়ে শুরু
সিরিয়ার দারা শহরের একটি স্কুলের দেয়ালে স্লোগান লেখায় আটক করা হয়েছিল কয়েকজন টিনএজারকে৷ তারা লিখেছিল, টিউনিশিয়া আর মিশরের পর সিরিয়ার বাশার আল আসাদ হবেন পরবর্তী আরব নেতা যাকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে৷ এই ঘটনার পরই শুরু হয় জোরদার আন্দোলন৷
ছবি: Gaia Anderson
দেশত্যাগীর সংখ্যা বাড়ছে
এখন পর্যন্ত প্রায় দশ লক্ষ সিরীয় ভয়ে দেশ ছেড়েছেন৷ আর প্রায় ত্রিশ লক্ষ মানুষ দেশের ভেতরেই গৃহহীন হয়ে পড়েছেন৷
ছবি: Gaia Anderson
অর্ধেকই শিশু
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, যারা দেশ ছেড়েছে তাদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু৷
ছবি: Gaia Anderson
শান্তিপূর্ণ থেকে সহিংস
শান্তিপূর্ণ থেকে সহিংস শান্তিপূর্ণভাবে যারা আন্দোলন শুরু করেছিলেন, ক্রমেই তারা দেখতে পান যে তাদের রাস্তাগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে৷ এছাড়া সশস্ত্র কিছু জনগণ ও সেনাবাহিনী ত্যাগ করাদের নিয়ে বিরোধী একটি জোটও গড়ে উঠেছে যারা সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়ছে৷
ছবি: Gaia Anderson
শিশু শিক্ষা হুমকির মুখে
সরকারবিরোধী আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুদের শিক্ষা৷ জাতিসংঘ বলছে, প্রতি পাঁচটি স্কুলের একটি হয় যুদ্ধে ধ্বসে গেছে, না হয় আশ্রয় শিবির হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে৷
ছবি: Gaia Anderson
তুরস্ক আশ্রয় নিয়ে তিন লক্ষ সিরীয়
তুরস্কের আশ্রয় শিবিরগুলোতে থাকা প্রায় তিন লক্ষ সিরীয়র মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ থাকে সরকারি পরিচালনায় থাকা শিবিরে৷ যেখানে স্কুল ও চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে৷ বাকি শরণার্থীরা যেখানে থাকছেন সেখানে ন্যূনতম সুবিধা নেই৷
ছবি: Gaia Anderson
সাহায্য থেকে বঞ্চিত
সিরিয়ার বিরোধীরা বলছে জাতিসংঘের সাহায্যগুলো পাচ্ছে সরকারি নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলোর বাসিন্দারা৷ বঞ্চিত হচ্ছেন বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা উত্তরাঞ্চলের জনগণ৷
ছবি: Gaia Anderson
সহায়তা বিতরণ হচ্ছে না
গাল্ফ দেশগুলো থেকে যে অর্থ সহায়তা আসছে বিরোধী নেতারা সেগুলো আশ্রয়প্রার্থীদের না দিয়ে নিজেদের শক্তি বাড়াতে কাজে লাগাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে৷
ছবি: Gaia Anderson
ত্রাণ নিয়ে যেতে সমস্যা
‘সেভ দ্য চিলড্রেন’ বলছে যেসব এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানে যাওয়াটা বেশ কষ্টসাধ্য৷ এমনকি কোনো জায়গায় যাওয়াও যাচ্ছে না৷ সিরীয় সরকারই ঐসব এলাকায় ত্রাণ সংস্থাগুলোকে যেতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে৷
ছবি: Gaia Anderson
সমাধান হচ্ছে না
সিরিয়ার বিরোধীরা এক হতে না পারায় এবং পর্যাপ্ত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ না থাকায় সিরিয়ার সমস্যার সমাধান হচ্ছে না৷
ছবি: Gaia Anderson
10 ছবি1 | 10
ন্যাশনাল কোয়ালিশনের এ দুর্বলতা শান্তি আলোচনাকেও হুমকির মুখে ফেলেছে৷ জোট নেতারা অনেকদিন ধরেই তুরস্কের রাজধানী ইস্তানবুলে রয়েছেন৷ তাঁদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে ইস্তানবুল গিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেত দাভুতোগলু৷ সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট ফোর্ড এবং ফ্রান্সের কূটনীতিকরাও সেখানে গিয়েছেন একই উদ্দেশ্যে৷
এদিকে ন্যাশনাল কোয়ালিশনের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়ায় শান্তি আলোচনা জুনে হওয়ার কথা থাকলেও সম্ভবত হচ্ছেনা৷ বাশার আল-আসাদ আলোচনায় অংশ নিতে সম্মতি দেয়ার পরও তাই তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন তা জুলাইয়ের আগে হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম৷