
ওয়াশিংটন ডিসির ১৩০০ পেনসিলভেনিয়া অ্যাভিনিউতে অভিজাত অফিসপাড়ার এই সেন্টারের অ্যানেক্স ভবনে তার অফিস৷
এটি ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বা ইউএসএআইডির সদর দফতর৷ গত ছয় বছর ধরে সেখানে একটি কিউবিকলসে বসে কাজ করে আসছিলেন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সিনিয়র কনসালট্যান্ট নাসিরুজ্জামান৷
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টানা ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা তার এই আন্তর্জাতিক সেবামূলক সংস্থাটির সাথে৷ ইউএসএআইডি তাকে দিয়েছে অনেক কিছু৷ আর তিনিও মনেপ্রাণে ভালোবেসে কাজ করে আসছিলেন সংস্থাটির সাথে৷ কিন্তু সেদিন সকালে কেড়ে নেওয়া হলো সব কিছু৷ তার ভাষায় ‘এ যেন সুনামির মতো এসে সব ভাসিয়ে নিয়ে গেলো৷'
প্রথম ধাক্কাটি পান যখন প্রবেশ পথে স্ক্যানার তার আইডিকার্ডটি রিজেক্ট করে৷ কারিগরি ত্রুটি ভেবে যখন অন্য কারো সাহায্য নেওয়ার অপেক্ষা করছিলেন ততক্ষণে আরও অনেকেই অফিসে পৌঁছে যান৷ এবং তারাও দেখতে পান তাদের কার্ডও কাজ করছে না৷ একপাশে সরে গিয়ে অফিসের যে কম্পিউটারটি ব্যবহার করে আসছিলেন নাসিরুজ্জামান সেটি খোলার চেষ্টা করে দেখলেন সেটিও কাজ করছে না৷ একজন জানালেন, ইমেইলে তিনি একটি টারমিনেশন লেটার পেয়েছেন৷ ততক্ষণে কারোরই বুঝার বাকি থাকলো না যে মূলত কারোরই আর চাকরি নেই৷ নাসিরুজ্জামানের টারমিনেশন লেটারটি তার ব্যক্তিগত ইমেইলে আসে সেদিন দুপুর নাগাদ৷
‘‘কেউ কেউ কান্না জুড়ে দিলো, সকলের মুখেই হতাশা আর সকলেই মর্মাহত, এই ছিলো সেই সকালের চিত্র,'' বললেন নাসিরুজ্জামান৷
‘‘আমি না হয় অবসরে যাওয়ার কাছাকাছি, কিন্তু যারা চাকরি হারালো তাদের কারো কারো ক্যারিয়ারের শুরু, কেউ মধ্য ক্যারিয়ারে, কেউ হয়তো আরও কিছু বছর কাজ করতে পারতেন৷ কিন্তু সকলেই সকাল বেলা এসে জানলেন তাদের চাকরি নেই৷ আগের রাতেও কেউ কিছু জানতে পারেন নি৷ একজনতো ছিলেন, যিনি মাত্র একদিন আগে বিল গেটস ফাউন্ডেশন থেকে চাকরি ছেড়ে ইউএসএআইডিতে যোগ দিয়েছিলেন৷ সোমবার যোগ দিয়ে মঙ্গলবারই তিনি জানলেন তার চাকরি নেই৷ আর কেবল চাকরি নেই তা-ই নয়, এরা কেউ পাবেন না সামান্য বেনিফিটটুকুও, হেলথ ইন্সুরেন্স বন্ধ৷ কারণ তাদের প্রায় সকলেরই ‘কন্ট্রাকচুয়াল জব'৷ এ যেনো সকলের জীবনে এক সুনামির আঘাত৷''
সুনামি যে কেবল সদরদফতরে আঘাত হেনেছে তা নয়৷ সকলেরই জানা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে এরই মধ্যে বিশ্বের ৯০টি দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইউএসএআইডির সকল কার্যক্রম৷
টেলিফোনে কথা হচ্ছিলো বাংলাদেশের সিসিমপুরের একজন ঊর্ধ্বতনের সাথে৷ মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সিসিম স্ট্রিটের একটি স্থানীয় কার্যক্রম হলেও দেশে শিশুদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় সিসিমপুরের প্রায় সকল প্রকল্পই পরিচালিত হয় দাতা সংস্থা ইউএসএআইডির অর্থায়নে৷ নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানালেন, তাদের আপাতত বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ আর প্রকল্পগুলো আর কখনোই চালু হবে কি না সে বিষয়ে তারা অনিশ্চিত৷
এ ব্যাপারটিতে নাসিরুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফের চালু হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই তিনি দেখতে পান না৷ আরও জানালেন, মূলত বিশ্বের ৯০টি দেশের সকল প্রকল্পের সকল অর্থায়নই ফ্রিজড করা হয়েছে৷ কোনো প্রকল্পের অর্থ যদি যে কোনো দেশে পাঠানো হয়ে গিয়েও থাকে, সে অর্থ তারা আর খরচ করতে পারবে না৷ নির্বাহী আদেশের পর আর যাতে একটি পেনিও খরচ না হয়, সেটিই নিশ্চিত করা হয়েছে৷ এমনকি সদর দফতরেও এরই মধ্যে বরাদ্দ ও সরবরাহকৃত সকল অর্থই ফেরত দিতে বলা হয়েছে৷
আরও জানালেন, আগের সপ্তাহে তাদের কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতনদের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিলো যে ২০২৬ সাল পর্যন্ত প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দ তাদের হাতে রয়েছে৷ অতএব সেই সময় পর্যন্ত তাদের কারো কোনো সমস্যা হবে না৷ কিন্তু মঙ্গলবার সকালে তারা সকলেই দেখলেন সে আশ্বাস মিথ্যা প্রমাণিত৷
সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউএসএআইডির কর্মীদের ঢালাওভাবে ‘চরমপন্থি পাগল' (রেডিক্যাল লুনাটিকস) বলে উল্লেখ করেছেন৷ ‘‘সংস্থাটি পরিচালিত হয়ে আসছে একগাদা চরমপন্থি পাগলের হাতে, এবং আমরা তাদের থেকে বেরিয়ে আসছি,'' বলেন ট্রাম্প৷
বিষয়টি যেনো নিতেই পারছেন না মোহাম্মদ নাসিরুজ্জামান৷ বললেন, একেতো চাকরি হারা৷ তায় এমন সব কটু কথা বলা হচ্ছে আমাদের বিষয়ে যে মেনে নেওয়ার মতো নয়৷ বিশ্বের ৫০টি দেশে ঘুরেছেন এই ইউএসএআইডি কর্মী৷ তিনি বলেন, ‘‘কোনো দেশে এমনি ঘুরতে যাওয়া আর ইউএসএআইডির কাজ নিয়ে যাওয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে৷ আমরা যেতাম সেই সব স্থানেই যেখানে সুবিধাবঞ্চিত অসহায়দের বসবাস৷ ফলে এসব বিদেশ যাত্রা এবং প্রকল্প এলাকাগুলো পরিদর্শন অতটা সহজ কাজ ছিলো না৷ মানুষের অসহায়ত্ব দেখে এসে তবেই আমরা তাদের জন্য সহায়তার পরিকল্পনা করতাম৷ সুতরাং আমাদের ‘পাগল' বলাটা মোটেই সমীচিন নয়৷''
ট্রাম্প প্রশাসন শুরু থেকেই বলে আসছে যুক্তরাষ্ট্র বহির্বিশ্বে তার সহায়তা কার্যক্রমে একটা শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চায় এবং একই সঙ্গে এই খাতে সরকারের ব্যয়ও কমিয়ে আনবে৷
কিন্তু এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে কতটুকু কী প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে সেটাই এখন হয়ে উঠেছে মুখ্য আলোচনার বিষয়৷ বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা খাতে এর প্রভাব খুব মারাত্মক আকারেই পড়বে বলে মত দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷
১৯৬১ সালে যাত্রা শুরু করে ৬৪ বছর ধরে ইউএসএআইডি বিশ্বের দেশে দেশে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে আসছে৷ তার কর্মসূচিগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা ছাড়াও শিক্ষা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দুর্যোগ সহায়তা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নও রয়েছে৷ বিশেষ করে এইচআইভি/এইডস, ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, ইবোলা ভাইরাসের মতো মরণঘাতি রোগ প্রতিরোধে একটা বড় ভূমিকা পালন করে আসছে৷ এছাড়াও রয়েছে শিশুস্বাস্থ্য, মাতৃসেবা, পুষ্টি ও নিরাপদ পানি সরবরাহে বড় বড় কর্মসূচি৷ যার সবগুলোই এখন নতুন করে সংকটে পড়েছে৷
আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধ কর্মসূচিতে সরাসরি কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে নাসিরুজ্জামানের৷ তিনি বলেন, এই রোগ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে৷ কিন্তু তার জন্য প্রতিটি রোগীর নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হয়৷ যা সরবরাহই করা হয় ইউএসএআইডি কর্মসূচির মধ্য দিয়ে৷ ওই রোগীদের এখন কী হবে? এতে এইচআইভি/এইডস আবারও মারাত্মক রূপ নিতে পারে বলেই ধারণা এই বিশেষজ্ঞের৷
জাম্বিয়া, নাইজেরিয়া, হাইতি, মোজাম্বিকের মতো দেশগুলোতে এর চরম প্রভাব পড়তে পারে বলেও জানান তিনি৷ এরই মধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ সংক্রান্ত যেসব প্রতিবেদন বেরিয়েছে তাতেও সংকটটি একইভাবে দেখানো হচ্ছে৷ বিশেষ করে শিশুদের এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে এমনটা মনে করছেন অনেকেই৷
‘‘একটি শিশু জন্ম নেওয়ার পর তার ডায়াগনস্টিক টেস্ট করা হয়৷ আর তাতে যদি এইচআইভি পজিটিভ ধরা পড়ে তাকে রেট্রোভাইরালস দিয়ে চিকিৎসা করা হয়৷ কিন্তু আপনি কিভাবেই সে চিকিৎসা করবেন যদি রেট্রোভাইরালসই না থাকে৷ কিংবা কিভাবেই জানবেন যদি ওই টেস্ট করার কিটসটাই না পাওয়া যায়,'' একটি সংবাদে এভাবেই একজন ইউএসএআইডি কর্মীকে উদ্ধৃত করা হয়েছে৷
অপর এক প্রতিবেদনে এইচআইভি অ্যাডভোকেসি গ্রুপ হেলথ গ্যাপ'র নির্বাহী পরিচালক এশিয়া রাসেলকে উদ্ধৃত করা হয়েছে৷ তিনি বলেছেন, ‘‘ট্রাম্প প্রশাসন কোটি কোটি মানুষের জীবন নিয়ে খেলায় মেতেছে৷''
ম্যালেরিয়া প্রতিরোধেও ইউএসএআইডির বড় ভূমিকা রয়েছে দশকের পর দশক ধরে৷ নাইজেরিয়া, তানজেনিয়া, উগান্ডার মতো দেশগুলোয় এই রোগের হার প্রকট ৷ সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ হওয়ায় যা আবার মহামারি হয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে৷
বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে কেনিয়া, কঙ্গো, ইথিওপিয়া, জর্ডান, ভারতের মতো আরো কয়েক ডজন দেশে কর্মসূচি রয়েছে ইউএসএআইডির৷ একটি হিসাব দেখাচ্ছে বিশ্বের প্রায় ৪০০ কোটি মানুষই বিশুদ্ধ নিরাপদ পানি থেকে বঞ্চিত৷ এ সংকট মোকাবেলায় ইউএসএআইডি একটা বড় ভূমিকা পালন করে আসছে৷ সেই নিরাপদ পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে নতুন সিদ্ধান্তের কারণে৷ যা অনেক মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে, মানুষ হয়ে পড়বে বাস্তুচুত৷
কেনিয়ায় নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে মোহাম্মদ নাসিরুজ্জামান বলেন, ‘‘আমি এমন একটি গ্রাম দেখে এসেছি যেখানে সামান্য খাবার পানি সংগ্রহে ৬ কিলোমিটার পথ হেঁটে যেতে হয় নারীদের৷ আবার পানি নিয়ে ৬ কিলোমিটার হেঁটে ফিরতে হয়৷ একেতো এসব অঞ্চলে নলকূপ বসানো কষ্টসাধ্য৷ আর তা ব্যয়বহুলও৷ যা ইউএসএআইডি করে আসছে৷ এখন ফান্ডিং বন্ধ হলে এসব অঞ্চলের লাখো মানুষ নিরাপদ পানির অভাবে পড়বে৷ যা তাদের জীবনে ডেকে আনবে বড় দুর্ভোগ৷''
স্বাস্থ্য সহায়তা ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে আসছে ইউএসএআইডি, সেটা হুমকির মুখে৷ বিশেষ করে শিশুশিক্ষা শিশুদের জীবন গড়ার বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে এই সংস্থার অর্থায়নে৷
বাংলাদেশে সিসিমপুরের মতো অত্যন্ত জনপ্রিয় কর্মসূচি আজ বন্ধের পথে৷ যা কেবল কয়েকজন কর্মীর চাকরিচ্যুতির বিষয় নয়, সার্বিকভাবে শিশুর বিকাশেও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন সেখানকার কর্মকর্তারা৷
ইউক্রেনের ১৪টি অঞ্চলের স্কুল ও হাসপাতালগুলো ব্যাকআপ হিটিং সিস্টেম চালু ছিলো যা আর থাকবে না৷ অব্যহত রুশ হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যবস্থা অতীব জরুরি সত্ত্বেও তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে৷
কলম্বিয়ায় ইউএসএআইডির অর্থায়নে মাদকবিরোধী কর্মসূচি, খাদ্যসহায়তা কর্মসূচি আর বনাঞ্চল উজার বিরোধী কর্মসূচি চলতো৷ কলোম্বিয়া ও ভেনেজুয়েলা সীমান্তে মাদক পাচারের ভয়াবহতা আবার বেড়ে যাবে এই সিদ্ধান্তে, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা৷
আফগানিস্তানে ১ লাখ ৪৫ হাজার বিপন্ন নারীর জন্য নিরাপদ আবাসন, মানসিক স্বাস্থ্য কর্মসূচি, স্বাস্থ্যসেবা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে৷ আর সে সিদ্ধান্ত এমনই সময় এলো যখন দেশটিতে তালিবান শাসক নারীদের ওপর আরও অত্যাচারি আরও আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ৷
ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব ভলান্টারি এজেন্সিজ এর একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে শিক্ষা কর্মসূচি, স্বাস্থ্যসেবা ও নারীর ক্ষমতায়ন কর্মসূচি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই সিদ্ধান্তে৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম গেব্রেউস বলেছেন, এইসব দেশে ইউএসএআইডির কার্যক্রম বন্ধে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনবে৷
মেডিসিনস স্যান ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ), গ্লোবাল ফান্ড ফর ফাইট এইডস, টিউবারকিউলোসিস অ্যান্ড ম্যালেরিয়ার পক্ষ থেকেও একই ধরনের হুসিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে৷ তারা বলেছে, বিশ্বের যেসব অঞ্চলে সংঘাত, দারিদ্র্য ও দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিরাজমান সেখানে এর প্রভাব হবে মারাত্মক৷
আর নাসিরুজ্জামানের প্রশ্ন, খোদ যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেও এর প্রভাব কি কম হবে? এই যে মানুষগুলো হঠাৎ চাকরিচ্যুত হলেন, তাদের এখন কি হবে?
বললেন এক নারী সহকর্মীর কথা৷ একমাসে আগে তিনি মা হয়েছেন৷ মাতৃত্বকালীন ছুটির মাঝেই জানতে পারলেন তার চাকরি নেই৷ সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিমাও বাতিল৷ ‘‘আমার বাচ্চাটির এখন কী হবে?'' সেই আকুতি করে লেখা টেক্সট মেসেজ এসেছে আমার কাছে, বলেন নাসিরুজ্জামান৷
‘‘আর অন্যের কথা কি বলবো, আমার নিজেরই তো এখন স্বাস্থ্য বিমা নেই৷ সত্তরোর্ধ্ব বয়সে আজ অসুস্থ হয়ে পড়লে আমার চিকিৎসাইতো হয়ে পড়বে অনিশ্চিত,'' বলেন ইউএসএআইডির তিন দশকের এই নিবেদিতপ্রাণ কর্মী৷