ইইউ ও ব্রিটেনের মধ্যে বোঝাপড়ার সম্ভাবনা বাড়ছে?
৭ অক্টোবর ২০২০
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদ সংক্রান্ত চুক্তি যেভাবে একেবারে শেষ মুহূর্তে সম্ভব হয়েছিল, ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে বোঝাপড়াও ঠিক সেভাবেই সফল করে সম্ভবত চমক সৃষ্টি করতে চান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন৷ চলতি মাসেই দুই পক্ষের মধ্যে ঐকমত্য না হলে ১লা জানুয়ারি সেই চুক্তি কার্যকর করার জন্য যথেষ্ট সময় থাকবে না৷ জনসন ১৫ই অক্টোবরের মধ্যে আলোচনা শেষ করার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন৷ সেই দিনই ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও সম্ভবত নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে৷ যথেষ্ট অগ্রগতির সম্ভাবনা থাকলে প্রয়োজনে আলোচনা নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত গড়াতে পারে৷ এভাবে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়ানোর শেষ চেষ্টা চালানো হবে৷
মঙ্গলবার দুই পক্ষের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে৷ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সেই সূত্রকে উদ্ধৃত করে দাবি করছে যে, ইইউ ও ব্রিটেন পরস্পরের নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তা অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত৷ এ সংক্রান্ত দশটির মধ্যে নয়টি খুঁটিনাটি বিষয়ে নীতিগত বোঝাপড়া সম্ভব হয়েছে৷ তবে মাছ ধরার অধিকার, ন্যায্য প্রতিযোগিতার গ্যারেন্টি এবং ভবিষ্যতে সংঘাত মেটানোর প্রক্রিয়ার মতো বিষয়গুলি নিয়ে মতপার্থক্য এখনো কাটছে না৷ সেই সূত্র অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের আশঙ্কা প্রকাশ করলেও চুক্তির সম্ভাবনা আসলে বাড়ছে৷ এই রিপোর্ট প্রকাশের পর ইউরোর তুলনায় পাউন্ডের বিনিময় মূল্যের পতন কিছুটা কমে গেছে৷
বুধবার থেকে লন্ডনে আবার দুই পক্ষের মধ্যস্থতাকারীদের আলোচনা শুরু হচ্ছে৷ বিশাল অঙ্কের লোকসান প্রতিরোধ করতে শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলি বোঝাপড়ার জন্য চাপ দিলেও শেষ পর্যন্ত চুক্তিসহ ব্রেক্সিট কার্যকর হবে কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না৷ ফলে ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মারোস সেফকোভিচ ইউরোপীয় পার্লামেন্টকে জানিয়েছেন, যে চুক্তির জন্য হাতে সময় খুবই কম৷ তিনি পরিস্থিতি আরও জটিল করার জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে দায়ী করেন৷ উল্লেখ্য, জনসন গত মাসে ব্রেক্সিট চুক্তি ভঙ্গ করে বিতর্কিত একটি আইন প্রণয়ন করায় ইইউ তাঁর কড়া সমালোচনা করেছে৷ এমন প্রেক্ষাপটে সেফকোভিচ ব্রিটেনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন৷
চলমান করোনা সংকট ও চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ব্রিটেনের অর্থনীতির জন্য কতটা ক্ষতিকর হতে পারে, তার এক পূর্বাভাষ তুলে ধরেছে বেকার ম্যাককেনজি নামের এক প্রতিষ্ঠান৷ তাদের হিসেব অনুযায়ী এমন পরিস্থিতিতে আগামী এক দশকে প্রতি বছর ব্রিটেনের জিডিপি ১৩,৪০০ কোটি পাউন্ড কমে যাবে৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এপি)