1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইইউ নেতারা কাটালুনিয়ায় মধ্যস্থতা করতে রাজি নন

২০ অক্টোবর ২০১৭

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃবর্গ কাটালুনিয়া সংকটে মধ্যস্থতা করতে অস্বীকার করেছেন৷ তাঁদের মতে, মাদ্রিদ আর বার্সেলোনাকে এই সংকটের সমাধান করতে হবে৷

ছবি: Reuters/G. Fuentes

বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষবৈঠক চলাকালীন ইউরোপীয় পরিষদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক সাংবাদিকদের বলেন যে, ইউরোপীয় নেতৃবর্গ কাতালান সংকট নিয়ে আলোচনা করবেন না৷

‘‘আমাদের সকলেরই নিজস্ব আবেগ-অনুভূতি, মতামত ও মূল্যায়ন আছে, কিন্তু সরকারিভাবে বলতে গেলে, ইইউ-এর হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই,'' টুস্ক বলেন৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘সদস্যদেশগুলি এ বিষয়ে স্পষ্ট যে, কোনো ধরণের মধ্যস্থতার জন্য কোনো সুযোগ বা সম্ভাবনা নেই৷''

বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রয়াসের অন্ত ঘটানোর জন্য স্পেন সরকার কাতালান প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুইদেমনকে যে চরমপত্র দিয়েছিলেন, তার সর্বশেষ মেয়াদ বৃহস্পতিবার সকালে শেষ হয়৷ কিন্তু পুইদেমন পুনরায় প্রধানমন্ত্রী মারিয়োনো রাখয়-কে লিখিত একটি পত্রে শুধুমাত্র সরকারিভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করার হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘‘রাষ্ট্রীয় সরকার যদি সংলাপ রোধ ও নিপীড়ন চালিয়ে যান, তাহলে কাটালুনিয়ার সংসদ প্রয়োজনে সরকারিভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা সম্পর্কে ভোট অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেবে৷''  

দুই কাটালুনিয়ান নেতার গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বার্সেলোনায় বিক্ষোভছবি: Getty Images/AFP/L. Gene

রাখয় ও ১৫৫ নম্বর সূত্র

রাখয় ১৯৭৮ সালের সংবিধানের ১৫৫ নং সূত্রটি প্রয়োগ করার পরিকল্পনা করছেন৷ এই সূত্র অনুযায়ী, কোনো প্রদেশ আইন ভঙ্গ করলে, কেন্দ্র তার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে৷ পরিকল্পনা অনুযায়ী, শনিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার একটি বিশেষ অধিবেশনে সংশ্লিষ্ট পদক্ষেপগুলির তালিকা তৈরি করা হবে ও সেই তালিকা সেনেট বা সংসদের উচ্চকক্ষে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে৷

যেসব পদক্ষেপের কথা ভাবা হচ্ছে, দৃশ্যত তার মধ্যে থাকবে (১) পুইদেমনকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ, (২) শিক্ষাব্যবস্থার উপর প্রাদেশিক সরকারের নিয়ন্ত্রণ বাতিল, (৩) প্রদেশিক সংসদ ভেঙে দেওয়া ও নতুন নির্বাচন আহ্বান এবং (৪) সরকারি গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া, কেননা, এই পাবলিক মিডিয়া কাটালুনিয়ার স্বাধীনতাপন্থি শাসকজোটের মুখপত্র হিসেবে কাজ করছে বলে কেন্দ্রের ধারণা৷

দুই নেতার গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বার্সেলোনায় নানামুখী বিক্ষোভছবি: picture-alliance/abaca/L. Bou

পুইদেমন এযাবৎ শুধু মাদ্রিদ সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার ডাক দিয়েছেন৷ কিন্তু ব্রেক্সিট আলাপ-আলোচনায় যখন বিশেষ কোনো প্রগতি অর্জিত হচ্ছে না, ঠিক সেই মুহূর্তে খুব কম ইইউ নেতাই আরো জটিলতা সৃষ্টি করতে চান৷ এক প্রবীণ ইইউ কূটনীতিক রয়টার্সকে বলেছেন, ‘‘বার্সেলোনাকে সমর্থন করে বিশেষ কিছু লাভ নেই, কিন্তু মাদ্রিদকে চটালে অনেক ক্ষতি৷''

 

স্কটল্যান্ড থেকে ফ্ল্যান্ডার্স থেকে কোসোভো – কাটালুনিয়া এক অশুভ দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে বলে ব্রাসেলসের আশঙ্কা৷

সাংবিধানিক সমাধান

‘‘আমরা স্পেন সরকারের অবস্থান সমর্থন করি,'' জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ব্রাসেলসে মন্তব্য করেছেন৷ পরে তিনি আরো বলেন যে, ‘‘স্পেনীয় সংবিধানের ভিত্তিতে'' সংকটের সমাধান হবে বলে তাঁর আশা৷

‘‘এটা স্পেনের একটা অভ্যন্তরীণ বিষয়,'' নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে সাংবাদিকদের বলেছেন৷ ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ অনুরূপ মনোভাব প্রকাশ করেছেন৷ মাক্রোঁ শীর্ষবৈঠকের অবকাশে রাখয়ের সঙ্গে  বৈঠকে মিলিত হন৷ ‘‘পরিস্থিতির সমাধানের জন্য (মাক্রোঁর) রাখয়ের উপর পূর্ণ আস্থা আছে,'' এক ফরাসি কূটনীতিক রয়টার্সকে বলেন৷ মাক্রোঁ সংবাদমাধ্যমকে বলেন যে, শীর্ষবৈঠক থেকে মাদ্রিদের সঙ্গে ‘‘পূর্ণ ঐক্যের বার্তা'' ব্যক্ত হবে৷

স্বাধীনতা সহজ নয়

স্পেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ব্যাপারে কাটালুনিয়ায় ৭৫ লক্ষ বাসিন্দা দ্বিধাবিভক্ত৷

বামপন্থি ইআরসি দলের মুখপাত্র জোয়ান তার্দা মাদ্রিদে সাংসদদের বলেছেন যে, কাতালান সরকার নির্বাচনের ডাক দেবেন না৷

কাটালুনিয়ার ‘লা ভ্যানগুয়ার্দিয়া' হলো স্পেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম দৈনিক৷ ‘‘গণ আত্মহত্যায় কোনো গৌরব নেই; একজন সেই সিদ্ধান্ত নিলে ও অন্যান্য সকলে তার ভুক্তভোগী হলে, গৌরব আরো কম,'' পত্রিকাটি একটি সম্পাদকীয়তে মন্তব্য করেছে৷

রাশিয়ার দৃষ্টিতে

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনও বলেছেন যে, কাতালান সংকট হলো স্পেনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার৷

অপরদিকে তিনি পশ্চিমের ‘দ্বিবিধ মানদণ্ডের' সমালোচনা করেছেন, কেননা, পশ্চিম কোসোভোর বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে সমর্থন করেছে, অথচ অপরাপর বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে সমর্থন করতে রাজি নয়৷ বলতে কি, ইইউ-এর যে পাঁচটি দেশ আজও কোসোভোর স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়নি, স্পেন তাদের মধ্যে অন্যতম৷ বাকিরা, অর্থাৎ ইইউ-এর সদস্য হতে আ্গ্রহী পশ্চিম বলকানের দেশগুলি স্বদেশে আঞ্চলিক স্বশাসনের দাবিতে উস্কানি দিতে নারাজ৷

এসি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ