1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আসামে বোড়োভূমি সহিংসতা

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৭ মে ২০১৪

আসামের বোড়োভূমিতে গণহত্যার জন্য প্রকৃত অপরাধী কে বা কারা, নাগরিক সমাজের চাপে তার আসল কারণ খুঁজতে নেমে পড়েছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ৷ বোড়োভূমিতে বর্তমান গোষ্ঠী সংঘর্ষে গত সোমবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪৷

ছবি: DW/B. Das

আসামের বোড়োভূমিতে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়৷ ২০০৮ এবং ২০১২ সালেও হয়েছে৷ তবে এবারের প্রেক্ষাপটটা আলাদা৷ নির্বাচনের উত্তপ্ত আবহে ২০১৪ সালের বোড়োভূমি গণহত্যাকে দেয়া হচ্ছে রাজনৈতিক রং৷ শুরু হয়েছে বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে জাতীয় রাজনীতির কাজিয়া৷ দোষারোপ আর পাল্টা দোষারোপ৷ সত্যিই কি এটা মেরুকরণের রাজনীতি, না নিছক বোড়ো জঙ্গি হানার পরিণাম? এই হত্যাকাণ্ডের আসল কারণ খুঁজতে তদন্তে নেমে পড়েছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ৷ কংগ্রেস শাসিত আসাম সরকার এই বোড়োভূমি হত্যাকাণ্ডকে নিছক বোড়ো জঙ্গি সংগঠন এন ডিএফ বি-এর হামলা বলে চালাবার চেষ্টা করলেও বোড়ো সংগঠনের তরফে জানানো হয়, তারা এর সঙ্গে জড়িত নয়৷

তাদের অভিযোগ শাসক জোট অর্থাৎ কংগ্রেস ও তার শরিক বোড়োভূমি রাজনৈতিক দল বিপিএফ-এর উসকানিতেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে৷ কংগ্রেসের শরিক বোড়ো সংগঠন বিপিএফ-এর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছে অ-বোড়ো সংগঠন৷ কারণ মূলত অ-বোড়ো সম্প্রদায় এবং সংখ্যালঘুরাই আক্রান্ত হচ্ছে বোড়োভূমিতে৷ তাদের বক্তব্য, ২৪শে এপ্রিল কোকরাঝাড় সংসদীয় আসনের নির্বাচনে এবার বড়ো এবং অ-বোড়ো ভোটের মেরুকরণ হয়েছে৷ ঐ আসনে বোড়ো ভোটারদের সংখ্যা যেখানে ৬ লাখ, সেখানে অ-বোড়ো ভোটারদের সংখ্যা ৯ লাখ এবং মুসলিম ভোটারদের সংখ্যা ৪ লাখ৷ সংখ্যালঘুরা বোড়ো প্রার্থীকে ভোট দেয়নি বলে বলা হচ্ছে৷ অ-বোড়ো সংগঠনগুলি পৃথক বোড়ো রাজ্যের দাবির বিপক্ষে৷

বোড়োভূমি গণহত্যাকে দেয়া হচ্ছে রাজনৈতিক রংছবি: DW/B. Das

কেন্দ্রে বর্তমান ইউপিএ সরকারের বিদায়বেলায় বিজেপি নিশানা করেছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংকে৷ কারণ তিনি আসাম রাজ্যেরই সাংসদ৷ আসামে এই হিংসাযজ্ঞ বন্ধ করার দায়িত্ব তিনি এড়াতে পারেন না৷ কংগ্রেসের তরফে পাল্টা আক্রমণে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর উসকানিমূলক ভাষণ এবং মেরুকরণের রাজনীতিকেই দায়ী করা হয়েছে৷ এই অভিযোগে গলা মিলিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ৷ বলেছেন, মেরুকরণের রাজনীতি করলে সহিংসতা বাড়বে বৈ কমবে না৷

বোড়ো ও অ-বোড়ো দাঙ্গার মূল কারণটি পাশ কাটাতে চাইছে রাজ্য ও কেন্দ্রের রাজনৈতিক নেতৃত্ব৷ আসল কারণটা হলো বোড়োভূমিতে অ-বোড়ো বাঙালি মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি৷ যার পেছনে বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশ একটি কারণ বলে মনে করা হচ্ছে৷ দ্বিতীয়ত বোড়োল্যান্ড গঠনের সময় এমন কিছু এলাকা বোড়োভূমির অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যেখানে বোড়োদের চেয়ে অ-বোড়ো জনসংখ্যা বেশি, যেটা বোড়ো আঞ্চলিক পরিষদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে আক্রোশের জন্ম দেয়৷ কারণ তাদের ভয়, কালে কালে বোড়োভূমিতেই তারা হয়ে পড়বে সংখ্যালঘু৷ তাদের জমিজমা গ্রাস করে নেবে অ-বোড়ো সম্প্রদায়৷ পারস্পরিক সন্দেহ এবং বিদ্বেষ বিষ নাশে প্রাথমিক দায় আসামের গগৈ সরকারের৷ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে একটা সমাধান সূত্র খুঁজে দেখার চেষ্টা করতে হবে৷ নাহলে নিরীহ মানুষের হত্যাকাণ্ড বন্ধ হবার নয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ