শরণার্থী সংকট নিয়ে বুধবার ইউরোপীয় সংসদে একটি প্রস্তাব পেশ করেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জঁ-ক্লোদ ইয়ুংকার৷ তাঁর এই প্রস্তাব শরণার্থী সংকটের সমাধান করবে না বলে মনে করছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷
বিজ্ঞাপন
ইয়ুংকার তাঁর প্রস্তাবে ইটালি, গ্রিস ও হাঙ্গেরিতে থাকা প্রায় এক লক্ষ ৬০ হাজার শরণার্থীকে ইইউর বিভিন্ন দেশে সরিয়ে নিতে একমত হতে ইইউর সদস্য দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷
ইয়ুংকার তথা ইউরোপীয় কমিশনের এই প্রস্তাব সহজে বোঝা যায় রয়টার্সের এই ‘গ্রাফিক্স' থেকে৷
জার্মানির ডেয়ার স্পিগেল পত্রিকাও এ বিষয়ে একটি গ্রাফিক্স তৈরি করেছে৷ চার্লস হাওলে সেটি টুইটারে শেয়ার করেছেন৷ ঐ টুইটের নীচে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘‘ইইউ-র প্রস্তাব সমস্যার সমাধান করবেনা৷ নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করতে শুধু জ্বর একটুখানি কমালেই চলে না৷''
আরেক টুইটার ব্যবহারকারী মনে করেন, ইয়ুংকারের কোটা প্রস্তাব কিছুই নয়৷ শুধু হাঙ্গেরি সীমান্ত দিয়েই ১ লক্ষ ৬০ হাজার শরণার্থী পার হয়েছে৷
মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও মনে করে, ইউরোপীয় কমিশনের প্রস্তাব শরণার্থী সংকটের সমাধান করবে না৷
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বামপন্থি ১৩টি পত্রিকা এক চিঠিতে শরণার্থী সংকট সমাধানে ‘কার্যকর পদক্ষেপ' নিতে সরকারগুলির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে৷
ইউনিসেফ জানিয়েছে ইউরোপে যত শরণার্থী আসছে তার প্রতি চারজনের একজন শিশু৷
হিন্দুস্তান টাইমস শরণার্থী সংকটে জার্মানির ভূমিকার প্রশংসা করেছে৷
ল্যাং মেরে নিজেই ‘পড়ে’ গেলেন সাংবাদিক
চলমান শরণার্থী সংকটে নতুন সংযোজন ভিডিও ক্লিপ৷ তাতে এক টিভি সাংবাদিককে শরণার্থীদের ল্যাং মারতে দেখা গেছে৷
ছবি: Reuters/F. Bensch
লাথি ও ল্যাং
ঘৃণ্য এই কাজটিই করেছেন হাঙ্গেরির এক টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান৷ হাঙ্গেরি-সার্বিয়া সীমান্তে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে পলায়নরত শরণার্থীদের লাথি ও ল্যাং মেরেছেন তিনি৷ ছবিতে ঐ সাংবাদিকের ল্যাং খেয়ে কোলে থাকা সন্তান সহ এক বাবাকে পড়ে যাওয়া অবস্থায় দেখা যাচ্ছে৷ ভিডিও দেখতে উপরে ডানপাশে থাকা ‘আরো’ লেখায় ক্লিক করুন৷
ছবি: Reuters/M. Djurica
চাকরি শেষ
ইন্টারনেটে এ সংক্রান্ত দুটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ায় সমালোচনার মুখে মঙ্গলবারই ঐ সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করে হাঙ্গেরির এনওয়ানটিভি৷ চ্যানেলটির প্রধান সম্পাদক ঘটনাটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ ও ‘জঘন্য’ বলে আখ্যায়িত করেন৷
ছবি: Reuters/M. Djurica
প্রায় দেড় লক্ষ
হাঙ্গেরি দিয়েই সেঙগেন এলাকা শুরু হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশে যেতে শরণার্থীরা হাঙ্গেরিকে বেছে নিচ্ছেন৷ চলতি বছরে এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় লক্ষ শরণার্থী হাঙ্গেরি পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে৷
ছবি: Reuters/M. Djurica
শরণার্থীরা হুমকি?
হাঙ্গেরির ডানপন্থি সরকার মনে করে শরণার্থীরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের উন্নতি ও ‘খ্রিষ্টীয় মূল্যবোধে’-র জন্য হুমকিস্বরূপ৷
ছবি: Reuters/M. Djurica
হাঙ্গেরিতে নিবন্ধিত হতে চায় না
শরণার্থীরা হাঙ্গেরিতে যাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু সেখানে থাকতে চান না৷ তাই নিবন্ধনও হতে চান না সে দেশে৷ কারণ তাঁদের ভয়, ইইউর নিয়ম অনুযায়ী নিবন্ধিত হলে তাদের হাঙ্গেরিতেই আশ্রয় নিতে হতে পারে৷ উল্লেখ্য, ইইউর নিয়ম বলছে শরণার্থীরা ইইউর যে দেশে প্রথমে প্রবেশ করবে, রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য তাদের সে দেশেই আবেদন করতে হবে৷
ছবি: Dirk Thiele
ইয়ুংকারের জোর আহ্বান
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জ্যঁ-ক্লোদ ইয়ুংকার ইউরোপীয় সংসদে দেয়া এক বক্তৃতায় ইটালি, গ্রিস ও হাঙ্গেরিতে থাকা প্রায় এক লক্ষ ৬০ হাজার শরণার্থীকে ইইউর বিভিন্ন দেশে সরিয়ে নিতে একমত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷ আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানান তিনি৷
ছবি: Reuters/V. Kessler
ম্যার্কেলেরও একই সুর
ইউরোপীয় সংসদে যখন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান শরণার্থী গ্রহণে ইইউর সকল দেশকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন ঠিক একই সময়ে প্রায়ই একই ধরণের আহ্বান জানিয়ে জার্মান সংসদে বক্তব্য রেখেছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ তিনি শরণার্থী গ্রহণে কোটা ব্যবস্থায় রাজি হতে সব ইইউ দেশের প্রতি আহ্বান জানান৷