মধ্য ইউক্রেনের একটি শপিং মলে হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সেনা। অন্তত ১৬ জন নিহত। 'সন্ত্রাসী হামলা', বললেন জেলেনস্কি।
বিজ্ঞাপন
সোমবার মধ্য ইউক্রেনের ক্রেমেনচুকে একটি শপিং মলে হামলা চালায় রাশিয়ার সেনা। মলটির উপর বোমাবর্ষণ করা হয়। ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। নিহতদের প্রায় সকলেই বেসামরিক ব্যক্তি।
যুদ্ধের মাঝেই দেশে ফিরছেন যে শরণার্থীরা
02:07
ঘটনায় সব মিলিয়ে ৫৯ জন আহত হয়েছেন। তার মধ্যে ২৫ জনকে হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে। গোটা মলটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ধ্বসংস্তূপের নীচে আরো কেউ আটকে আছেন কি না, দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে মনোবিদেরাও পৌঁছেছেন। আহতদের সঙ্গে কথা বলছেন তারা।
বিশ্বনেতাদের নিন্দা
সোমবার রাতেই জি-৭ এর নেতারা একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। শপিং মলে রাশিয়ার মিসাইল হামলাকে তারা নিষ্ঠুর এবং জঘন্য কাজ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। ঘটনাটিকে যুদ্ধাপরাধ বলে দাবি করেছেন তারা। এবং এর জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনকে দায় নিতে হবে বলে জানিয়েছেন তারা। জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেসের অফিস থেকেও নিন্দাসূচক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া যা করেছে, তা এক কথায় 'সন্ত্রাসী হামলা'। রাশিয়া অবশ্য এখনো পর্যন্ত এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
ইউক্রেন ইস্যুতে মধ্যপ্রাচ্যকে কেন পাশে পাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র?
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর তেলের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সৌদি আরবকে উৎপাদন বাড়ানোর অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ কিন্তু সফল হয়নি৷ সংযুক্ত আরব আমিরাতেরও সহায়তা চেয়ে পায়নি যুক্তরাষ্ট্র৷ কিন্তু কেন?
সৌদি যুবরাজ কথা বলতে চাননি?
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর তেলের মূল্য বেড়ে গেলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল৷ কিন্তু সালমান তার সঙ্গে কথা বলতে চাননি বলে সেই সময় জানা গিয়েছিল৷ যদিও মার্কিন প্রশাসন এই খবর অস্বীকার করেছিল৷ এর কিছুদিন পরই রাশিয়া ও চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেন সালমান৷
আরব আমিরাতও কথা শোনেনি
রাশিয়ার ধনাঢ্য ব্যক্তিরা যেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে তাদের সুপারইয়ট ও সম্পদ লুকাতে না পারেন সেই অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র৷ কিন্তু সেই অনুরোধ শোনেনি আরব আমিরাত৷ ছবিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক রুশ ধনীর ইয়ট দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Kamran Jebreili/AP/picture alliance
জাতিসংঘে সহায়তা দিতে অনিচ্ছুক
ইউক্রেন দখলের বিরোধিতা ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত জাতিসংঘের বিভিন্ন রেজুলেশন পাস করতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সমর্থন প্রয়োজন৷ কিন্তু সেই সমর্থন দিতে মধ্যপ্রাচ্যকে অনিচ্ছুক দেখা গেছে৷
ছবি: Spencer Platt/Getty Images
কারণ কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র নিজে তেল উৎপাদন শুরুর পর তাদের কাছে মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্ব কিছুটা কমে গিয়েছিল৷ সে কারণে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ৷ মার্কিন সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা অ্যারন ডি. মিলার বলেন, ‘‘মধ্যপ্রাচ্যের অংশীদাররা বুঝতে পেরেছিল যে তাদের এখন কম গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে৷ সে কারণে তারা অন্যদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চেয়েছে৷’’
ছবি: Kirill Kukhmar/TASS/dpa/picture alliance
চীনা বিনিয়োগ
বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল আমদানিকারক চীন৷ মোট তেল আমদানির ৪৭ শতাংশ করা হয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে৷ এছাড়া সৌদি আরবের ব্যালিস্টিক মিসাইল কর্মসূচিতে সহায়তা করছে চীন৷ ইরাকের তেলক্ষেত্র কিনে নেয়া এবং অবকাঠামোতেও বিনিয়োগ করছে চীন৷ ছবিতে গতবছর বাগদাদে চালু হওয়া চীনা ভাষা শিক্ষার একটি ক্লাস দেখা যাচ্ছে৷
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেন৷ আর প্রেসিডেন্ট বাইডেন জুলাই মাসে সৌদি আরব যাচ্ছেন৷
ছবি: REUTERS
6 ছবি1 | 6
সাবেক রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের হুমকি
সাবেক রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেডভেডেভ সোমবার বলেছেন, ন্যাটো যদি আরো দেশকে তাদের জোটে সামিল করে তাহলে রাশিয়া ইসকান্দার হাইপারসনিক মিসাইল ন্যাটোর দোরগোড়ায় রেখে তার জবাব দেবে। বস্তুত, ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার প্রস্তুতির সাপেক্ষে একথা বলেছেন মেডভেডেভ। রাশিয়ার একটি সরকারি খবরের কাগজে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় একথা বলেছেন তিনি।
কোনো নর্ডিক দেশ ন্যাটোয় যোগ দিলে রাশিয়াকে এই পদক্ষেপ নিতেই হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। বস্তুত, মঙ্গলবার থেকেই মাদ্রিদে ন্যাটোর বৈঠক শুরু হওয়ার কথা। সেখানে ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। যদিও তুরস্ক জানিয়ে রেখেছে, তারা এখনো এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত নয়। তারা ভেটো প্রয়োগ করতে পারে। অন্যদিকে, মেডভেডেভ বলেছেন, ন্যাটোর কোনো দেশ যদি ক্রাইমিয়া পুনর্দখলের চেষ্টা করে, তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখল করেছিল রাশিয়া।