ইউক্রেনকে ভারি অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে জার্মানিতে বিতর্ক
১৯ এপ্রিল ২০২২রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেনকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিচ্ছে যে সব দেশ, তার প্রথম সারিতেই রয়েছে জার্মানি৷ অথচ ‘যথেষ্ট' সাহায্য না করার জন্য ইউক্রেনসহ একাধিক দেশ, এমনকি অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ছে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সরকার৷ জার্মান প্রতিরক্ষা নীতির আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েও সেই ক্ষোভ দূর করতে পারছেন না শলৎস৷ ইউক্রেনকে আরও ভারি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য সরকারের উপর চাপ বাড়ছে৷ জার্মানি তথা ন্যাটোকে যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে ফেলতে চান না শলৎস৷ তাই আরও অস্ত্রের বদলে ইউক্রেনের অস্ত্র কেনার জন্য বিশাল আর্থিক সহায়তার উদ্যোগ নিচ্ছেন তিনি৷
এমনই প্রেক্ষাপটে জার্মানির আইনমন্ত্রী মার্কো বুশমান বলেছেন, ইউক্রেনকে সাঁজোয়া গাড়ির মতো ভারি সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করলে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সেই পদক্ষেপ মোটেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার সমান হবে না৷ তার মতে, ইউক্রেনের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে৷ ফলে সে দেশকে অস্ত্র সরবরাহ করা আইনসিদ্ধ৷ তিনি বলেন, এটাই জার্মান সরকারের অবস্থান৷
জার্মানির সরকার এখনো এমন ‘সাহসি' সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধায় ভুগলেও সংসদের নিম্ন কক্ষে প্রধান বিরোধী ইউনিয়ন শিবির এই মর্মে নিজস্ব প্রস্তাব এনে সরকারকে চাপে ফেলার কথা ভাবছে৷ রক্ষণশীল সিডিইউ ও সিএসইউ সংসদীয় দলের উপ প্রধান ইওহান ভাডেফুল এক টুইট বার্তায় এই সংকটের সময়ে জার্মান সরকারকে সহায়তার ইচ্ছা প্রকাশ করেন৷ কিন্তু শলৎস অস্ত্র সরবরাহের প্রশ্নে অগ্রসর না হলে তিনি নিজস্ব উদ্যোগের ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের মতো জার্মানিরও উন্নত অস্ত্র সরবরাহ এবং সেগুলি ব্যবহার করতে ইউক্রেনের সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত বলে ভাডেফুল মনে করেন৷ তার মতে, আরও নিরীহ মানুষের হত্যার আগে শলৎসের অবস্থান বদল করা উচিত৷
সরকারি জোটের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে মতপার্থক্য প্রকট হয়ে উঠছে৷ বিশেষ করে উদারপন্থি এফডিপি ও পরিবেশবাদী সবুজ দলের কয়েকজন নেতা ইউক্রেনের জন্য আরও সহায়তার পক্ষে সরব হয়ে উঠছেন৷ সবুজ দলের রাজনীতিক আন্টন হোফরাইটার বলেন, জার্মান সরকার বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করলে ইউক্রেনের এই মুহূর্তে তেমন লাভ হবে না৷ সে দেশকে দ্রুত প্রয়োজনীয় অস্ত্র সরবরাহ করা উচিত৷যুদ্ধের সময় ট্যাংকের মতো ভারি অস্ত্র সরবরাহের ঝুঁকি নিয়েও সংশয় দেখা দিচ্ছে৷ সহজেই সেগুলি শনাক্ত করে রাশিয়া সরাসরি এমন বহরের উপর হামলা চালাতে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন কিছু বিশেষজ্ঞ৷ এরই মধ্যে অ্যামেরিকার পাঠানো প্রথম দফার ভারি অস্ত্র চারটি বিমানের মাধ্যমে ইউক্রেন সীমান্তে এসে পৌঁছেছে৷ ওয়াশিংটন ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা বাবদ বাড়তি আট কোটি ইউরো বরাদ্দ করেছে৷ তার আওতায় এই সব অস্ত্র পাঠানো হচ্ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)