ইইউ বৈঠকে গ্রিসের সংকট ও জলবায়ু বিষয়ের প্রাধান্য
১১ ডিসেম্বর ২০০৯গ্রিসের সংকট
ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলনে নেতারা এসব ঘোষণা দিলেন৷ গ্রিসের সংকটকে অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেই এড়িয়ে যেতে চাইছেন কিছু নেতা৷ ইইউ এর সভাপতি দেশ সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডরিক রাইনফেল্ট বলেন, ''গ্রিসের সংকট তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা হওয়ায় তাদের অভ্যন্তরীণ পদক্ষেপের মাধ্যমেই এর সমাধান করতে হবে৷'' উল্লেখ্য, ফিচ রেটিঙ্গস এর তথ্য মতে, ১৬ জাতির ইউরো অঞ্চলের মধ্যে গ্রিসের ঋণের বোঝা সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে নেমে গেছে৷ এছাড়া একদিন আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জর্জ পাপান্দ্রিউও মন্তব্য করেছিলেন যে, অর্থনৈতিক সংকট তাঁর দেশের জাতীয় সার্বভৌমত্বকে হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে৷
সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান ম্যার্কেলের
অবশ্য, তাঁর সরকার এই সংকট থেকে উত্তরণ এবং গ্রিসের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে করণীয় সম্পর্কে যথেষ্ট সজাগ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন পাপান্দ্রিউ৷ তবে অ্যাথেন্সের এই সংকট গোটা ইউরো অঞ্চলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেননি ইইউ নেতারা৷ তাই গ্রিসের সংকট সমাধানে ইইউ-ভুক্ত সকল সদস্য রাষ্ট্রেরই সমান দায়িত্ব রয়েছে - এমন কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ তিনি বলেন, ''বিশেষ করে একক মুদ্রা চালু থাকার কারণে একটি দেশে যা কিছু ঘটে তা সকল দেশেই প্রভাব ফেলে৷ তাই বাজেট সংক্রান্ত বিষয়ে ইউরোপীয় স্থিতিশীলতার প্রশ্নকে গুরুত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ইউরো গোষ্ঠী একমত৷''
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিলিয়ন ইউরোর তহবিল
এদিকে, ইউরোপীয় নেতারা আবারও বিশ্ব উষ্ণায়ন মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বিলিয়ন ইউরোর তহবিলের পক্ষে সোচ্চার হলেন বৃহস্পতিবার৷ এছাড়া কোপেনহেগেনের জলবায়ু সম্মেলনে এই বিষয়ে একটি চুক্তির জন্যও চাপ সৃষ্টি করবেন তাঁরা৷ এছাড়া, ব্রাসেলস সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রায় ছয় বিলিয়ন ইউরোর অভিযোজন তহবিল গঠনের প্রতিশ্রুতি আসবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ বৃহস্পতিবার এই তহবিল গঠনে যুক্তরাজ্য ৮৮৫ মিলিয়ন ইউরো, ইইউ এর সভাপতি দেশ সুইডেন ৭৬৫ মিলিয়ন ইউরো, ডেনমার্ক, বেলজিয়াম এবং ফিনল্যান্ড প্রত্যেকে ১০০ থেকে ১৬০ মিলিয়ন ইউরো করে অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে৷
আরো কার্বন নির্গমন হ্রাসের পক্ষে ফ্রান্স
তবে জার্মানি এবং ফ্রান্স এখনও তাদের অর্থ সহায়তার পরিমাণ ঘোষণা করেনি৷ এছাড়া এই তহবিলের ব্যাপারে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে বলেন, ''আমরা এই তহবিলে এমনভাবে প্রদান করবো না যে কেউ এক্ষেত্রে নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে৷'' এদিকে, কার্বন নির্গমন হ্রাসের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় দেশসমূহের ইতিমধ্যে ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রা আরো বাড়াতে চায় ফ্রান্স৷ ব্রাসেলসে ফ্রান্সের পরিবেশ মন্ত্রী জাঁ লুই বোরলু বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে ১৯৯০ সালের তুলনায় কার্বন নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা যত দ্রুত সম্ভব ৩০ শতাংশে নিয়ে যেতে হবে ইউরোপকে৷ উল্লেখ্য, এর আগে ইইউ-এর সদস্য দেশসমূহ ২০ শতাংশ কার্বন হ্রাসের কথা ঘোষণা করেছে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী