কোন ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই রাজনৈতিক আলোচনার জন্য ইউক্রেন সফরে গেলেন জার্মান ভাইস চ্যান্সেলর৷ জ্বালানি খাত নিয়ে আলোচনার জন্য তার সঙ্গে রয়েছে একটি ছোট ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল৷
বিজ্ঞাপন
জার্মান ভাইস চ্যান্সেলর রবার্ট হাবেক সোমবার সকালে আকষ্মিক সফরে কিয়েভে পৌঁছান৷ যুদ্ধের পরে ‘পুননির্মাণের' ব্যাপারে ইউক্রেনকে আস্বস্ত করতে এই সফর বলে জানিয়েছেন তিনি৷
দুই পক্ষের আলোচনায় ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোকে পুনরায় গড়ে তোলার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে৷ জার্মানির অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী দায়িত্বে থাকা হাবেক জানান বিনিয়োগের সিদ্ধান্তও এরই মধ্যে নেয়া হয়ে গেছে বা দ্রুত নেয়া হবে৷
এই সফরে তার সঙ্গী হিসেবে জার্মানির একটি ব্যবসায় প্রতিনিধি দলও রয়েছে, যার নেতৃত্বে আছেন ফেডারেশন অব জার্মান ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট সিগফ্রিড রুসভুর্ম৷ তিনি বলেন, ‘জার্মানির শিল্পও যে ইউক্রেনের পাশে আছে' এই সফর তারই বার্তা৷
ইউক্রেন-রাশিয়ার তীব্র ড্রোনযুদ্ধ
কয়েকদিন আগেও ইরানের ড্রোনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে দেশে দেশে৷ বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল- ইরানের দেয়া ড্রোন দিয়ে রাশিয়ার হামলা থামাতে হবে৷ সম্প্রতি ইউক্রেনও ড্রোন হামলা শুরু করায় যুদ্ধ রূপ নিয়েছে ‘ড্রোনাড্রোনিতে’৷
ছবি: Stringer/REUTERS
ইউক্রেন তখন অসহায়
২০২২ সালের শেষ দিকে ইউক্রেনে নিয়মিত দেখা যেতো এমন দৃশ্য ৷ নিয়মিত বিরতিতে মৃত্যুদূত হয়ে উড়ে আসতো রাশিয়ার পাঠানো ড্রোন৷ সেই ড্রোনের ফেলা বোমায় ধসে পড়তো ভবন, মৃত্যু হতো অনেকের৷ ড্রোনের বিরুদ্ধে লড়াই এভাবে বন্দুক দিয়েই করতেন ইউক্রেনের সৈন্যরা৷ দূর আকাশে কিছু দেখা গেলেই এভাবে বন্দুক উঁচিয়ে গুলি ছুঁড়তেন তারা৷
ছবি: Vadim Sarakhan/REUTERS
প্রথম মাসে ২২০টি ড্রোন ধ্বংস
২০২২ সালের অক্টোবরে ইউক্রেনের সৈন্যরা গুলি করে কমপক্ষে ২২০টি ড্রোন ধ্বংস করে৷ তারপরও অবশ্য ড্রোন হামলার ভয়াবহতা কমানো যাচ্ছিল না৷
ছবি: Roman Petushkov/REUTERS
যুদ্ধ রাশিয়ার, আলোচনায় ইরান
ওপরের ছবিতে ড্রোন থেকে ফেলা বোমার আঘাতে বিধ্বস্ত ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের একটি আবাসিক এলাকা৷ এমন ভয়াবহ সব হামলার জন্য রাশিয়ার প্রতি নিন্দা জানালেও বারবারই ঘুরেফিরে আসছিল ইরানের কথা৷ কারণ, ইউক্রেনের দাবি- ইরানের দেয়া শাহেদ-১৩৬ ড্রোন দিয়েই এসব হামলা চালাচ্ছিল রাশিয়া৷ ইউক্রেন তখন রাশিয়াকে এভাবে ড্রোন দিয়ে সহায়তা করায় বিশ্ব নেতৃত্বের প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও তোলে৷
ছবি: Oleksii Chumachenko/ZUMA Wire/IMAGO
কিয়েভে ইরান-বিরোধী বিক্ষোভ
রাশিয়া ইরানের দেয়া ড্রোন দিয়ে হামলা চালাচ্ছে- এই অভিযোগে কিয়েভে ইরান দূতাবাসের সামনে বেশ কয়েকবার বিক্ষোভ সমাবেশ করেন কিয়েভবাসীরা৷
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির মিউনিখ শহরেও ইউক্রেনীয় শরণার্থীরা রাশিয়াকে ড্রোন দেয়ায় ইরানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেন৷
ছবি: Sachelle Babbar/ZUMAPRESS/picture alliance
ড্রোনের জবাবে ড্রোন
তবে ইউক্রেন এখন আর শুধু ড্রোন-হামলা ঠেকিয়েই অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করছে না৷ ইউক্রেনীয় সৈন্যরাও ড্রোন পাঠিয়ে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়ার সৈন্যদের ওপর৷ ওপরের ছবিতে দনেৎস্কের ভুলেদার এলাকা থেকে ড্রোন হামলা চালাচ্ছেন এক ইউক্রেনীয় সৈন্য৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
সার্চ লাইটের আলোয় ড্রোন খোঁজা
শুধু হামলা চালালেই তো হবে না, প্রতিরক্ষের হামলা নস্যাৎও করতে হবে৷ কিয়েভের আকাশে সার্চ লাইটের আলো ফেলে তা-ই নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন ইউক্রেনের সৈন্যরা৷ আলোয় রাশিয়ার কোনো ড্রোন দেখা গেলেই গুলি চালান তারা৷
ছবি: Gleb Garanich/REUTERS
অ্যান্টি-ড্রোন রাইফেল
দনেৎস্কের হরলিভকা এলাকায় অ্যান্টি-ড্রোন রাইফেল হাতে ইউক্রেনের এক সৈন্য৷
ছবি: Oleksandr Ratushniak/REUTERS
রিমোট হাতে যুদ্ধ
ইউক্রেনে প্রায়ই সৈন্যদের হাতে এক ধরনের রিমোট দেখা যায়, যেগুলোর একমাত্র কাজ ড্রোন পরিচালনা করা৷ ছবির এই সৈন্যের হাতেও ড্রোন চালানোর একটি রিমোট৷
ছবি: Lisi Niesner/REUTERS
রাশিয়াতেও ড্রোন-আতঙ্ক
ইদানীং রাশিয়ার কিছু অঞ্চলে ইউক্রেনের ড্রোন বেশ আতঙ্ক ছড়িয়েছে৷ ওপরের ছবিটি রবিবার (২৬ মার্চ) রাশিয়ার তুলা অঞ্চলের কিরীভস্ক শহরে তোলা৷ ইউক্রেনের পাঠানো ড্রোন থেকে ফেলা বোমায় সেখানকার ভবনও বিধ্বস্ত৷
ছবি: Vitaliy Belousov/SNA/IMAGO
ভরসার অপর নাম ইউএভি
কোনো চালক ছাড়াই ছোট ছোট এসব বাহন উড়ে যে কোনো জায়গায় চলে যেতে পারে বলে এগুলোর আরেক নাম আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকেল, সংক্ষেপে ইউএভি৷ জাপোরোনিঝিয়ায় ইউক্রেনীয় এই সেনার হাত থেকে এক্ষুনি উড়ে যাবে ইউএভিটি৷
ছবি: Stringer/REUTERS
12 ছবি1 | 12
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা চালানোর পর এটিই দেশটিতে হাবেকের প্রথম সফর৷
শুরুতে সংশয়ে থাকলেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে ভারি সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করছে জার্মানি৷ সম্প্রতি বার্লিন কিয়েভকে ১৮টি লিওপার্ড-২ যুদ্ধ ট্যাংকও সরবরাহ করেছে৷