ফোনে প্রায় একঘণ্টা কথা বললেন অ্যামেরিকা এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। বরফ গলার ইঙ্গিত নেই।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার কথা হয়েছে বলে প্রথম জানায় হোয়াইট হাউস। কিছুক্ষণের মধ্যে ক্রেমলিনের তরফেও প্রেস বিবৃতি জারি হয়। দুই পক্ষই জানিয়েছে, সব বিষয়ে সহমত না হলেও বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। নতুন বছরে ভিয়েনায় দুই প্রেসিডেন্টের মুখোমুখি বৈঠক হবে বলেও এদিন স্থির হয়েছে।
কী জানিয়েছে ক্রেমলিন
রাশিয়া জানিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একাধিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন। অ্যামেরিকা রাশিয়ার উপর যে নিষেধাজ্ঞাগুলি জারি করেছে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
অ্যামেরিকার বড় শত্রু কারা?
ইরানের সঙ্গে অনেকটা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে অ্যামেরিকার৷ আর চীনের সঙ্গে চলছে বাণিজ্য যুদ্ধ৷ মার্কিনিদের বিবেচনায় তাঁদের শত্রুদের চিনে নিন ছবিঘরে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
উত্তর কোরিয়া
জরিপের মাধ্যমে অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে গ্যালাপ৷ প্রতিষ্ঠানের ২০১৮ সালের জরিপে দেখা যায়, গত কয়েক বছরের মতো এবারও অ্যামেরিকার শত্রু তালিকার শীর্ষ দেশ হিসেবে উত্তর কোরিয়ার নাম আছে৷ ২০১৬ সালে ১৬ ভাগ মানুষ উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক শক্তিকে হুমকি হিসাবে বিবেচনায় নিয়েছিলেন৷ ২০১৮ সালে এসে হুমকি বিশ্বাসকারীদের সংখ্যা ৫১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রাশিয়া
অ্যামেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার শত্রুতার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের৷ এর মধ্যে উত্থান-পতনও দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে৷ ২০১৬ সালে ১৫ শতাংশ অ্যামেরিকান বলেছেন, রাশিয়া তাঁদের সবচেয়ে বড় শত্রু৷ ২০১৮ সালে গিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ শতাংশে৷
চীনের সঙ্গে অ্যামেরিকার বাণিজ্য যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনীতিকেও৷ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অর্থনৈতিক পরাশক্তি হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে চীন৷ দুই দেশের সাম্প্রতিক কিছু সিদ্ধান্ত উভয়ের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে৷ ২০১৬ সালে অ্যামেরিকার ১২ শতাংশ মানুষের বিবেচনায় চীন ছিল দেশটির সবচেয়ে বড় শত্রু৷ তবে, ২০১৮ সালে দেশটিকে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ১১ শতাংশ অ্যামেরিকান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইরান
২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত অ্যামেরিকানদের কাছে তাঁদের শত্রু তালিকায় শীর্ষে ছিল ইরান৷ পরের কয়েক বছর পরিস্থিতি ভালো হয় কিছুটা৷ তবে, ২০১৫ সালে ইরানকে নিজেদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ৯ শতাংশ অ্যামেরিকান৷ ২০১৮ সালে এমন চিন্তার মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ শতাংশে৷
ছবি: Imago/UPI//Imago/Russian Look
সিরিয়া
গ্যালাপের পাশাপাশি অ্যামেরিকার শত্রুদের তালিকা প্রকাশ করে থাকে ক্যানাডাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অন গ্লোবালাইজেশন বা সিআরজি৷ তাদের বিবেচনায় ইরান, রাশিয়া ও ফিলিস্তিনের সঙ্গে সিরিয়ায় ক্ষমতাসীনদের সখ্যের কারণে সিরিয়ার সঙ্গে অ্যামেরিকার বিরোধ হয়েছে৷ আবার অ্যামেরিকা-ইসরায়েল মৈত্রীর ক্ষেত্রে বিপরীত অবস্থানে আছে সিরিয়া৷ ভূ-রাজনৈতিক কারণে সিরিয়ার উপর আধিপত্য রাখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Elfiqi
ভেনেজুয়েলা
সিআরজি বলছে, ভেনেজুয়েলার তেলের মজুদ ও সামাজিক-রাজনৈতিক কারণে অ্যামেরিকার সঙ্গে তাঁদের বিরোধ দীর্ঘদিনের৷ যদিও বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভেনেজুয়েলা, তবুও সেই বিরোধ কমেনি মোটেও৷ দেশটির ক্ষমতাসীন মাদুরো সরকারকে হটাতে তৎপর অ্যামেরিকা৷ সম্প্রতি অ্যামেরিকার সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে দক্ষিণ অ্যামেরিকার দেশটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Miraflores
6 ছবি1 | 6
সম্প্রতি ইউক্রেন প্রসঙ্গে দুই দেশের মধ্যে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। অ্যামেরিকা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনা প্রবেশ করলে তার ফল ভালো হবে না। অ্যামেরিকা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরো কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করবে বলে হুমকি দিয়ে রেখেছে। এ প্রসঙ্গে ক্রেমলিন জানিয়েছে, পুটিন বাইডেনকে জানিয়ে দিয়েছেন, অ্যামেরিকা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করলে ফল ভালো হবে না। রাশিয়া অ্যামেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক বন্ধ করে দিলে আন্তর্জাতিক রাজনীতির ভারসাম্য নষ্ট হবে। ফলে অ্যামেরিকা ওই ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে যেন একাধিকবার চিন্তা করে।
ক্রেমলিন অবশ্য জানিয়েছে, এদিনের বৈঠকে বেশ কিছু গঠনমূলক আলোচনাও হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্কে যে ফাটল তৈরি হয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে তা দূর হবে বলেই মনে করছে তারা।
অ্যামেরিকা কী বলছে
অ্যামেরিকাও এদিনের বৈঠককে গঠনমূলক বলেই দাবি করেছে। তবে একইসঙ্গে হোয়াইট হাউস স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ইউক্রেন প্রসঙ্গে কোনোভাবেই তারা রাশিয়াকে আগ্রাসী হতে দেবে না। ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা সরানোর বিষয়ে এদিনও রাশিয়াকে সচেতন করেছে অ্যামেরিকা। সেনা না সরলে এবং রাশিয়া ইউক্রেনে সেনা পাঠালে অ্যামেরিকা যে কঠিন পদক্ষেপ নেবে, তা এদিনও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
নতুন বছরের গোড়ার দিকে ভিয়েনায় দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান মুখোমুখি বৈঠকে বসবেন বলে এদিন স্থির হয়েছে। তবে কবে সেই বৈঠক হবে, তা এখনো জানা যায়নি।