নিপ্রো নদীর জলে ভাসলো আরো এলাকা। রেডক্রস জানিয়েছে, নিপ্রোর জলে ভেসে গেছে পুঁতে রাখা প্রচুর মাইন।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনে কাখোভকায় বিস্ফোরণের ফলে বাঁধের একাংশ ভেঙে গেছে। ফলে সেখান দিয়ে নিপ্রো নদীর জল বাইরে এসে বিস্তীর্ণ এলাকা ভাসিয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার নিপ্রোর জল আরো তিন ফিট বাড়বে এবং আরো এলাকা ভাসাবে বলে ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের অধিকৃত এলাকায় ৪২ হাজার মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে খাবার জল নেই। তাই রেডক্রসের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি ত্রাণের জন্য ঝাঁপাক।
আর রেডক্রসের আশঙ্কা, এই এলাকায় প্রচুর মাইন পুঁতে রাখা হয়েছিল। সেগুলি বন্যার জলে ভেসে গেছে। এর ফল ভয়ংকর হতে পারে। সংবাদসংস্থা এএফপি-কে রেডক্রসের কর্মকর্তা এরিক টোলেফসেন বলেছেন, ''এই মাইনগুলি শুধু খেরসনের বাসিন্দাদের কাছে বিপদের কারণ তাই নয়, বাইরে থেকে যারা সাহায্য করার জন্য আসছেন, তাদের জন্যও বিপদের কারণ।''
এরিক বলেছেন, ''আগে আমরা জানতাম মাইনগুলি কোথায় আছে। এখন শুধু জানি, নদীর জলে তা নিচের দিকে চলে গেছে।''
যখন সাবওয়েই তাদের ঘর, স্কুল এবং বিনোদনকেন্দ্র
ইউক্রেন যুদ্ধ বদলে দিয়েছে তাদের জীবন৷ সব সময় যেন প্রাণ হাতে নিয়ে বাঁচতে হয় তাদের৷ যেখানে যখন রাশিয়ার হামলা সেখানে তখনই হতে পারে জীবনাবসান৷ তবুও কাটছে জীবন৷ সাবওয়েতেও চলছে বসবাস, লেখাপড়া এবং বিনোদন৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Viacheslav Ratynskyi/REUTERS
আকস্মিক হামলা
রাশিয়ার মিসাইল বা বোমা হামলার বিভীষিকা নেমে আসে যখন তখন৷ তাই ইউক্রেনের মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাবার প্রস্তুতি রাখতে হয় সব সময়৷ রাজধানী কিয়েভেও জীবন চলছে একই নিয়মে৷
ছবি: Valentyn Ogirenko/REUTERS
এসকেলেটর যেন বিশ্রামাগার
প্রাণভয়ে মেট্রোস্টেশনে আশ্রয় নিয়েছেন তারা৷ তখন এসকেলেটরের সিঁড়িই তাদের আশ্রয়স্থল, সেখানে কেটে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা৷ মিসাইল বা বোমা হামলার বিকট শব্দ না থামা পর্যন্ত কারো মেট্রো স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার উপায় নেই৷ গত ২৯ মে-র তোলা ছবি৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
শত শত মানুষের ভিড়
এই ছবিটিও গত ২৯ মে-র৷ কিয়েভে তখন আবার শুরু হয়েছে রাশিয়ার বিমান হামলা৷ মেট্রো স্টেশনটিতে তাই শত শত মানুষের ভিড়৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
সৈনিকের অসহায়ত্ব
হঠাৎ আকাশ থেকে বোমা হামলা শুরু হলে সৈন্যদেরও বিশেষ কিছু করার থাকে না৷ তাদেরও তখন ছুটতে হয় নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে৷ ২৯ মে-র ছবিটিতে ধরা পড়েছে এক মেট্রোস্টেশনে ইউক্রেনের দুই সেনা সদস্যের অসহায়ত্ব৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
বাবা-মেয়ে
এক সেনাসদস্য মেয়েকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন মেট্রোস্টেশনে৷ বাবার কাছে বসে মেয়েটি মন দিয়েছে ট্যাবে৷ বাবা নিজের টুপি পরিয়ে দিয়েছেন মেয়েকে৷ গত ৯ মার্চের ছবি৷
ছবি: Alina Smutko/REUTERS
অস্থায়ী স্কুল
রাশিয়ার হামলা শুরু হলে কখনো কখনো মেট্রোস্টেশন যে অস্থায়ী স্কুলের রূপ নেয়, ওপরের ছবিটি তার প্রমাণ৷ স্কুলের শিক্ষার্থীদের সেখানেই ক্লাস নিচ্ছেন এক শিক্ষক৷
ছবি: Viacheslav Ratynskyi/REUTERS
সাবওয়েতে কনসার্ট!
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে একটা সময় পর্যন্ত মেট্রো রেল স্টেশনে আশ্রয় নেয়া মানুষদের প্রতিটি মুহূর্ত কাটতো মহাতঙ্কে৷ তবে ধীরে ধীরে যুদ্ধের এই নির্মম বাস্তবতা মানতে শুরু করেন তারা৷ বিশেষ করে এক বছর আগে রক ব্যান্ড ইউ-টু যখন সেখানে এসে কনসার্ট করলো, ইউক্রেনবাসীরাও যেন বুঝতে শুরু করলেন যুদ্ধপরিস্থিতিতে সব সময় সব পরিস্থিতেই মানিয়ে নিতে হবে নিজেদের৷ ওপরের ছবিতে নেচে নেচে গাইছেন ইউ-টু তারকা বোনো৷
ছবি: VALENTYN OGIRENKO/REUTERS
শিল্পী-সেনার দ্বৈত সংগীত
ইউ-টু তারকা বোনোর সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে গাইছেন ইউক্রেনের এক সেনা সদস্য৷ কিয়েভের এক মেট্রোস্টেশনের এই কনসার্টের ছবিটি ২০২২ সালের ৮ মে তোলা৷
ছবি: VALENTYN OGIRENKO/REUTERS
মগ্ন শ্রোতা
পল ডেভিড হিউসন, অর্থাৎ ইউ-টু রক ব্যান্ডের ভোকালিস্ট বোনোর গান মন দিয়ে শুনছেন কিয়েভের কয়েক শ মানুষ৷ গত বছরের ৮ মে-র ছবি৷
ছবি: VALENTYN OGIRENKO/REUTERS
সাবওয়েতে ভাষাশিক্ষা
বিমান হামলা সেই কখন শুরু হয়েছে, থামার কোনো লক্ষণই নেই৷ তাই এক শিক্ষক মেট্রোরেলেই শুরু করে দিয়েছেন ভাষা শেখানোর ক্লাস৷ গত ৩ মে-র ছবি৷
ছবি: Viacheslav Ratynskyi/REUTERS
10 ছবি1 | 10
ইউক্রেনের সেনার সাদার্ন কম্যান্ডের মুখপাত্র নাতালিয়া হুমেনিউক বলেছেন, ''রাশিয়া অধিকৃত এলাকা থেকে মাইনগুলি ভেসে গেছে এবং এখন সেগুলি ভাসমান মাইনে পরিণত হয়েছে। এই মাইনগুলি ঘোর বিপদের কারণ।''
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিপ্রোর জলে ৩০টি শহর ও গ্রাম ভেসেছে। এর মধ্যে ২০টি শহর ও গ্রাম ইউক্রেনের অধিকারে আছে, বাকি ১০টি রাশিয়ার অধিকারে। ইউক্রেনের এলাকায় ১৭ হাজার ও রাশিয়ার এলাকায় ২৫ হাজার মানুষের সাহায্য দরকার। খেরসন শহরে দুই হাজার বাড়ি জলের তলায় চলে গেছে।
কারা এই বিস্ফোরণের পিছনে তা এখনো জানা যায়নি। ইউক্রেন বলছে, রাশিয়া এই কাজ করেছে। আর রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেনের সেনাই বিস্ফোরণের পিছনে আছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিন বলেছেন, ''এই কাজ বর্বরোচিত।''