ইইউ সদস্যপদ পেতে আরও এগিয়ে গেল তুরস্ক
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১০বিচার বিভাগে পরিবর্তন এবং সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা কমানো – গণভোটের উদ্দেশ্য ছিল এই দুটি৷ আর এর জন্য দরকার ছিল সংবিধান সংশোধন৷ প্রাথমিক হিসেবে প্রায় ৫৮ শতাংশ ভোট পড়েছে সংবিধান সংশোধনের পক্ষে৷ পুরো ফল পাওয়া যাবে আজ সোমবার৷ ১৯৬০ সাল থেকে তুরস্কে চারটি সেনা অভ্যূত্থান হয়েছে৷ সবশেষ অভ্যূত্থানটি হয়েছিল ১৯৮০ সালে৷ সেসময় লেখা হয়েছিল সংবিধান৷ গতকাল সেই সংবিধান পরিবর্তনেরই রায় দিল তুরস্কের জনগণ৷
প্রধানমন্ত্রী রেচেপ তায়েপ এর্দোয়ান এই রায়কে ঐতিহাসিক বলেছেন৷ এর ফলে গণতন্ত্র আরও সংহত হবে বলে মনে করছেন তিনি৷ এছাড়া আইনের শাসন আরও প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও মনে করছেন তিনি৷ আর ইইউ সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রেও এই রায় সহায়ক হবে বলে আশা করছেন প্রধানমন্ত্রী৷ তবে বিরোধীরা বলছেন, বিচার বিভাগের ওপর আরও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতেই এই গণভোটের আয়োজন করেছে সরকার৷ এই রায়ের ফলে তুরস্ক অন্ধকার যুগে প্রবেশ করবে বলেই মনে করছেন তাঁরা৷
ইইউ এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে৷ বলেছে ইইউ সদস্য হতে সঠিক পথেই এগোচ্ছে তুরস্ক৷ তবে আরও বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কার আনতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইইউ কমিশনার স্টেফান ফিউলে৷ যেমন মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনের সুযোগ থাকা৷
গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে তুরস্ক ইইউ'র সদস্য হওয়ার চেষ্টা করছে৷ কিন্তু দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতি সন্তোষজনক না হওয়ায় এবং গণতন্ত্রের সংস্কার পর্যাপ্ত না হওয়ায় সেটা এখনো সম্ভব হয়নি৷ তবে তুরস্কের জনগণ যে সংস্কার চায় গতকালের রায়ে সেটা প্রমাণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ফিউলে৷
এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন তুরস্কের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভালর দিকে যেতে থাকলেও ইইউতে ঢুকতে ফ্রান্স ও জার্মানির সমর্থন পেতে হবে তুরস্ককে৷ এছাড়া সাইপ্রাসের সঙ্গেও ভাল সম্পর্ক গড়তে হবে৷ কারণ সাইপ্রাসের একটা অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে তুরস্ক৷ যেটা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷ ইইউতে ঢুকতে চাইলে তুরস্ককে এই বিতর্ক থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়