ইউক্রেনে খারকিভের গ্রামে একজনের শেষকৃত্যের জন্য জড়ো হয়েছিলেন মানুষ। সেখানে রাশিয়ার মিসাইল হামলা। মৃত ৫১।
বিজ্ঞাপন
খারকিভের হ্রোজা গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। এখানে মাত্র ৩৩০ জন বাস করেন।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের কাছে প্রমাণ আছে যে, রাশিয়া ইসকান্দার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। স্থানীয় সময় বেলা একটা বেজে ১৫ মিনিট নাগাদ এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের পরামর্শদাতা মিখাইলো পোডোলিয়াক বলছেন, ''যারা রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধী প্রেসিডেন্ট পুটিনের সঙ্গে হাসিমুখে হাত মেলাতে চান, তারা যেন এই ঘটনার কথা মনে রাখেন। পুটিনের রাশিয়া হলো শয়তানের দেশ।''
রাশিয়ার নিন্দা
ইইউ-র বিদেশ সংক্রান্ত কমিটির প্রধান জোসেপ বরেল বলেছেন, ''নিরপরাধ সাধারণ মানুষের উপর আরেকটি জঘন্য আক্রমণ হলো। সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ হলো যুদ্ধাপরাধ। রাশিয়ার নেতৃত্ব, যারা এই আক্রমণ করছেন, তারা সকলেই দোষী।''
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, ''এটা রাশিয়ার বর্বরোচিত আচরণ। প্রেসিডেন্ট পুটিন যা খুশি বলতে পারেন, কিন্তু তিনি এই যুদ্ধের জন্য দায়ী। সেজন্যই যুক্তরাজ্য রাশিয়ার বিরোধিতা করছে এবং করবে।''
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ''মৃতদের মধ্যে একটি ছয় বছরের বাচ্চা আছে। রাশিয়া ইচ্ছে করে এই আক্রমণ করেছে। এটা জঙ্গি হামলা ছাড়া আর কিছু নয়।''
ইউক্রেন এই ঘটনার কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বাড়ি ভেঙে পড়েছে। মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রিয়জনদের হারিয়ে মানুষ পুরো বিপর্যস্ত।
জেলেনস্কির আবেদন
ইইউ-র নেতারা এখন স্পেনে বৈঠক করছেন। তাদের কাছে জেলেনস্কি বলেছেন, আসন্ন শীতে রাশিয়ার আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে ইউক্রেনকে যেন এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দেয়া হয়।
ইউক্রেনে আতঙ্কের নগরীতে সুরের মূর্ছনা
যুদ্ধ চলছে একদিকে, অন্যদিকে রাতের আঁধারে মোমবাতি জ্বালিয়েও ধ্রুপদী সংগীতের সুরে বাঁচার আনন্দ নিচ্ছেন অসংখ্য মানুষ৷ লভিভে প্রায় প্রতিদিনের এমন এক আয়োজনের কথা জানুন ছবিঘরে...
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
আকাশে যুদ্ধবিমান, নীচে কনসার্ট
ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভের আকাশে যখন যুদ্ধবিমান আতঙ্ক ছড়ায়, তখনো অর্গান হলে থাকে সুরপাগল মানুষদের ভিড়৷ মগ্ন হয়ে লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক অর্কেস্ট্রার পারফর্ম্যান্স উপভোগ করেন তারা৷ অনেক সময় মোমের আলোয় চলে কনসার্ট৷ শ্রোতারা মোমের আলোয় এতটাই অভ্যস্ত যে মাঝে মাঝে যুদ্ধবিমান ফিরে গেলে, কিংবা বিদ্যুৎ ফিরে এলেও আলো জ্বালাতে চান না তারা৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
কম আয়, অনেক বেশি আনন্দ
যুদ্ধপরিস্থিতিতে কনসার্ট আয়োজনে প্রতিকূলতা অনেক৷ মৃত্যুঝুঁকি তো থাকেই, কনসার্ট আয়োজনের জন্য পর্যাপ্ত টাকাও জোটে না৷ অথচ ঝুঁকি নিয়ে সংগীত উপভোগ করতে আসা অনেকেই চান দীর্ঘক্ষণ চলুক কনসার্ট, আবার কবে আসা হবে, আদৌ সে সুযোগ আর হবে কিনা তার তো ঠিক নেই!
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
আনন্দটাই বড় বিষয়
লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক অর্কেস্ট্রার কো-ডিরেক্টর টারাস ডেমকো মনে করেন যুদ্ধের সময় মানুষকে সামান্য আনন্দে রাখাও অনেক বড় ব্যাপার৷ রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়া একটানা সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে৷ এ অবস্থায় মানুষকে তো আমাদের সহায়তা করতে হবে৷ প্রতিদিন কয়েক মিনিটের জন্যও যদি তাদের মনে একটু শান্তি দেয়া যায় তা-ও তো অনেক!’’
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
যুদ্ধের পর যুদ্ধ
১৯১৫ সাল পর্যন্ত লুহানস্কে পারফর্ম করেছে লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক৷ রুশ-সমর্থিত ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীরা’ লুহানস্ক দখল করে নেয়ার পর ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের ছোট্ট শহর সিভিয়েদনেৎস্কে চলে যায় তারা৷ গত বছর রুশ হামলায় সিভিয়েরদনেৎস্কও বিদ্ধস্ত হয়৷ তখন বাধ্য হয়েই লভিভে চলে আসে লুহান্স্ক ফিলহার্মোনিক৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
‘সংগীত আত্মবিশ্বাস জোগায়’
লভিভে কনসার্ট করতে পেরে লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক অর্কেস্ট্রার পরিচালক ইগর শাপোভালভ খুব খুশি৷তিনি মনে করেন কনসার্ট আয়োজন করে যুদ্ধের কারণে বিপর্যস্ত অনেক মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছেন, কারণ, ‘‘প্রাচীন কাল থেকে সংগীত মানুষকে নানাভাবে শক্তি জুগিয়ে আসছে৷ সংগীত অনেক মানুষকে আত্মবিশ্বাস জোগায়, অনেকের কাছে আবার সংগীত মানসিক দুরবস্থা কাটিয়ে ওঠার উপায়৷’’
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
হামলা হলে কনসার্ট বন্ধ
লভিভে রাশিয়ার বড় ধরনের হামলা খুব কম হয়েছে৷ তাই এখন কনসার্ট হচ্ছে প্রায় নিয়মিত৷ জুলাই মাসে রাশিয়ার এক হামলায় ১০ জন মারা যায়৷ ওই সময় বাধ্য হয়ে কনসার্ট বন্ধ রেখেছিল লুহানস্ক ফিলহার্মোনিক৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
6 ছবি1 | 6
জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎস জানিয়েছেন, জার্মানি ইউক্রেনকে একটি প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দেবে। অ্যামেরিকা ও নেদারল্যান্ডসও একটা করে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দিচ্ছে।
গত শীতে রাশিয়া ইউক্রেনের পরিকাঠামোর উপর একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছিল। এর ফলে বিদ্যুৎ সংকট দেখা দেয়। অনেক জায়গায় বাড়ি গরম রাখার ব্যবস্থা কাজ করেনি। ফলে মানুষ প্রবল কষ্টের মধ্যে পড়েন। এবারও তারা একই কাজ করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।