ইউক্রেনের জন্য আরো অস্ত্র পাঠাবে ইইউ
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪![মোল্ডাউয়েন | ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি, মোল্দোভার প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্ডু, ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি চার্লস মিশেল, সাইপ্রাসের প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি নিকোস ক্রিস্টোডৌলিদেস, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান ১ জুন, ২০২৩-এ বুলবোকাতে ইউরোপীয় রাজনৈতিক সম্প্রদায় শীর্ষ সম্মেলনের সময় একটি পরিবারের ছবির জন্য পোজ। মোল্দোভা বৃহত্তর ইউরোপের প্রথম প্রধান শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করছে, যেখানে ২০টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমস্ত দেশের নেতাদের একত্রিত করা হয়েছে। ব্লকের প্রতিবেশীদের মধ্যে মোল্দোভা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইইউ সদস্যপদ চায় কারণ এটি রাশিয়ার কাছ থেকে যে কোনও সম্ভাব্য হুমকির বিরুদ্ধে সুরক্ষা চায়।](https://static.dw.com/image/68091979_800.webp)
বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলনের শুরুতেই হাঙ্গেরি আপত্তি তুলে নেওয়ায় ইউক্রেনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক সাহায্যের পথে বাধা দূর হয়েছে৷ এবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনুমোদন পেলেই যত দ্রুত সম্ভব সে দেশকে অর্থ দেওয়া যাবে৷ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি সেই সিদ্ধান্তের পর স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, এই পদক্ষেপ রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্পষ্ট সংকেত পাঠাচ্ছে৷ রাতের ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ক্রেমলিনের যাবতীয় প্রচেষ্টা বানচাল করে ইউরোপ যে ইউক্রেনের পাশে থাকছে, তা স্পষ্ট হয়ে গেল৷ অন্যদিকে অ্যাটলান্টিকের অপর প্রান্তেও একটা স্পষ্ট বার্তা চলে গেল৷ ইউরোপ তার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে৷ জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন এবার অ্যামেরিকার সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছে৷ উল্লেখ্য, মার্কিন কংগ্রসে রাজনৈতিক জটিলতার কারণে ইউক্রেনের জন্য অ্যামেরিকার সহায়তা নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে৷
প্রায় দুই বছর ধরে রাশিয়ার একটানা হামলার মুখে অর্থনীতি ও সরকারি বাজেটের বেহাল অবস্থা সামাল দিতে ইউক্রেন বিদেশ থেকে সাহায্যের উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে৷ ২০২২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি সেই হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৭,৩৬০ কোটি ডলার অংকের আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তা পেয়েছে৷ এর মধ্যে ইইউ ২,৭৫০ কোটি ইউরো দিয়েছে৷ চলতি বছরের বাজেট ঘাটতি মেটাতে ইউক্রেন অ্যামেরিকা থেকে প্রায় ৩,৭০০ কোটি ডলার অংকের সহায়তার জন্য অপেক্ষা করছে৷ ইউক্রেনের উপ প্রধানমন্ত্রী ইয়ুলিয়া স্ভিরিডেংকো সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন৷
আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি রাশিয়ার হামলার মোকাবিলা করতে অস্ত্র ও গোলাবারুদের জন্যও ইউক্রেন আন্তর্জাতিক সহায়তার উপর নির্ভরশীল৷ ইদানীং সেই সরবরাহ কমে যাওয়ায় সে দেশ কঠিন সমস্যার মুখে পড়েছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ইইউ দেশগুলি থেকে আরো অস্ত্র সরবরাহের উদ্যোগ নিচ্ছেন৷ বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ইতিবাচক সাড়া পেয়ে তিনি সন্তুষ্ট৷ তবে তাঁর মতে, ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার গতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ চলতি বছরের প্রথম দিকেই এই উপলব্ধিতে আসতে হবে, যে সে দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা কতটা জরুরি৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে সেই বার্তাই পাঠানো হচ্ছে৷ উল্লেখ্য, অ্যামেরিকার পরেই জার্মানি ইউক্রেনকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করেছে৷ শুধু চলতি বছরেই ৭০০ কোটি ইউরোও বেশি অংকের অস্ত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ শলৎস মনে করেন, ইউক্রেনের জন্য ইউরোপের সামরিক সহায়তা ওয়াশিংটনের কাছেও ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেবে৷ সে ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পক্ষে কংগ্রেসের সম্মতি আদায় করতে সুবিধা হবে৷
জার্মান চ্যান্সেলর ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে ইইউ-র অন্যান্য দেশের সতর্ক মনোভাব সম্পর্কে অভিযোগ করেছিলেন৷ বিশেষ করে ফ্রান্স, ইটালি ও স্পেনের ভূমিকা নিয়ে তিনি অসন্তুষ্ট৷ এবারের ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে সেই মনোভাবে কিছু পরিবর্তনের আশা করা হচ্ছে৷ ইইউ পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, চলতি বছরে ইউক্রেন ইইউ থেকে ২,১০০ কোটি ইউরো মূল্যের সামরিক সহায়তার আশা করতে পারে৷ তাঁর মতে, এখনো পর্যন্ত তিনি যে সব দেশের কাছ থেকে এই মর্মে অঙ্গীকার পেয়েছেন, তার ভিত্তিতে তিনি এমন পূর্বাভাস দিচ্ছেন৷ তবে কোন কোন দেশ এখনো এ বিষয়ে মনস্থির করে নি, সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেন নি৷
এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)