মারিউপলে একটি প্রেক্ষাগৃহে রাশিয়া বোমাবর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। বহু মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
বিজ্ঞাপন
ফের সাধারণ মানুষের উপর হামলার অভিযোগ উঠল রাশিয়ার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে ইউক্রেন অভিযোগ করে, মারিউপলে একটি থিয়েটারে বোমাবর্ষণ করেছে রাশিয়ার বোমারু বিমান। ওই থিয়েটার হলে প্রায় এক হাজার দুইশ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে ইউক্রেনের দাবি। যদিও এখনো পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ধ্বংসস্তূপ পর্যন্ত এখনো কোনো সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি বা প্রশাসনের প্রতিনিধি পৌঁছাতেই পারেননি। রাশিয়া সেখানে লাগাতার বোমাবর্ষণ করছে বলে অভিযোগ।
ইউক্রেনের গৃহহীন শিশুদের কথা
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে দেশ ছেড়েছে অন্তত লাখ লাখ মানুষ৷ তাদের মধ্যে নারী আর শিশুই বেশি৷ ছবিঘরে দেখে নিন এমন কিছু শিশুর ছবি আর জানুন তাদের কথা৷
ছবি: KAI PFAFFENBACH/REUTERS
প্রিয় পুতুলের সঙ্গে ঘরছাড়া
রোমানিয়ায় একটি স্পোর্টস অ্যারেনাতে ইউক্রেনের শরণার্থীদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে৷ সেখানেই ঘুমিয়ে আছে শিশুটি৷ নিজের দেশ, প্রিয় ঘর সব ছেড়ে আসতে হয়েছে, কিন্তু সঙ্গে নিতে ভোলেনি প্রিয় বার্বি পুতুলটিকে৷
ছবি: CLODAGH KILCOYNE/REUTERS
দীর্ঘ যাত্রার ক্লান্তি
ইউক্রেন থেকে ট্রেনে দীর্ঘ যাত্রা শেষে রোমানিয়ার বুখারেস্টে এক শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে এই পরিবারটি৷ দীর্ঘ যাত্রার ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছে শিশুটি৷ মায়ের মুখে বেদনার ছায়া৷
ছবি: EDGARD GARRIDO/REUTERS
যুদ্ধ কি জানে না যে শিশু
ইউক্রেনের লভিভ থেকে বাসে করেও দেশ ছাড়ছেন অনেকে৷ একটি বাসে বাবার পাশে বসে ক্যামেরার উদ্দেশে মিষ্টি করে হেসে হাত নাড়ছে শিশুটি৷ তার জন্য হয়ত এটা বেড়াতে যাওয়া৷ নিজের দেশ, ঘর ছেড়ে যাওয়ার যন্ত্রণার অনুভূতি এখনো তার অজানা ৷
ছবি: PAVLO PALAMARCHUK/REUTERS
ভাই-বোনের ট্রেনের অপেক্ষা
ইউক্রেনের এলভিভ রেলস্টেশনের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে ভাই৷ কোলে ঘুমন্ত ছোট্ট বোন৷ ইউক্রেন ছাড়ার ট্রেনের অপেক্ষায় তারা৷
ছবি: KAI PFAFFENBACH/REUTERS
গন্তব্যের অপেক্ষা
ইউক্রেনের কিয়েভ থেকে সিরাত সীমান্ত দিয়ে রোমানিয়ায় প্রবেশ করেছে ছোট্ট আলোকসান্দ্রা আর তার মা৷ এখন গন্তব্য রাজধানী বুখারেস্ট৷ ট্রেন স্টেশনে অপেক্ষা করার সময় মায়ের ফোনে কার্টুন দেখছে সে৷
ছবি: CLODAGH KILCOYNE/REUTERS
বার্লিনের পথে
পোল্যান্ডের ক্রাকাও থেকে বার্লিনে যাচ্ছেন ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা এই মা৷ ট্রেনে ঘুমিয়ে পড়েছে দুই সন্তান৷ কিন্তু মায়ের চোখে ঘুম নেই৷ অজানা ভবিষ্যতের পথে চলেছেন৷ তাই চোখে হতাশা আর উৎকণ্ঠা৷
ছবি: FABRIZIO BENSCH/REUTERS
নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে
পোল্যান্ডের ক্রাকাও থেকে জার্মানির রাজধানী বার্লিন যাচ্ছে ট্রেনটি৷ ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা অনেক মানুষ এই ট্রেনটিতে৷ গাদাগাদি করে বসেছেন নারী ও শিশুরা৷ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে চলেছেন তারা৷
ছবি: FABRIZIO BENSCH/REUTERS
দেশ ছাড়ার অপেক্ষা
ইউক্রেনের লভিভ রেলস্টেশনে হাজারো মানুষের ভিড়৷ অনেক শিশু রয়েছে সেখানে৷
ছবি: PAVLO PALAMARCHUK/REUTERS
ফেলে আসা প্রিয়জন
৩২ বছর বয়সি আনা, সন্তানদের নিয়ে পোল্যান্ডের ক্রাকাও থেকে বুদাপেস্ট যাওয়ার ট্রেনে উঠেছেন৷ ইউক্রেনে থেকে গেছেন তার স্বামী অর্থোডক্স চার্চের যাজক মিখাইল পিটনিস্কি৷ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে যাত্রা৷ তাই চোখের জল বাঁধ মানছে না আনার৷
ইউক্রেন দাবি করেছে, ওই হামলায় বহু মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছে। এর আগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের একটি হাসপাতালে বোমাবর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। রাশিয়া ধ্বংস করেছিল একটি চার্চ এবং টাওয়ার। ইউক্রেনের দাবি, শুধুমাত্র মারিউপলেই এখনো পর্যন্ত অন্তত দুই হাজার ৪০০ সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে রাশিয়ার অভিযানে। এখনো সেখানে প্রায় তিন লাখ মানুষ আটকে আছেন বলে জানানো হয়েছে। কারণ, মারিউপল থেকে যে সেফ প্যাসেজ তৈরি করা হয়েছে, রাশিয়া সেখানেও লাগাতার আক্রমণ চালাচ্ছে বলে ইউক্রেনের দাবি।
ঘটনার পর মারিউপলের সিটি কাউন্সিল একটি স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, থিয়েটারটি থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। একটি অংশ সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। সিটি কাউন্সিল দাবি করেছে, ওই প্রেক্ষাগৃহে বেশিরভাগ আশ্রয়প্রার্থী ছিলেন বয়স্ক এবং শিশু। তাদের খবর এখনো নেওয়া সম্ভব হয়নি। রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করেছে বলে ইউক্রেনের অভিযোগ।
মারিউপলের ঘটনার পরেই ইউরোপের একাধিক দেশ জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডেকেছে। যুক্তরাজ্য, অ্যামেরিকা, ফ্রান্স, নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড এবং অ্যালবেনিয়া পৃথকভাবে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের দাবি জানিয়েছিল। বৃহস্পতিবার তাদের বৈঠকে হওয়ার কথা। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, রাশিয়া যুদ্ধাপরাধ করছে।
ফ্রান্স রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের একটি মামলা চালু করেছে। সম্প্রতি ইউক্রেনে কাজ করতে গিয়ে গোলায় নিহত হয়েছেন ফক্স নিউজের এক চিত্রগ্রাহক। তিনি ফরাসি বশোদ্ভূত। সে কারণেই ফ্রান্স স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তার মৃত্যুকে সামনে রেখে মামলা শুরু করেছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে সেখানে সরাসরি যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তোলা হয়েছে।