ইইউ সদস্য হওয়ার পথে আরো এগোলো ইউক্রেন
২৬ জুন ২০২৪প্রায় আড়াই বছর ধরেরাশিয়ার হামলামোকাবিলা করে চলেছে ইউক্রেন৷ সে দেশের সরকার যুদ্ধ-পরবর্তী ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে আগে থেকেই পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় করে চলেছে৷ সামরিক জোট ন্যাটোর পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের পূর্ণ সদস্যও হওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছে ইউক্রেন৷ নিজস্ব ভূখণ্ডের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ রাশিয়ার দখলে থাকায় এখনই ন্যাটো সদস্য হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না৷ তবে ইইউ সদস্য হওয়ার পথে যথেষ্ট দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে সে দেশ৷ উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ার হামলা শুরুর পরেই ইউক্রেন ইইউ-তে যোগদানের আবেদন করেছিল৷
মঙ্গলবার ইইউ কমিশন ইউক্রেন ও মলদোভার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা শুরু করলো৷ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তিন দেশ লাটভিয়া, লিথুয়েনিয়া ও এস্টোনিয়া আগেই ইইউ-তে যোগ দিয়েছে৷ এবার আরো দুটি দেশের সেই আবেদনের ভিত্তিতে জটিল প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে৷ ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে জর্জিয়াও প্রার্থী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে৷ ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস স্মিগাল বলেন, ইউক্রেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সম্পর্কের নতুন এক অধ্যায় শুরু হতে চলেছে৷
প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক' হিসেবে বর্ণনা করেন৷ তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ ইউরোপ ও সব ইউরোপীয় দেশের সাধারণ বাসার পথ থেকে ইউক্রেন কখনো বিচ্যুত হবে না৷ ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন এই সিদ্ধান্তকে ইউক্রেন, মলদোভা ও ইইউ-র মানুষের জন্য অত্যন্ত ভালো খবর হিসেবে বর্ণনা করেন৷ তাঁর মতে, চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সেই প্রক্রিয়া সুযোগে ভরা৷
আবেদন থেকে শুরু করে ইইউ-তে যোগদানের লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর প্রক্রিয়া যথেষ্ট দ্রুত গতিতে এগোলেও মূল আলোচনা বহু বছর ধরে চলবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ ইইউ-র মানদণ্ডের দিকে এগোতে ইউক্রেনকে এখনো অনেক সংস্কার চালাতে হবে৷ কঠিন সেই প্রক্রিয়ার সাফল্যের উপর পূর্ণ সদস্যপদ নির্ভর করবে৷ তাছাড়া হাঙ্গেরির মতো রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সরকার ইউক্রেনের সদস্যপদের বিরোধিতা করে যেতে পারে৷ তবে যুদ্ধের মাঝেও ইউক্রেন বেশ কিছু ‘সাহসি' সংস্কার শুরু করে প্রশংসা কুড়িয়েছে৷ ইউক্রেনের প্রধান মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উপ প্রধানমন্ত্রী ওলগা স্টেফানিশনা ২০৩০ সালের মধ্যে সব পূর্বশর্ত পূরণ করে ইইউ সদস্য হওয়ার অঙ্গীকার করেন৷ তাঁর আশা, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের শেষে ২০২৫ সালেই সদস্য হওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে ৩৫টি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে৷
বেশ কিছু বছর ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে নতুন সদস্য গ্রহণ করার প্রক্রিয়া কার্যত থেকে থাকলেও ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার পর বিষয়টি বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ বিশেষ করে বলকান অঞ্চলের পশ্চিমের দেশগুলির সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে৷ ফলে সার্বিয়া, মন্টেনেগ্রো, আলবেনিয়া ও উত্তর ম্যাসিডোনিয়াও কোনো এক সময়ে পূর্ণ সদস্য হয়ে উঠবে বলে আশা দেখা দিচ্ছে৷
এসবি/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)