1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আয়ু বাড়ার কারণে ‘ঝুঁকির মুখে বয়স্কদের স্বাস্থ্যসেবা’

সমীর কুমার দে, ঢাকা২ জানুয়ারি ২০১৫

বাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে৷ এতে ঝুঁকির মুখে পড়ছে বয়স্ক নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা৷ দেশে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষের বয়স এখন ৬০-এর বেশি৷ ২০৫০ সালে এই হার ২০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াতে পারে৷ কিন্তু তখন এ চাপ অর্থনীতি টানতে পারবে না৷

Bangladesch Alte Menschen
ছবি: picture-alliance/Lonely Planet Images

স্বাস্থ্যসহ সেবা খাতগুলোও এ মুহূর্তে এই চাপ টানতে সেভাবে প্রস্তুত নয়৷ ফলে বয়স্কদের বোঝা মনে হতে পারে৷ সরকার অবশ্য ইতিমধ্যেই বয়স্ক নাগরিকদের জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে৷ বিশেষ করে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ দিতে সন্তানদের বাধ্য করা হচ্ছে৷ এর জন্য সরকারি বেতন স্কেলে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণের খবর দিচ্ছে সরকার৷ আর কেউ এই দায়িত্ব পালন না করলে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আইনও হয়েছে৷

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু এখন ৬৯ দশমিক ৪ বছর৷ ২০০৮ সালে যেখানে গড় আয়ু ছিল ৬৬ দশমিক ৮ বছর৷ ওদিকে ভারতের গড় আয়ু এখনো ৬৪ বছর৷ আর নেপালে ৬৯ বছর৷ যদিও চীনে গড় আয়ু ৭৩ বছর৷

বয়স বাড়ছে আফ্রিকানদেরও, তাই চাই অবসর ভাতাছবি: Gerald Henzinger

২০১২ সালের এই হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে গত বছরের মাঝামাঝিতে৷ প্রতি চার বছর অন্তর অন্তর এই হিসাব করা হয়৷ পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে, চার বছরে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে ২ দশমিক ৬ বছর৷ বিশেষজ্ঞরা এর পিছনে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ বৃদ্ধি, শিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রগতি এবং সামাজিক নিরাপত্তার বিভিন্ন সুবিধাসহ বেশ কয়েকটি বিষয়কে উল্লেখ করছেন৷ এছাড়া গর্ভাবস্থায় মৃত্যু, মাতৃমৃত্যু এবং শিশু মৃত্যুর হার কমাটাও গড় আয়ু বাড়ার একটা বড় কারণ৷

জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর নূরুন্নবী বলেছেন, গড় আয়ু বাড়ার ক্ষেত্রে শিশু মৃত্যুর হার কমে যাওয়ার একটা সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে৷ শিশু মৃত্যুর হার কমাতে বাংলাদেশ যথেষ্ট উন্নতি করছে৷ তাই দেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে৷ স্বাভাবিকভাবেই মানুষের গড় আয়ু বাড়তে থাকায় বাংলাদেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা৷ এরও একটা প্রভাব ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতিসহ সব ক্ষেত্রে পড়তে পারে৷ তবে এখন থেকেই যে সরকার বয়স্কদের ব্যাপারে উদ্যোগ নিচ্ছে – সেটাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন এই জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞ৷

পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচ বছরের নীচে শিশু মৃত্যুর হার প্রতি ১ হাজারে ২০০৮ সালে ছিল ৫৪ শতাংশ৷ ২০১২ সালের শেষে গিয়ে তা এসে দাঁড়ায় ৪২ শতাংশে৷ অর্থাত্‍ শিশু মৃত্যু বন্ধে বেশ ভালো করছে সরকার৷ অধ্যাপক এম নূরুন্নবীর কথায়, ‘‘আমাদের দেশে স্বাস্থ্যবীমা নেই৷ এছাড়া বয়স্কদের জন্য বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা দরকার হয়, সেই ব্যবস্থা এখনও সেভাবে গড়ে ওঠেনি৷'' এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বয়স্করা বেশিরভাই উপার্জনক্ষম নয়৷ ফলে বয়স্কদের জন্য স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে একটা সংকট দেখা দিতে পারে৷

জরিপে বলা হয়েছে, ২০০৮ সালে প্রতি হাজারে মৃত্যুর হার ছিল ৬ শতাংশ৷ এই মৃত্যুর হার কমে এখন ৫.৩ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে৷ মৃত্যুর হার শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি৷ গ্রামে মৃত্যুর হার ৫.৭ শতাংশ আর শহরে তা ৪.৬ শতাংশ৷ প্রতি হাজারে দেশে মাতৃমৃত্যুর হারও কমে এসেছে৷ ২০০৮ সালে যেখানে ছিল ৩.৪৮ শতাংশ, ২০১২ সালে তা এসে দাঁড়িয়েছে ২.০৩ শতাংশে৷ তবে জরিপ অনুসারে, নারীদের শিশু জন্ম দেবার হারও কমেছে৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গর্ভনিরোধক ব্যবস্থা সহজতর হওয়া এবং শিক্ষা ও সচেতনতা বাড়ায় শিশু জন্মের হার কমে এসেছে৷

আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংগঠন বা এনজিও ‘পপুলেশন কাউন্সিল' বাংলাদেশ শাখার পরিচালক উবায়দূর রব বলেন, দেশের স্বাস্থ্য খাতে উন্নতি ঘটলেও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে৷ তিনি বলেন, ‘‘দেশে এখনো অকালে গর্ভপাতের ঝুঁকি রয়েছে৷ তাই জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য বন্ধ্যাত্বকরণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে৷ এছাড়া শহরের গরিবদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়৷ অধিকাংশ মানুষ এখনও শহরমুখি৷ তাই তাঁদের স্বাস্থ্যসেবা বাড়ানো প্রয়োজন৷ তাহলে হয়ত বয়স্ক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যাবে৷''

তাঁর মতে, গ্রামে পর্যাপ্ত চাকরির ব্যবস্থা করলে মানুষের শহরমুখি হওয়ার প্রবণতা কমবে৷ আর তাতে জনসংখ্য ভারসাম্যও প্রতিষ্ঠা হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ