ইউক্রেন সীমান্তে সেনা বাড়াচ্ছে রাশিয়া। উদ্বেগ প্রকাশ করে রাশিয়াকে সাবধান করলো অ্যামেরিকা।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ওয়াশিংটনে বৈঠক করলেন মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিংকেন। বুধবার ব্লিংকেন জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে মস্কো যে বিপুল সেনা সমাবেশ করছে, তার উপর নজর রাখছে অ্যামেরিকা। তিনি স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, রাশিয়া কোনো আগ্রাসী মনোভাব দেখালে অ্যামেরিকা ও জার্মানি চুপ করে বসে থাকবে না। তারাও প্রতিক্রিয়া জানাবে। রাশিয়া যেভাবে সেনা সমাবেশ করেছে, তাতে অ্যামেরিকা খুবই চিন্তিত বলে ব্লিংকেন জানিয়েছেন।
ব্লিংকেন যা বলেছেন
ব্লিংকেন আরো জানিয়েছেন, ''রাশিয়া যদি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসী মনোভাব দেখায়, গ্যাস সরবরাহকে হাতিয়ার করে ইউক্রেনকে চাপ দেয়, তাহলে আমরাও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। জার্মানিও নেবে। ইউক্রেনের সুরক্ষার জন্য অ্যামেরিকা দায়বদ্ধ।''
এই বছরের গোড়ায় অ্যামেরিকা নর্ড স্ট্রিম ২ পাইপলাইন নিয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। এই পাইপলাইন রাশিয়া থেকে জার্মানি আসবে। ইউক্রেনকে পাশ কাটিয়ে পাইপলাইন গেলে তাদের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হবে। তারা গ্যাস ট্র্যানসিট ফি পাবে না।
কৃষ্ণসাগরে বৃহত্তম নৌ-মহড়া
অ্যামেরিকার নেতৃত্বে কৃষ্ণসাগরে বিশ্বের সব চেয়ে বড় নৌ-মহড়া শুরু হয়েছে। সমালোচনায় রাশিয়া।
ছবি: Konstantin Sazonchik/dpa/picture alliance
যুক্তরাজ্যের জাহাজ
গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের একটি নৌ সেনার জাহাজকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল রাশিয়া। রাশিয়ার দাবি, জাহাজটি বেআইনি ভাবে তাদের সীমান্তে ঢুকে পড়েছিল, তাই ওয়ার্নিং ফায়ার করা হয়। জাহাজের রাস্তা ধরে বোমাবর্ষণও করা হয়।
ছবি: Ministry of Internal Affairs via REUTERS
যুক্তরাজ্যের দাবি
যুক্তরাজ্যের দাবি, তাদের জাহাজটি আইনভঙ্গ করেনি। ইউক্রেনের জলপথ দিয়ে জাহাজটি যাচ্ছিল। রাশিয়ার দাবি ভিত্তিহীন।
ছবি: Ben Mitchell/AP/picture alliance
ক্রিমিয়া সমস্যা
জাহাজটি আসলে ছিল ক্রিমিয়ার কাছে। রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলে নেয়। আগে তা ছিল ইউক্রেনের। কিন্তু অ্যামেরিকা, যুক্তরাজ্য সহ একাধিক দেশ রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলকে মান্যতা দেয় না। ফলে যুক্তরাজ্যের দাবি, ক্রিমিয়ার জলসীমা ইউক্রেনের। রাশিয়ার নয়।
ছবি: DW
মার্কিন হুমকি
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে রাশিয়ার এই বিতর্কের মধ্যেই কৃষ্ণসাগরে বিশ্বের বৃহত্তম নৌ-মহড়ার আয়োজন করে বসেছে অ্যামেরিকা। এটাই রাশিয়াকে মার্কিন হুমকি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ছবি: Reuters/A. Perawongmetha
বিশাল আয়োজন
ছয়টি মহাদেশের ৩২ টি দেশ এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। ১৯৯৭ সাল থেকে কৃষ্ণসাগরে এই নৌ-মহড়া শুরু হয়েছে। তবে এবারের মহড়া সব চেয়ে বড়।
ছবি: Getty Images/AFP/STR
অসংখ্য জাহাজ
বিভিন্ন দেশের পাঁচ হাজার নৌ-সেনা, ৩২টি জাহাজ, ৪০টি বিমান এই মহড়ায় অংশ নিয়েছে। ১৮টি স্পেশাল অপারেশন ফোর্স যোগ দিয়েছে। সেখানে প্রশিক্ষিত ডাইভাররা আছেন।
ছবি: Getty Images/AFP/S. Maina
ইউক্রেনের ভূমিকা
নৌ-মহড়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ইউক্রেন। অ্যামেরিকার সঙ্গে তারাও এই মহড়ার আয়োজন করেছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে রাশিয়ার বিতর্কেও বিবৃতি দিয়েছে ইউক্রেন। জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের জাহাজ তাদের জলসীমায় ছিল।
নৌ-মহড়ার কড়া সমালোচনা করেছে পুটিন প্রশাসন। ক্রেমলিনের বক্তব্য, এই নৌ-মহড়া আসলে রাশিয়াকে খোঁচা দেওয়ার জন্য আয়োজন করা হয়েছে। প্রয়োজনে রাশিয়া জবাব দেবে।
ছবি: Sergei Karpukhin/TASS/dpa/picture alliance
ক্রিমিয়া নিয়ে রাশিয়া
ক্রিমিয়া নিয়েও রাশিয়া নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। রাশিয়ার দাবি, ক্রিমিয়া রাশিয়ার অংশ। ফলে ওই অঞ্চলের জলও তাদের আওতাধীন। সেখান দিয়ে যাতায়াত করতে হলে রাশিয়ার অনুমতি নিতে হবে, ইউক্রেনের নয়। তবে কৃষ্ণসাগরের যে অংশ নৌ-মহড়ার আয়োজন হয়েছে, তার থেকে ক্রিমিয়ার দূরত্ব খুব বেশি নয়।
ছবি: DW
9 ছবি1 | 9
এই পাইপলাইন নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে জার্মানির একটি চুক্তি হয়েছে। এই পাইপলাইনকে হাতিয়ার করে ইউক্রেনকে বিপাকে ফেলা হলে জার্মানিও রাশিয়ার বিরুদ্ধাচরণ করবে।
ইউক্রেনের অভিযোগ
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ, রাশিয়া ইতিমধ্যেই গ্যাসকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে। তাই অ্যামেরিকার উচিত রাশিয়াকে কড়াভাবে সতর্ক করে দেয়া। তিনি জানিয়েছেন, ইউক্রেন ও অ্যামেরিকার মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ট হওয়ার অর্থ কাউকে আক্রমণ করা নয়। রাশিয়াকে থামানোর উপায় হলো, ক্রেমলিনকে এটা বুঝিয়ে দেয়া যে, ইউক্রেন যথেষ্ট শক্তিশালী।