ইউক্রেনে শান্তি আনতে সুইজারল্যান্ডে আলোচনা
১৫ জানুয়ারি ২০২৪ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার প্রশ্নে ইউরোপ, অ্যামেরিকাসহ পশ্চিমা জগতের অবস্থান মোটামুটি এক রকম থাকলেও বাকি বিশ্ব কমবেশি উদাসীনতা দেখিয়ে আসছে৷ বিশেষ করে দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলি রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপও নেয় নি৷ বৃহত্তর সমর্থনের অভাবে প্রায় দুই বছর ধরে আক্রান্ত দেশ হওয়া সত্ত্বেও ইউক্রেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে যথেষ্ট সমর্থন ও সহায়তা পাচ্ছে না৷
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে যোগ দিতে গিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি সেই অবস্থা কিছুটা হলেও বদলানোর চেষ্টা করছেন৷ রোববার ৮০টিরও বেশি দেশ সেখানে ইউক্রেন সংকট সমাধানে শান্তির ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা করেছে৷ তবে রাশিয়াকে সেই আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হয় নি৷ বরং স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে জেলেনস্কির দশ দফা প্রস্তাবের ভিত্তিতে ৮৩টি দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এই নিয়ে চতুর্থবার আলোচনায় বসেছেন৷ এর আগে কোপেনহেগেন, জেদ্দা ও মাল্টায় তাঁরা মিলিত হয়েছিলেন৷ জেলেনস্কির দফতরের কর্মকর্তা আন্দ্রিই ইয়েরমার্ক ও সুইস পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইগনাৎসিও কাসিস যৌথভাবে ডাভোসের আলোচনার সভাপতিত্ব করেন৷
এক সাংবাদিক সম্মেলনে সুইস পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঠিক সময়ে রাশিয়াকেও সেই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য রয়েছে৷ তবে বর্তমানে ইউক্রেন ও রাশিয়া এখনো সেই পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত নয়৷ তবে কাসিসের মতে, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা ব্রিক্স গোষ্ঠীর সদস্য ব্রাজিল, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা আলোচনায় যোগ দেওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ ইয়েরমাক বলেন, ইউক্রেনে সামগ্রিক, ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি ফেরানোর উদ্দেশ্যে খোলামেলা পরিবেশে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে৷ তবে তিনি স্বীকার করেন, যে শান্তি অর্জনের উপায় নিয়ে এখনো মতভেদ রয়েছে৷ তবে স্বাধীনতা, ভৌগলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব এবং আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের সনদ সম্পর্কে নীতিগত ঐকমত্য রয়েছে৷ ইয়েরমাক আফ্রিকা ও দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশগুলির সঙ্গে শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজস্ব অবস্থান বুঝিয়ে বলার উদ্যোগ নিচ্ছে৷
জেলেনস্কি সোমবার নিজে ডাভোসে আসছেন৷ তার আগেই ইউক্রেনের অবস্থানের প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন জোরালো করতে এই আলোচনা কিছুটা সহায়ক হবে বলে কিয়েভ আশা করছে৷ রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ দেশ চীন রোববারের আলোচনায় যোগ না দিলেও সম্মেলনে কোনো না কোনোভাবে সে দেশকেও ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে শামিল করা হবে বলে সুইস কর্তৃপক্ষ আশা করছে৷
জেলেনস্কি ২০২২ সালে তাঁর দশ দফার শান্তি পরিকল্পনা পেশ করেছিলেন৷ সেই ফর্মুলা অনুযায়ী রাশিয়াকে ইউক্রেনের সমগ্র ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে৷ সেইসঙ্গে যুদ্ধাপরাধের বিচার ও ইউক্রেনের জন্য নিরাপত্তা গ্যারেন্টিও দাবি করছেন তিনি৷ বলা বাহুল্য রাশিয়া এমন প্রস্তাব শুরু থেকেই নাকচ করে আসছে৷ আলোচনায় অংশগ্রহণের পূর্বশক্ত হিসেবে মস্কো পালটা দাবি পেশ করেছে৷ সবার আগে ইউক্রেনে পশ্চিমা বিশ্বের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার দাবি করছে রাশিয়া৷ সেইসঙ্গে যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে৷
এসবি/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)