রিপাবলিকানরা হাউসে ১০ হাজার কোটি ডলারের প্যাকেজ আটকে দিয়েছে। ইউক্রেনকে সাহায্য করার অর্থ নেই বাইডেনের।
বিজ্ঞাপন
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ''কংগ্রেস যদি দ্রুত এই প্যাকেজ অনুমোদন না করে, তাহলে রাশিয়া লাভবান হবে।''
হোয়াইট হাউস বলেছে, ''সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে, আমাদের হাতে ইউক্রেনকে সাহায্য করার মতো অর্থও আর নেই। কংগ্রেস যদি প্যাকেজ অনুমোদন না করে, তাহলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ইউক্রেনকে সাহায্য করা যাবে না।''
গত অক্টোবরে বাইডেন প্রশাসন কংগ্রেসকে ১০ হাজার কোটি ডলারের প্যাকেজ অনুমোদন করতে বলে। এর থেকে ইউক্রেন ও ইসরায়েলকে সাহায্য করার কথা ছিল। কিন্তু হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে এখন রিপাবনিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তারা এই অনুমোদন দেয়নি।
সোমবার হাউসের স্পিকারকে চিঠি লিখেছেন জো বাইডেনের বাজেট ডিরেক্টর। তিনি লিখেছেন, ''আমাদের হাতে কোনো জাদুর ঘড়া নেই, যা দিয়ে আমরা পরিস্থিতি সামলাতে পারি। আমাদের হাতে কোনো অর্থ নেই। আর আমাদের হাতে সময়ও নেই।''
যুদ্ধে অঙ্গ হারিয়েও কাজে ব্যস্ত যে সৈনিকরা
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর একদল সৈনিকের কাজ ল্যান্ডমাইন খুঁজে বের করা৷ যুদ্ধে অঙ্গ হারিয়েও এই কাজ করে যাচ্ছেন তারা৷
ছবি: Sofiia Gatilova/REUTERS
স্যাপার সৈনিক
যে সৈনিক যুদ্ধের সময়ে সেতু বানানোর বা ল্যান্ডমাইন চিহ্নিত করার কাজ করেন, তাদের বলা হয় স্যাপার৷ ইউক্রেনের জাতীয় পুলিশের বিশেষ ‘ডিমাইনিং ইউনিটের’ সদস্য অলেকজি পলিয়াকোভকে দেখা যাচ্ছে ছবিতে৷ ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলের ইজুম শহরের একটি মাঠ থেকে মাইন সরাচ্ছেন তিনি৷ যুদ্ধে বোমা বিস্ফোরণে উড়ে গেছে তার পা৷
ছবি: Sofiia Gatilova/REUTERS
কেন এই কাজ করেন তারা
২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর ইউক্রেন সেনাবাহিনী থেকে তৈরি করা হয় এই ইউনিট৷ তাদের মূল কাজ যুদ্ধরত সৈনিকদের ল্যান্ডমাইন থেকে বাঁচাবার পাশাপাশি সাধারণ জনগণের বসবাসের এলাকা থেকেও মাইন সরানো৷
ছবি: Sofiia Gatilova/REUTERS
কৃত্রিম পা নিয়ে
৩৭ বছর বয়সি আন্দ্রেই ইলকিভ গত বছর এই খারকিভ অঞ্চলেই আরেকটি জায়গায় মাইন ফেটে নিজের বাঁ পাটি হারান৷ তবুও আবার কাজে ফিরেছেন তিনি৷ তার স্ত্রীকে কথা দিয়েছেন যে মানবতার খাতিরে তাকে ফিরে যেতে হবেই৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে ইলকিভের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা তার নতুন প্রস্থেটিক পা৷
ছবি: Sofiia Gatilova/REUTERS
কাজে অনড় ভালেরি
২০২২ সালের নভেম্বরে একইভাবে জখম হন ভালেরি ওনুল৷ বিস্ফোরণের পর তিনি জানতে পারলেন যে আন্দ্রির মতো পা হারিয়েছেন তিনি৷ সেই মুহূর্তেই তিনি ঠিক করেন যে কাজে ফিরে আসবেন৷ ভালেরি বলেন, ‘‘আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷ আমার মাথায় অনেক চিন্তা ভিড় করছিল৷ যখন জ্ঞান ফিরল, জানতাম যে আমাকে আবার কাজে যেতে হবে৷’’
ছবি: Sofiia Gatilova/REUTERS
কতটা কঠিন এই কাজ
আন্দ্রি জানান, ঠিক যে মাইন ফেটে তিনি জখম হয়েছিলেন, সেই দিনের কাজ ছিল খুব কঠিন৷ মাটির অনেকটা গভীরে লুকিয়ে রাখা ছিল ল্যান্ডমাইন৷ খুব ঠাহর করে না দেখলে বোঝা অসম্ভব, বলেন তিনি৷ বর্তমানে এই ডিমাইনিং ইউনিট কাজ করছে ইউক্রেনের খারকিভ ও খেরসন অঞ্চলে৷
ছবি: Sofiia Gatilova/REUTERS
5 ছবি1 | 5
তিনি জানিয়েছেন, ''যদি কংগ্রেস ওই প্য়াকেজে অনুমোদন না করে, তাহলে এই বছরের শেষে আমাদের হাতে কোনো অর্থ থাকবে না, যা দিয়ে আমরা ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র বা যন্ত্রপাতি কিনতে পারি। আর এই অস্ত্র ও সাহায্য না পেলে ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে লড়তে পারবে না। তারা যেটুতু লাভ করেছে, তাও নষ্ট হবে।''
তিনি সংবাদিকদের বলেছেন, ''কংগ্রেসকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা ইউক্রেনের স্বাধীনতার লড়াইয়ে সাহায্য করবে, নাকি পুটিনের লাভ দেখবে।''
স্পিকারের জবাব
হাউসের স্পিকার মাইক জনসন হোয়াইট হাউসের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট করেছেন।। তিনি বলেছেন, ''বাইডেন প্রশাসনের ইউক্রেন নিয়ে কোনো স্পষ্ট কৌশল নেই। এই বিরোধ মেটানোর পথ কী, মার্কিন করদাতার অর্থ দিয়ে যে সাহায্য করা হচ্ছে, তা খরচ করার পরিকল্পনা কোথায়, এর জন্য কে দায়বদ্ধ থাকবে? এ সবই হলো ন্যায্য প্রশ্ন।''
ইউক্রেনে আতঙ্কের নগরীতে সুরের মূর্ছনা
যুদ্ধ চলছে একদিকে, অন্যদিকে রাতের আঁধারে মোমবাতি জ্বালিয়েও ধ্রুপদী সংগীতের সুরে বাঁচার আনন্দ নিচ্ছেন অসংখ্য মানুষ৷ লভিভে প্রায় প্রতিদিনের এমন এক আয়োজনের কথা জানুন ছবিঘরে...
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
আকাশে যুদ্ধবিমান, নীচে কনসার্ট
ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভের আকাশে যখন যুদ্ধবিমান আতঙ্ক ছড়ায়, তখনো অর্গান হলে থাকে সুরপাগল মানুষদের ভিড়৷ মগ্ন হয়ে লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক অর্কেস্ট্রার পারফর্ম্যান্স উপভোগ করেন তারা৷ অনেক সময় মোমের আলোয় চলে কনসার্ট৷ শ্রোতারা মোমের আলোয় এতটাই অভ্যস্ত যে মাঝে মাঝে যুদ্ধবিমান ফিরে গেলে, কিংবা বিদ্যুৎ ফিরে এলেও আলো জ্বালাতে চান না তারা৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
কম আয়, অনেক বেশি আনন্দ
যুদ্ধপরিস্থিতিতে কনসার্ট আয়োজনে প্রতিকূলতা অনেক৷ মৃত্যুঝুঁকি তো থাকেই, কনসার্ট আয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত টাকাও জোটে না৷ অথচ ঝুঁকি নিয়ে সংগীত উপভোগ করতে আসা অনেকেই চান দীর্ঘক্ষণ চলুক কনসার্ট, আবার কবে আসা হবে, আদৌ সে সুযোগ আর হবে কিনা তার তো ঠিক নেই!
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
আনন্দটাই বড় বিষয়
লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক অর্কেস্ট্রার কো-ডিরেক্টর টারাস ডেমকো মনে করেন যুদ্ধের সময় মানুষকে সামান্য আনন্দে রাখাও অনেক বড় ব্যাপার৷ রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়া একটানা সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে৷ এ অবস্থায় মানুষকে তো আমাদের সহায়তা করতে হবে৷ প্রতিদিন কয়েক মিনিটের জন্যও যদি তাদের মনে একটু শান্তি দেয়া যায় তা-ও তো অনেক!’’
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
যুদ্ধের পর যুদ্ধ
১৯১৫ সাল পর্যন্ত লুহানস্কে পারফর্ম করেছে লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক৷ রুশ-সমর্থিত ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীরা’ লুহানস্ক দখল করে নেয়ার পর ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের ছোট্ট শহর সিভিয়েদনেৎস্কে চলে যায় তারা৷ গত বছর রুশ হামলায় সিভিয়েরদনেৎস্কও বিদ্ধস্ত হয়৷ তখন বাধ্য হয়েই লভিভে চলে আসে লুহান্স্ক ফিলহার্মোনিক৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
‘সংগীত আত্মবিশ্বাস জোগায়’
লভিভে কনসার্ট করতে পেরে লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক অর্কেস্ট্রার পরিচালক ইগর শাপোভালভ খুব খুশি৷তিনি মনে করেন কনসার্ট আয়োজন করে যুদ্ধের কারণে বিপর্যস্ত অনেক মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছেন, কারণ, ‘‘প্রাচীন কাল থেকে সংগীত মানুষকে নানাভাবে শক্তি জুগিয়ে আসছে৷ সংগীত অনেক মানুষকে আত্মবিশ্বাস জোগায়, অনেকের কাছে আবার সংগীত মানসিক দুরবস্থা কাটিয়ে ওঠার উপায়৷’’
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
হামলা হলে কনসার্ট বন্ধ
লভিভে রাশিয়ার বড় ধরনের হামলা খুব কম হয়েছে৷ তাই এখন কনসার্ট হচ্ছে প্রায় নিয়মিত৷ জুলাই মাসে রাশিয়ার এক হামলায় ১০ জন মারা যায়৷ ওই সময় বাধ্য হয়ে কনসার্ট বন্ধ রেখেছিল লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
6 ছবি1 | 6
তিনি আরো লিখেছেন, ''জাতীয় সুরক্ষা নিয়ে যদি কোনো বাড়তি প্যাকেজ দিতে হয়, তাহলে তা অ্যামেরিকার সীমান্ত থেকে শুরু হওয়া দরকার।''
সেনেটের রিপাবলিকান নেতা ম্যাকনেল জানিয়েছেন, ''এটা নিয়ে আলোচনা হতেই পারে।''
রিপাবলিকানরা বলছেন, মার্কিন সীমান্তের নিরাপত্তা, অভিবাসীদের বিষয়টি বাইডেনকে স্পষ্ট করতে হবে।