বুধবার স্থানীয় সময় সাতটা ৫১ মিনিট নাগাদ কেঁপে উঠলো আসাম সহ উত্তরপূর্ব ভারত৷ ভূমিকম্প টের পাওয়া গেছে উত্তরবঙ্গ ও কলকাতায়৷ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায়ও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের পরিমাপ ছিল ছয় দশমিক চার৷ প্রথমবার কেঁপে ওঠার পর দুইটি আফটারশক আসে। সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মারা যাওয়ার কোনো খবর নেই, তবে বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল গুয়াহাটি থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরে ঢেকাইজুলি শহর। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানবন্দ সোনোয়াল বলেছেন, ‘‘আসামে বড় আকারের ভূমিকম্প হয়েছে। আমি প্রার্থনা করছি, সকলে যাতে নিরাপদে থাকেন। আমি সব জেলা থেকে খবর নিচ্ছি৷’’
তবে বেশ কিছু বাড়িতে চিড় ধরেছে৷ কিছু দেওয়াল ভেঙেছে৷ এরকম কিছু ছবি আসামের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা টুইটে শেয়ারও করেছেন৷ সামাজিক মাধ্যমে দেয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিড়ও ধরেছে। শোনিতপুর সহ কয়েকটি শহরে রাস্তায় ফাটল দেখা দিয়েছে৷
উত্তরবঙ্গ তো বটেই, কলকাতাতেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে৷ তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি৷ উত্তর পূর্বের অন্য রাজ্যও কেঁপেছে৷
বাংলাদেশেও কাঁপুনি
ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার জানান, ভূকম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ঢাকায় তিন, সিলেটে চার ও উত্তরবঙ্গের রাজশাহী, দিনাজপুরসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় পাঁচ মাত্রায় অনুভূত হয়েছে৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত আর্থ অবজারভেটরি সেন্টার থেকে ৪০৬ কিলোমিটার উত্তরে এর উৎপত্তিস্থল রেকর্ড করা হয়৷
জিএইচ/এসজি (পিটিআই, রয়টার্স, বিডিনিউজ)
২০১৫ সালের ছবিঘরটি দেখুন...
একুশ শতকের সবচেয়ে প্রাণঘাতী কয়েকটি ভূমিকম্প
গত ১৫ বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছে৷ ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের হিসেবে অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের তালিকা থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Shah
পোর্ট অফ প্রিন্স, হাইতি
২০১০ সালের ১২ ডিসেম্বর হাইতিতে ৭.৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ এতে কমপক্ষে তিন লক্ষ ২০ হাজার মানুষ নিহত হয়৷ আহত হয় প্রায় তিন লক্ষ মানুষ৷ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল হাইতির রাজধানী পোর্ট অফ প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পশ্চিমে৷
ছবি: AP
আচে, ইন্দোনেশিয়া
২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের উপকূলে সমুদ্রগর্ভে সংঘটিত ৯.১ মাত্রার ভূমিকম্প যে সুনামির অবতারণা ঘটায়, তা-তে ১৪ দেশের প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়৷
ছবি: AFP/Getty Images/Choo Youn Kong
সিচুয়ান, চীন
২০০৮ সালের ১২ মে চীনের সিচুয়ানে ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানলে প্রায় ৯০ হাজার মানুষ মারা যায়৷ এতে ৫০ লক্ষেরও বেশি ভবন ধসে পড়ে৷ নিহতদের বেশিরভাগই ধসে যাওয়া ভবনের নীচে পড়ে প্রাণ হারায়৷
ছবি: AFP/Getty Images
কাশ্মীর, পাকিস্তান
২০০৫ সালের ৮ অক্টোবর পাকিস্তানের কাশ্মীর অঞ্চলে ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৮৪ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়৷ এছাড়া ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে প্রায় ১,৩০০ জন এবং আফগানিস্তানেও বেশ কয়েকজন নিহত হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images/E. Feferberg
বাম, ইরান
২০০৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইরানের বাম প্রদেশে ৬.৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়৷ এতে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়৷ আহতের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০ হাজার৷
ছবি: AP
ফুকুশিমা, জাপান
২০১১ সালের ১১ মার্চ ৯ মাত্রার ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট সুনামি ও তাপরর পারমাণবিক কেন্দ্রে বিপর্যয়ের ঘটনায় প্রায় ২১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়৷
ছবি: picture alliance/dpa
গুজরাট, ভারত
২০০১ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতের গুজরাটে ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রাণ হারায় ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ৷
ছবি: SEBASTIAN D'SOUZA/AFP/Getty Images
কাটমান্ডু, নেপাল
চলতি বছর নেপালে ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ ২৫ এপ্রিলের ঐ ভূমিকম্প প্রায় নয় হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়৷ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল কাটমান্ডু থেকে ৮০ কিলোমিটার পশ্চিমে৷
ছবি: Reuters/N. Chitrakar
ইয়োগিয়াকার্টা, ইন্দোনেশিয়া
২০০৬ সালের ২৬ মে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পের শিকার হয়ে প্রায় ৫,৮০০ মানুষের প্রাণ যায়৷ আহত হয় প্রায় ৩৬ হাজার৷
ছবি: AP
পাকিস্তান-আফগানিস্তান
সোমবার (২৬ অক্টোবর, ২০১৫) ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে পাকিস্তানে এখনও পর্যন্ত ২৩০ জন ও আফগানিস্তানে কমপক্ষে ৭৬ জনের প্রাণ হারানোর খবর পাওয়া গেছে৷ আফগানিস্তানে নিহতদের মধ্যে ১২ জন ছাত্রী রয়েছে যারা ভয়ে স্কুল থেকে বের হতে গিয়ে পায়ের নীচে পড়ে মারা যায়৷