ইউক্রেনের বাংলাদেশিরা ভিসা ছাড়াই পোল্যান্ডে যেতে পারবেন
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
ইউক্রেনে আটকেপড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফিরতে ভিসা ছাড়াই পোল্যান্ডে ঢোকার অনুমতি দেবে সে দেশের সরকার৷ এ বিষয়ে জরুরি যোগাযোগের জন্য কয়েকটি হটলাইন নম্বর দিয়েছে পোল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায়, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পোল্যান্ডের ওয়ারশতে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘‘পোল্যান্ড-ইউক্রেন সীমান্ত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ছাড়া উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে৷ এক্ষেত্র বৈধ পাসপোর্টধারীরা সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে পাসপোর্ট দেখিয়ে পোল্যান্ডে ঢুকতে পারবেন৷’’
যাদের পাসপোর্ট নেই, তারাও ট্র্যাভেল পাস নিয়ে পোল্যান্ডে ঢুকতে পারবেন, প্রত্যেক বাংলাদেশিকে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজে রঙিন ছবি সঙ্গে রাখতে অনুরোধ করেছে দূতাবাস৷
ওয়ারশতে বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি দল শুক্রবার সকালে পোল্যান্ড- ইউক্রেন সীমান্তের পথে রওনা হবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘‘ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে ঢুকতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের তারা সহায়তা করবেন৷’’
দূতাবাস বলছে, ইউক্রেনের ভেতরে বিচ্ছিন্ন বোমা বিস্ফোরণ ঘটছে, পেট্রলের অপ্রতুলতা রয়েছে এবং পথে অতিরিক্ত যানজটের খবর আসছে৷ কাজেই পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে দূরবর্তী এলাকায় অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের রওনা হওয়ার আগে পরিস্থিতি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে নেওয়া প্রয়োজন৷ যাদের সঙ্গে বৈধ কাগজপত্র নেই, তাদেরও পোল্যান্ডে পৌঁছাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে ওয়ারশর বাংলাদেশ মিশনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এ মোমেন৷
কিয়েভ-সহ অনেক শহরে আছড়ে পড়েছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র। রাশিয়ার যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলা হচ্ছে। রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনের একটি শহরের ছবি। আগুন জ্বলছে।
ছবি: picture alliance/dpa/Mary Ostrovska/AP
গোলার তাণ্ডব
ইউক্রেনের শহর মারিয়াপোল। রাশিয়ার কামান থেকে ছোড়া গোলার আঘাতে বাড়ি ভেঙেছে। গাড়ি নষ্ট হয়েছে। ইউক্রেনের অনেক শহরের ছবি এরকমই।
ছবি: Sergei Grits/AP/picture alliance
বোমার আঘাতে
পূর্ব ইউক্রেনের চুগুয়েভ শহরের ছবি। বোমার আঘাতে বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছে। তারপর সেখানে এসেছেন মানুষ। খুঁজছেন হারানো জিনিস। এবার কোথায় যাবেন, তা-ই ভাবছেন।
ছবি: Aris Messinis/AFP/Getty Images
বিপন্ন মানুষ
চুগুয়েভের আরেকটি দৃশ্য। বোমার আঘাতে বাড়ি ভেঙেছে। গাড়ি আর চলার অবস্থায় নেই। তার কাছেই মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন এক বিপন্ন ব্যক্তি।
ছবি: Aris Messinis/AFP/Getty Images
আগুন জ্বলছে
কিয়েভের কাছে রাশিয়ার হামলায় গুঁড়িয়ে গেছে বেসরকারি বাড়ি। সেখানে তখনো আগুন জ্বলছে। কিয়েভে একের পর এক রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছে।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP/picture alliance
সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত
ইউক্রেনের একটি সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে রাশিয়া। তারপর সেখান থেকে বের হওয়া কালো ধোঁয়া চারপাশ ঢেকে দিয়েছে।
ছবি: Evgeniy Maloletka/AP/picture alliance
বিমানঘাঁটি দখলের লড়াই
কিয়েভের ঠিক বাইরে একটি বিমানঘাঁটি দখল করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। তীব্র লড়াই চলছে। তার আশপাশের এলাকায় বোমা ফেলেছে রাশিয়া। তেমনই একটি এলাকার ছবি।
ছবি: DANIEL LEAL/AFP
ধ্বংসের চেহারা
কিয়েভের বাইরে রাশিয়ার আক্রমণের পরের ছবি। চারপাশে শুধু ছড়িয়ে থাকা ধ্বংসের ছবি।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP/picture alliance
ট্রেন ধরার জন্য
কিয়েভের মানুষ ট্রেন ধরার জন্য একটি সাবওয়েতে ছুটছেন। তারা দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে চান। রাশিয়ার হামলার মুখে অসহায় বোধ করছেন তারা।
ছবি: Emilio Morenatti/AP/dpa/picture alliance
বাসে ওঠার ভিড়
বাসে করে কিয়েভ থেকে দূরে যাওয়ার জন্য মরিয়া মানুষের ভিড়।
ছবি: Emilio Morenatti/AP/dpa/picture alliance
হামলার হাত থেকে বাঁচতে
রাশিয়ার হামলার হাত থেকে বাঁচতে সাবওয়েকে নিরাপদ মনে করছেন অনেকে। সেখানেই থাকছেন তারা।
ছবি: Emilio Morenatti/AP/dpa/picture alliance
11 ছবি1 | 11
বৃহস্পতিবার রাশিয়া ইউক্রেনের উপর স্থলপথে ও আকাশ পথে হামলা শুরু করেছে৷ রাজধানী কিয়েভেও গোলাবর্ষণ হচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা আটকে পড়েছেন এবং তারা উদ্ধারের আকুতিও জানাচ্ছেন৷ এদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী৷
ইউক্রেনের কিয়েভ থেকে পোল্যান্ড সীমান্তের দূরত্ব প্রায় পাঁচশ কিলোমিটারের৷ সেখানে বিমান চলাচল এখন বন্ধ৷ স্থলপথে যানবাহন চলাচলও স্বাভাবিক নয়৷ এমন পরিস্থিতিতে পোল্যান্ড যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে বলে ইউক্রেনে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন৷ অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর হাতে পোল্যান্ড পর্যন্ত যাওয়ার জন্য যথেষ্ট টাকাও নেই৷ বাংলাদেশ থেকে সেখানে টাকা পাঠানো জটিল বলে তাদের সঙ্কট আরও বেশি৷
ইউক্রেনের থেকে পোল্যান্ডের বিপরীত দিকে ১ হাজারের বেশি কিলোমিটার দূরে মারিওপোলে কিছু বাংলাদেশি রয়েছে বলে জানা গেছে৷ বৃহস্পতিবার রুশ বাহিনী সেখানে হামলা করেছে৷ ইউক্রেনে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস না থাকায় পোল্যান্ডের ওয়ারশতে বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে তাদের সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা চলছে৷
ইউক্রেনে মোট কতজন বাংলাদেশি আছেন, সরকারের খাতায় তার সুনির্দিষ্ট কোনো হিসাব নেই৷ তবে এক থেকে দেড় হাজার হতে পারে বলে পোল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেনের ধারণা৷
ইউক্রেন থেকে ইতোমধ্যে অনেকে পোল্যান্ডে চলে এসেছেন জানিয়ে তিনি বিডিনিউজকে বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘যে যেদিকে পারছে বর্ডারের দিকে চলে যাচ্ছে৷ আজ (বৃহস্পতিবার) রাত পর্যন্ত বাংলাদেশির সংখ্যা ৬০০ পেরিয়ে গেছে৷ তিনটি গ্রুপ করা হয়েছে৷ অন্য বাংলাদেশিদের খোঁজ পেতে আইওএম এবং রেডক্রসের সাথে যোগাযোগ করছি আমরা৷’’
যারা পোল্যান্ডে পৌঁছাচ্ছেন, তাদের বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন লায়লা হোসেন৷
‘‘দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করবেন অথবা কাছাকাছি যারা ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করছে, তাদের সাথে যোগাযোগ করবেন৷’’
জরুরিযোগাযোগেরনম্বর
প্রবাসী বাংলাদেশিদের তথ্য ও জরুরি যোগাযোগের জন্য কয়েকটি হটলাইন নম্বর দিয়েছে দূতাবাস৷
দূতাবাসের এক ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, ‘প্রবল ব্যস্ততার কারণে’ রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের কাউন্সেলর অনেক ফোন ধরতে পারছেন না৷ বিকল্প নম্বরগুলোতে ফোন করে ইউক্রেনে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা সহযোগিতা পাবেন৷
তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে। একনজরে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সামরিক শক্তি।
ছবি: Carlos Barria/REUTERS
যুদ্ধরত সেনা
ইউক্রেনের হাতে আছে দুই লাখ যুদ্ধরত সেনা। যারা সরাসরি লড়াইয়ে যোগ দিয়েছে। রাশিয়ার হাতে আছে আট লাখ ৫০ হাজার যুদ্ধরত সেনা। যারা যে কোনো সময় লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। এদেরই একটি অংশ এখন লড়াইয়ের ময়দানে আছে।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP Photo/picture alliance
সংরক্ষিত সেনা
ইউক্রেনের হাতে সংরক্ষিত বা রিজার্ভড ব্যাটেলিয়ন আছে আড়াই লাখ। যারা প্রয়োজনে লড়াইয়ের ময়দানে নামবে। রাশিয়ার হাতেও সংরক্ষিত সেনার সংখ্যা আড়াই লাখ।
ছবি: Aris Messinis/AFP
প্যারামিলিটারি বাহিনী
রাশিয়ার প্যারামিলিটারি বাহিনীর সংখ্যা আড়াই লাখ। এর বাইরে স্পেশাল ফোর্স আছে। যারা ইউক্রেন হামলায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ইউক্রেনের প্যারামিলিটারি বাহিনীর সংখ্যা মাত্র ৫০ হাজার।
ইউক্রেনের হাতে সাজোয়া গাড়ি বা আর্মার্ড ভেহিক্যালের সংখ্যা ১২ হাজার ৩০৩। রাশিয়ার হাতে এই ধরনের গাড়ির সংখ্যা ৩০ হাজার ১২২। বস্তুত, সম্পূর্ণ বুলেটপ্রুফ এই গাড়িগুলিতে করেই সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছায়। এর সাহায্যে প্রতিপক্ষের উপর আঘাতও হানা যায়।
ইউক্রেনের হাতে ফাইটার জেট বা যুদ্ধবিমান আছে ৬৯টি। রাশিয়ার কাছে সেখানে ফাইটারের সংখ্যা ৭৭২।
ছবি: Erik Romanenko/Tass/imago images
যুদ্ধের হেলিকপ্টার
যুদ্ধ করার মতো হেলিকপ্টার ইউক্রেনের কাছে আছে মাত্র ৩৪টি। রাশিয়ার কাছে সেখানে এই হেলিকপ্টারের সংখ্যা ৫৪৪। ইউক্রেন হামলার প্রথম দিন রাশিয়া এই হেলিকপ্টার প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করেছে। হেলিকপ্টারের সাহায্যে বোমা ফেলা হয়েছে। গুলি চালানো হয়েছে।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP Photo/picture alliance
এবং নৌবহর
নৌবহরেও রাশিয়ার থেকে অনেক পিছিয়ে আছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা ৩৮টি। রাশিয়ার হাতে সেখানে ৬০৫টি যুদ্ধজাহাজ। কৃষ্ণসাগরে যার অনেকগুলিকে স্ট্যান্ডবাই করে রাখা হয়েছে।
ছবি: Iranian Army/AP Photo/picture alliance
পরমাণু শক্তি
ইউক্রেনের হাতে একটিও পরমাণু অস্ত্র নেই। অন্যদিকে রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম পরমাণু শক্তিধর দেশ। ছয় হাজার ২৫৫টি পরমাণু অস্ত্র আছে তাদের হাতে।