ইউরো ২০২৪ এ ইংল্য়ান্ডকে ২-১ গোলে হারালো স্পেন। এই নিয়ে চতুর্থবার ইউরো চ্য়াম্পিয়ন হলো তারা।
বিজ্ঞাপন
রোববারের বার্লিন দেখলো স্প্য়ানিশ আর্মাডার চমক। জার্মানির রাজধানীতে রোববার সন্ধ্যায় ছিল ইউরো ২০২৪ এর ফাইনাল। টান টান ম্য়াচে শেষ মুহূর্তে গোল দিয়ে দলকে চ্যাম্পিয়ন করেন মিকেল ওয়ারজাবাল। এই নিয়ে চতুর্থবার ইউরো চ্য়াম্পিয়ন হলো স্পেন। ২০০৮ সাল থেকে ৫টি ইউরোর মধ্যে তিনটিতে জয়ী তারা। বস্তুত, ইউরোতে কার্যত অপ্রতিরোদ্ধ হয়ে উঠেছে তারা।
এদিন প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য়। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতেই আক্রমণাত্মক মেজাজে দেখা যায় স্পেনকে। উইঙ্গার নিকো উইলিয়ামসকে অসাধারণ পাস দেন লামিন ইয়ামাল। সেই বলই গোলে ঢোকান নিকো। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন।
তবে গোল খেয়ে খেলায় ফেরে ইংল্য়ান্ড। ৭৩ মিনিটের মাথায় ইংল্য়ান্ডকে সমতায় ফেরায় কোল পালমারের গোল। বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নেমেই চমক দেখান পালমার। এরপর বেশ কয়েকবার ইংল্য়ান্ডের বক্সে ঢুকে পড়লেও গোল পায়নি স্পেন। তবে বরাবরই তারা চাপ তৈরি করছিল।
খেলা শেষ হওয়ার চার মিনিট আগে ম্য়াচে ঘুরিয়ে দেন মিকেল ওয়ারজাবাল। মার্ক কুকিরোলার ক্রস থেকে গোল পান মিকেল। এই গোলই নির্ধারণ করে দেয় খেলার ভাগ্য়। চতুর্থবারের মতো ইউরো চ্য়াম্পিয়ন হওয়ার ইতিহাস গড়ে ফেলে স্পেন।
মেসি আর ইয়ামালের যেসব ছবিতে মেতেছে বিশ্ব
প্রায় ১৭ বছর আগে তাদের সাক্ষাৎ৷ এখন তারা দুজনেই ফুটবলের অতি পরিচিত নাম৷ একজন কিংবদন্তি, অন্যজন ভবিষ্যতের সম্ভাব্য মহাতারকা৷ লিওনেল মেসি এবং লামিন ইয়ামালের কথা হচ্ছে৷ কীভাবে দেখা হয়েছিল তাদের- গ্যালারিতে থাকছে সেই গল্প৷
ছবি: Joan Monfort/AP Photo/picture alliance
যখন প্রথম দেখা
২০০৭ সালে বার্সোলোনার ন্যু ক্যাম্পে একটা চ্যারিটি ক্যালেন্ডারের জন্য ছবি তুলতে গিয়েছিলেন বার্তা সংস্থা এপি’র আলোকচিত্রী হুয়ান মনফোর্ত৷ লিওনেল মেসির সাথে একটি শিশুর ছবি তোলার পরিকল্পনা তার৷ তিনি তখনই জানতেন মেসি ফুটবলের জগতে রাজত্ব করবে৷ কিন্তু এই ছোট শিশুটিও যে ভবিষ্যতের তারকা হবে তা তার কল্পনাতেও ছিল না৷
ছবি: Joan Monfort/AP Photo/picture alliance
ভাইরাল সেই ছবি
এই ছবিতে যে শিশুকে দেখা যাচ্ছে ও-ই আজকের লামিন ইয়ামাল, যাকে বলা হচ্ছে স্পেনের ‘বিস্ময় বালক’৷ কৈশোরেই লামিন ফুটবল মাঠে যে পারফর্মেন্স দেখাচ্ছে, তাতে এখনই তাকে তুলনা করা হচ্ছে কিংবদন্তিদের সাথে৷
ছবি: Joan Monfort/AP Photo/picture alliance
‘দুই কিংবদন্তির যাত্রা শুরু’
লামিন ইয়ামালের বাবা গত সপ্তাহে ইনস্টাগ্রামে এই ছবিগুলো পোস্ট করেন, সঙ্গে লেখেন ‘দ্য বিগিনিং অব টু লেজেন্ডস’, অর্থাৎ ‘দুই কিংবদন্তির যাত্রা শুরু’৷ পোস্ট করার পরই ছবিগুলো নিয়ে পুরো ফুটবল বিশ্বে মাতামাতি শুরু হয়ে যায়৷
ছবি: Joan Monfort/AP Photo/picture alliance
ফটোগ্রাফারের বক্তব্য
আলোকচিত্রী হুয়ান মনফোর্ত জানান, ২০০৭ সালে এই ফটোশ্যুট বার্সেলোনার ন্যু ক্যাম্পের লকার রুমে তোলা হয়েছিল৷ তখন ইয়ামাল খুব ছোট৷ ইউনিসেফ এবং স্থানীয় একটি পত্রিকার যৌথ উদ্যোগে তহবিল সংগ্রহের জন্য ক্যালেন্ডার তৈরিতে করা হয়েছিল শ্যুটটি৷ এই ফটোশ্যুট যখন হয়েছিল তখন ব়্যাফেল ড্র তে ইয়ামালের নাম ওঠে এবং ছবি তোলার জন্য নির্বাচিত হয় সে৷ ২০ বছর বয়সি মেসিকে শিশু সামলাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল বলে জানান আলোকচিত্রী৷
ছবি: Joan Monfort/AP Photo/picture alliance
মেসির সাথে মিল
মেসির মতোই বার্সেলোনার অ্যাকাডেমি লা মাসিয়ায় ফুটবলে ‘পায়ে খড়ি’ স্পেনের ইয়ামালের৷ জাতীয় দলের হয়ে খেলার আগে স্পেনের অনূর্ধ্ব ১৫, ১৬, ১৭, ১৯ সব বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলেছেন৷
ছবি: Bradley Collyer/empics/picture alliance
ভবিষ্যৎ ফুটবলের জাদুকর
স্পেনের মাতারা প্রদেশে এক উদ্বাস্তু পরিবারে জন্ম ইয়ামালের৷ দারিদ্রের মধ্যে বেড়ে ওঠা৷ ইয়ামালের বাবা মরক্কোর, মা আফ্রিকার ছোট্ট দেশ ইকোয়াটোরিয়াল গিনির৷ ফুটবলের জাদুকর হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে তার মধ্যে৷ ইউরো ২০২৪-এর সেমিফাইনালে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার রেকর্ড গড়ে তারই ইঙ্গিত দিলেন লামিন ইয়ামাল৷
ছবি: Jose Breton/NurPhoto/picture alliance
6 ছবি1 | 6
খেলার শেষে ওয়ারজাবাল বলেন, ''আমার যা কাজ ছিল, তা-ই করেছি। ইউরো-তে প্রথম ২৬ এ জায়গা পাওয়াই একটা স্বপ্ন। এরপর টিমের জন্য় কাজে লাগতে পেরেছি, এটাই সবচেয়ে বড় কথা। সহ খেলোয়াড়দের কাছ থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি।''
এক স্বপ্নের দৌড়ে আছে স্পেনের ফুটবল দল। ক্লাব হিসেবে এবং দেশ হিসেবে গত ২২টি ফাইনালে তারা অপ্রতিরোধ্য। ইউরোতেও তার ব্য়তিক্রম হলো না। বস্তুত, বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য়, স্পেনের জয়ের মূল কারণ তাদের আক্রমণাত্মক ফুটবল। ঠিক তার উল্টো পথে এদিন হেঁটেছে ইংল্য়ান্ড। শুরু থেকেই তারা ছিল রক্ষণাত্মক।
প্রথমার্ধে অবশ্য কোনো দলই সেভাবে মন জয় করতে পারেনি। সম্ভাবনা তৈরি করেও তা শেষ করতে পারেনি স্পেন। ইংল্য়ান্ডও ছন্নছাড়া ফুটবল খেলেছে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে চেনা ছন্দে ফেরে স্পেন। পাসিং ফুটবল খেলে দর্শকের মন জিতে নেয় তারা। একটার পর একটা বল তৈরি করেছে তারা ইংল্য়ান্ডের বক্সে।
টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন স্পেনের সহঅধিনায়ক রদ্রি। তবে এদিন প্রথমার্ধেই তাকে আহত হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। টানা সাতটি ম্য়াচ জিতে আরেকটি বিশ্বরেকর্ড করেছে স্পেন। বস্তুত, এবারের ইউরোতে একেবারে গোড়া থেকেই অপ্রতিরোধ্য ছিল তারা। প্রথম থেকেই ছিল ফেভারিট।