দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের পুনরুত্থানের জন্য মার্শাল প্ল্যান ঘোষণা করা হয়েছিল। ইউক্রেনকে নতুন করে তৈরি করতে তেমনই পরিকল্পনা প্রয়োজন।
বিজ্ঞাপন
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রেসিডেন্ট রোববার জানিয়েছেন, যুদ্ধে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত ইউক্রেন। গোটা দেশটিকেই কার্যত নতুন করে গড়ে তুলতে হবে। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র উপায় হলো ইউক্রেনের জন্য মার্শিল প্ল্যান বা পরিকল্পনা ঘোষণা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউরোপকে নতুন করে গড়ে তুলতে অ্যামেরিকা প্রথম মার্শাল প্ল্যান ঘোষণা করেছিল।
প্রেসিডেন্ট বর্জ ব্রেন্ডের বক্তব্য, ইউক্রেন যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে হবে বলেও মনে হচ্ছে না। কিন্তু আর অপেক্ষা করা উচিত হবে না। যে অঞ্চলগুলি ইউক্রেনের হাতে আছে, রাশিয়ার সেনা যেখান থেকে চলে গেছে, সেখানে সংস্কারের কাজ দ্রুত শুরু করে দেওয়া উচিত।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে বিক্ষোভ দেশে দেশে
ইউক্রেন যুদ্ধ আর খরায় বিশ্বজুড়ে বেড়ে চলছে খাদ্য শস্য, ভোজ্য তেল, জ্বালানি আর সারের দাম৷ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বেড়ে চলায় ক্ষুব্ধ ইন্দোনেশিয়া থেকে শুরু করে পেরুর মানুষ৷ দেখুন ছবিঘর...
ছবি: Jeff J Mitchell/Getty Images
আর্জেন্টিনা
২৩ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট আলবের্তো ফার্নান্দেজের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামেন কৃষকরা৷ ব্যাপক মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে তার সরকারের নেয়া নীতিতে ক্ষুব্ধ তারা৷ অভ্যন্তরীণ বাজার সামলাতে গম আর ভুট্টা রপ্তানিতে ১২ শতাংশ এবং সয়া, আটা ও রান্নার তেল রপ্তানির উপর ৩৩ শতাংশ কর আরোপ করেছে দেশটির সরকার৷
ছবি: Agustin Marcarian/REUTERS
ইন্দোনেশিয়া
গত ২৮ এপ্রিল থেকে পাম তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া৷ এরপর রপ্তানিমুখী অনেক পাম মিল কৃষকদের কাছ থেকে পাম ফল কেনা বন্ধ করে৷ এতে বিপাকে পড়েন কৃষকরা৷ প্রতিবাদে রাজধানী জাকার্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করেন তারা৷ তবে সরকার বলছে অভ্যন্তরীণ বাজারে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দাম কমে না আসা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে৷
ছবি: Tatan Syuflana/AP/picture alliance
গ্রিস
জ্বালানি ও খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে এথেন্সে মে দিবসের র্যালিতে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা৷ মার্চে গ্রিসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে আট দশমিক নয় শতাংশে যা গত ২৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ৷
ছবি: COSTAS BALTAS/REUTERS
সাইপ্রাস
জীবনযাত্রার ব্যয় আর উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ সাইপ্রাসের দুগ্ধজাত খামারিরা৷ ১৮ মে রাজধানী নিকোসিয়ায় প্রেসিডেন্ট ভবনের সামনে টনকে টন দুধ ফেলে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান তারা৷
ছবি: YIANNIS KOURTOGLOU/REUTERS
ইরান
সরকার ভর্তুকি তুলে নেয়ায় ইরানে আটায় তৈরি বিভিন্ন খাদ্যের দাম ছয়গুণ বেড়েছে৷ বেড়েছে ভোজ্য তেল ও দুগ্ধজাত খাবারের দামও৷ আগে থেকে সংকটে থাকা ইরানের মানুষের জন্য এই পরিস্থিতি ভয়ানক চাপে ফেলেছে৷ মে থেকে এর প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন মানুষ৷
ছবি: Privat
পেরু
খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে নিয়মিত রাস্তায় ব্যারিকেড দিচ্ছেন পেরুর মানুষ৷ পরিস্থিতি সামলাতে মহাসড়কে সেনা নামিয়েছে দেশটির সরকার৷ ক্ষুব্ধ জনতাকে সামলাতে এপ্রিলে লিমাতে কারফিউ জারি করে৷ গত দুই যুগেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতিতে ভুগছে লাতিন অ্যামেরিকার দেশ পেরু৷
ছবি: Ernesto Benvaides/AFP
চিলি
খাদ্যমূল্য বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ চিলির মানুষ৷ ২৫ মার্চ দেশটির শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন৷ এসময় পুলিশের গুলিতে এক ছাত্র আহত হয়৷ চিলিতে প্রতি মাসে ছয় লাখ ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর প্রত্যেককে মাসে ৪১ ডলার করে খাদ্য ভাতা দেয়া হয়৷ মূল্যস্ফীতি বাড়ায় শিক্ষার্থীরা এই ভর্তুকি বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছে৷
ছবি: Martin Bernetti/AFP/Getty Images
লেবানন
খাদ্যমূল্য বৃদ্ধিতে গত জানুয়ারি থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লেবাননে৷ ২০১৯ সাল থেকেই অর্থনৈতিক সংকটে দেশটি৷
ছবি: Hussein Malla/AP Photo/picture alliance
কেনিয়া
খাদ্যমূল্যসহ জীবনযাত্রার ব্যয়ে বিপর্যন্ত কেনিয়ার মানুষও৷ বিভিন্ন দাবিতে ১৭ মে বিক্ষোভ করেন দেশটির মানুষ৷
ছবি: BAZ RATNER/REUTERS
শ্রীলঙ্কা
খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সংকটকে কেন্দ্র করে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ চলছে শ্রীলঙ্কাতে৷ ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন৷ ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পরে এতটা অর্থনৈতিক সংকটে এর আগে পড়েনি দেশটি৷
ছবি: Ishara S. Kodikara/AFP/Getty Images
10 ছবি1 | 10
গত জানুয়ারি মাসে এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়ে যায়। শেষপর্যন্ত মে মাসের শেষে দাভোস বৈঠকে মিলিত হয়েছে দেশগুলি। সোমবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফোরাম শুরু হবে।
গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট। তার বক্তব্য, এক ভয়াবহ রিসেশন বা অর্থনৈতিক মন্দার দিকে এগোচ্ছে বিশ্ব। এর ফলে বহু মানুষের চাকরি যাবে, দারিদ্র্য বাড়বে। পরিস্থিতি হাতে বাইরে চলে যাওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা আছে। কোভিড এবং তারপরে ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে অর্থনীতির সংস্কার খুব ধীর গতিতে হচ্ছে। এমন চলতে থাকলে মন্দার হাত থেকে বিশ্বকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে মা-মেয়ে
01:48
যুদ্ধ-পরিস্থিতি
গত সপ্তাহেই রাশিয়া এবং ইউক্রেনের শান্তি বৈঠক ভেস্তে গেছিল। দীর্ঘ আলোচনার পরেও কোনোপক্ষ সমাধানসূত্রে পৌঁছাতে পারেনি। রোববার রাশিয়া জানিয়েছে, তারা নতুন করে শান্তি বৈঠকে বসতে প্রস্তুত। কিন্তু কিয়েভকে আগ্রহ দেখাতে হবে। ইউক্রেন রাশিয়ার এই প্রস্তাবে সায় দেয়নি। তাদের বক্তব্য, রাশিয়া যে শর্তগুলি দিচ্ছে, কোনোভাবেই তারা তা মানবে না। রাশিয়া অখণ্ড ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করলেই একমাত্র তারা আলোচনায় যোগ দেবে।
সূত্র জানিয়েছে, পূর্ব ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল রাশিয়া ইতিমধ্যে দখল করে নিয়েছে। ওই অঞ্চলগুলিকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে দাবি করছে মস্কো। কিন্তু ইউক্রেন কোনোভাবেই তা মানতে চাইছে না। এই কারণেই গত সপ্তাহে বৈঠক ভেস্তে গেছিল।