ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর বাংলাদেশ সতর্ক প্রতিক্রিয়া দিয়েছে৷ দুই পক্ষই যেন সংযত থাকে এবং যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তৎপর হয় এমন কথাই বলছে বাংলাদেশ৷ এই অবস্থান কী ঠিক আছে? কূটনৈতিক প্রস্তুতিই বা কতটা ছিল বাংলাদেশের?
বিজ্ঞাপন
এসব বিষয় নিয়ে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেছেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের সাবেক প্রধান মুন্সি ফয়েজ আহমেদ৷
ডয়চে ভেলে : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান কী ঠিক আছে?
মুন্সিফয়েজআহমেদ : আমার তো মনে হয় ঠিকই আছে৷ বাংলাদেশ হৈ চৈ করছে না৷ কিন্তু যখন কথা বলছে, তখন তো বলছে দুই পক্ষই যেন সংযত থাকে এবং যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তৎপর হয়৷ এটাই সঠিক অবস্থান৷ আমি মনে করি, যারা এই পক্ষ বা ওই পক্ষকে সমর্থন করছে সেটা সঠিক নয়৷ যুদ্ধ একদিন বেশি চললে তাতে মানুষেরই ক্ষতি হয়৷ মানুষের জীবন যায়, সম্পদের ক্ষতি হয়৷ কীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করা যায়, সেটাই সবার চেষ্টা করা উচিত৷ বাংলাদেশ যেটা করে, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়, এটা যদি সবাই গ্রহণ করতে পারে তাহলে দীর্ঘস্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব৷ আমরা যদি কাউকে না কাউকে প্রতিদিন শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করি তাহলে তো আমরা যুদ্ধের ব্যবস্থা করেই রাখলাম৷ তাহলে তো সে যুদ্ধ অবধারিতভাবে হবে এবং বহু মানুষের জীবননাশ হবে, সম্পত্তির ক্ষতি হবে৷ ফলে বাংলাদেশ কোন পক্ষকেই উৎসাহ দিতে চায় না, তারা চায় যুদ্ধটা বন্ধ হোক৷
‘জার্মানি অনেক বছরের নীতিগুলো থেকে সরে আসছে, এটা তো ভালো লক্ষণ না’
দেশের কূটনীতিতে এই মুহূর্তে কোনো ঘাটতি দেখছেন?
আমাদের কূটনীতি হচ্ছে দেশের স্বার্থ রক্ষা করা৷ যুদ্ধ লাগবেই সেটা তো আর আমরা আগে থেকে ধরে নিতে পারি না৷ যতদিন যুদ্ধ লাগেনি, ততদিন আমরা বলার চেষ্টা করেছি, তোমরা যুদ্ধ করো না৷ কীভাবে মিটমাট করা যায়, সবাই সেই চেষ্টা করো৷ এখানে আমার ব্যক্তিগত মত হলো, প্রথম থেকেই রাশিয়া চায়, ইউক্রেনে যেন ন্যাটোর সম্প্রসারণ না ঘটে৷ এবং ইউক্রেন যেন নিরপেক্ষ থাকে৷ ইউক্রেন যদি নিরপেক্ষ থাকত, তা হলে কার ক্ষতি হতো, কীসের ক্ষতি হতো? সেটা তো আমি বুঝি না৷ আমি মনে করি, তারা নিরপেক্ষ থাকলে তাদেরও লাভ, অন্যদেরও লাভ৷ সুইজারল্যান্ড পৃথিবীতে একটা সম্মানজনক দেশ কিনা? নিরপেক্ষতার কারণেই তো তারা সেই সম্মানটা পেয়েছে৷ আমার মনে হয়, কী হলে সব পক্ষের মুখ রক্ষা হয় এবং যুদ্ধটা থামানো যায় সেই চিন্তাই সবার করা উচিৎ৷ এক পক্ষকে আমরা একঘরে করে দিচ্ছি, তাতে সে মরিয়া হয়ে উঠবে, সে তখন কামড় দেবে সেটাই তো স্বাভাবিক৷ কারো পিঠ যদি দেওয়ালে ঠেকে যায়, সে তখন ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করবেই৷ তাহলে সে অবস্থানে কেন আমরা কাউকে নিয়ে যাব? শত্রু-শত্রু, যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা বন্ধ করে যার যেটায় কমতি আছে, সেটা তাকে দিয়ে, আর যার যেটা বেশি আছে সেটা সবার সঙ্গে শেয়ার করে নিক, এভাবেই কিন্তু সভ্যতা এগিয়ে যেতে পারে৷
ইউক্রেনে বাংলাদেশিদের কী আগে ফিরিয়ে আনা যেতো না?
আগে কেন ফিরিয়ে আনতে হবে? যুদ্ধ যে লাগবেই সেটা তো অবধারিত ছিল না৷ অনেকেই চেষ্টা করেছে যুদ্ধ লাগানোর জন্য৷ কেবল যারা অস্ত্র তৈরি আর বিক্রি করে তাদেরই কেবল স্বার্থ আছে যুদ্ধে৷ আর কারও কোন স্বার্থ এখানে নেই৷
যুদ্ধ থেকে বাঁচতে ইউক্রেন থেকে প্রায় তিন থেকে পাঁচশ বাংলাদেশি মেডিকা সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে ঢুকেছেন৷ মঙ্গলবার বাংলাদেশিদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করে পোল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস৷ কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশিও এগিয়ে এসেছেন৷
ছবি: Arafatul Islam/DW
সাড়ে ছয় লাখের বেশি মানুষ ইউক্রেন ছেড়েছে
যুদ্ধ থেকে বাঁচতে ইউক্রেনের মানুষ দেশ ছাড়ছে৷ তাদের বেশিরভাগই পোল্যান্ডে ঢুকছেন৷ পোল্যান্ড-ইউক্রেন সীমান্তের সবচেয়ে ব্যস্ত ক্রসিং হচ্ছে মেডিকা৷ এই সীমান্ত দিয়ে ইউক্রেনের নাগরিক ছাড়াও ইউক্রেনে বাস করা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ অনেক দেশের নাগরিক পোল্যান্ডে ঢুকছেন৷
ছবি: Arafatul Islam/DW
বাসের ব্যবস্থা
মেডিকা সীমান্তে আসা বাংলাদেশিদের জন্য মঙ্গলবার বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করে বাংলাদেশ দূতাবাস৷ বাসটি আজ বুধবার পর্যন্ত সেখানেই থাকার কথা৷ সীমান্ত পেরিয়ে আসা বাংলাদেশিরা বাসটিতে বিশ্রাম ও আশ্রয় নিতে পারছেন৷ সেখানে তাদের খাবারসহ বিভিন্ন কিছু সরবরাহ করা হচ্ছে৷
ছবি: Arafatul Islam/DW
হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ
বাংলাদেশিদের দেখাশোনা করতে মেডিকায় উপস্থিত আছেন বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা অনির্বাণ নিয়োগী (বামে)৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি মঙ্গলবার জানান, ‘‘আমাদের কয়েকটা হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ আছে৷ হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে এবং ব্যক্তিগতভাবে সবাই আমাকে জানাচ্ছেন৷ মোবাইলে যখনই আমরা তথ্য পাচ্ছি, কারো সহায়তা দরকার, সঙ্গে সঙ্গে আমরা নিজেরাই সেখানে যাচ্ছি বা রিসোর্স মোবিলাইজ করছি৷’’
ছবি: Arafatul Islam/DW
প্রবাসীরাও এগিয়ে এসেছেন
পোল্যান্ডে অবস্থানরত বাংলাদেশিরাও স্বদেশিদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন৷ যেমন হামিম নামের এক ব্যক্তি ডয়চে ভেলেকে মঙ্গলবার জানান, তিনি চাকরি থেকে ছুটি নিয়ে ৬০০ কিলোমিটার দূর থেকে খাবার, পানি নিয়ে এসেছেন৷ ইউক্রেন থেকে আসা বাংলাদেশিরা যেন বুঝতে পারেন সেজন্য তিনি পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন৷ মানবিক ও নৈতিক কারণে তিনি সেখানে গিয়েছেন বলে জানান৷ দূতাবাস ওয়ারশোতে বাংলাদেশিদের থাকার ব্যবস্থা করেছে বলে জানান হামিম৷
ছবি: Arafatul Islam/DW
বাংলাদেশিদের আশ্রয় দান
পোল্যান্ডে বাস করা বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মঙ্গলবার জানান, পোল্যান্ডে বাস করা বাংলাদেশিরা ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ডে যাওয়া ২৫ থেকে ৩০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছেন৷ নিজের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি নিয়ে মেডিকায় গিয়েছেন মেহেদী৷ ইউক্রেন থেকে আসা বাংলাদেশিদের পোল্যান্ড সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহায়তা করেন তিনি৷
ছবি: Arafatul Islam/DW
রেলস্টেশনে আশ্রয়
মেডিকা সীমান্তের পশ্চিমে অবস্থিত একটি শহর শেমিসেল৷ সেখানকার রেলস্টেশনে আশ্রয় নিয়েছেন অনেক শরণার্থী৷ তাদের বিস্কুট, পানি, মিষ্টি জাতীয় খাবার ছাড়াও গরম খাবার ও অন্যান্য খাবার দিয়ে সহায়তা করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা৷ শরণার্থীরা যেন বিশ্রাম নিতে পারেন সেজন্য কিছু বিছানারও ব্যবস্থা করা হয়েছে৷
ছবি: Arafatul Islam/DW
দীর্ঘপথ হাঁটা
সীমান্ত পার হওয়ার পথে দীর্ঘ যানজটের কারণে শরণার্থীদের অনেকটা পথ হেঁটে পার হতে হয়েছে৷ প্রায় ৩৫-৪০ কিলোমিটার পথ হাঁটতে হয়েছে বলে ডয়চে ভেলে বাংলার প্রতিবেদক আরাফাতুল ইসলামকে জানিয়েছেন কয়েকজন বাংলাদেশি৷ এদের একজন মুজাহিদুল এতটা পথ হাঁটতে গিয়ে তার পায়ে ফোসকা পড়ার বিষয়টি দেখিয়েছেন৷
ছবি: Arafatul Islam/DW
ওয়ারশোতে যুদ্ধের প্রভাব
পোল্যান্ডের রাজধানীতে থাকেন পার্থ প্রতীম মজুমদার৷ তিনি বলছেন, ‘‘ওয়ারশোর বাসিন্দারা ইউক্রেনীয়দের প্রতি সহানুভূতিশীল৷ যুদ্ধের প্রতিবাদে সেখানে বিক্ষোভ হয়েছে৷ অনেকে শরণার্থীদের জন্য রিলিফ সংগ্রহের চেষ্টা করছেন৷’’ তবে অল্প সংখ্যক ওয়ারশোবাসী ইউক্রেন যুদ্ধ পোল্যান্ডেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে অতিরিক্ত খাবার জোগাড় করে রাখছেন, এটিএম থেকে টাকা তুলে রাখছেন বলেও জানান পার্থ৷
ছবি: Arafatul Islam/DW
8 ছবি1 | 8
দুই পক্ষের একটা উত্তেজনা তো আগে থেকেই ছিল৷ আগে থেকে যদি আমাদের প্রস্তুতিটা থাকত, তাহলে কী আরও দ্রুত বাংলাদেশীদের নিরাপদ জায়গায় নেওয়া যেত না?
ইউক্রেনে যে বাংলাদেশিরা আছে তাদের সহযোগিতায় তো দূতাবাস, সরকার এবং পোল্যান্ড ও বেলারুশের নাগরিকেরা এগিয়ে আসছে৷ মোটামুটি একটা স্বস্তিমূলক ব্যবস্থাই তো তাদের জন্য হচ্ছে৷ কেউ কেউ আছে তাদের অন্য স্বার্থ আছে, কেউ বিয়ে করেছে, কারও ব্যবসা আছে তারা হয়ত বেরিয়ে আসতে দেরি করছে৷ সুযোগ পেলে তারাও বেরিয়ে আসবে৷ কাউকে যে বাধা দেওয়া হচ্ছে তাও তো নয়৷ বা যারা যুদ্ধ করছে তারা যে কাউকে বেরিয়ে যেতে বাধা দিচ্ছে তাও নয়৷ কেউ যদি যুদ্ধের মাঝখানে পড়ে যায়, তার তখন ক্ষতি হতে পারে৷ আমরা যতদূর জানলাম, ভারতের একজন স্টুডেন্ট যুদ্ধের মধ্যে পড়ে মারা গেছে৷ সেই দিক থেকে বাঙালিরা একটা স্বস্তিমূলক অবস্থার মধ্যেই আছে৷ এটা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করার কিছু নেই৷
কৌশলগতভাবে এই যুদ্ধকে আপনি কীভাবে ব্যাখা করবেন?
একটা দেশকে দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ এখন তারা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য মরিয়া হয়ে যুদ্ধ করছে৷ সমস্ত দোষ তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ কিন্তু তারা যে এতদিন চিৎকার করল আমাদের নিরাপত্তা দাও৷ সে ব্যবস্থা তো কেউ করেনি৷ রাশিয়া কী ইউরোপের বাইরের কোন দেশ৷ সোভিয়েত ইউনিয়নের যখন পতন হলো তখন তো সবাই আশা করেছিল, ইউরোপ তাকে কাছে টেনে নেবে৷ আমরা যেটা বলি, অর্ন্তভুক্তিমূলক সহযোগিতা৷ সেটা তো হলো না৷ উল্টো তাদের দূরে ঠেলে দেওয়া হল৷ যুদ্ধ নিশ্চিত করার জন্য এর চেয়ে ভালো উপায় তো ছিল না৷ এখানে মার্কিন সামরিক কমপ্লেক্সের স্বার্থ আছে, কিন্তু মার্কিন সাধারণ নাগরিকদের কোন স্বার্থ তো নেই৷ শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র না, যাদেরই সামরিক কমপ্লেক্স আছে, অস্ত্র বিক্রির ব্যবসা আছে তারা তো যুদ্ধ জিইয়ে রাখতে চাইবেই৷
এই যুদ্ধের পরিণতি কী হতে পারে?
এই যুদ্ধে একটা পরিণতি তো আমরা দেখতে পাচ্ছি, আপনি যে দেশের গণমাধ্যমে কাজ করেন সেই জার্মানি যুদ্ধ এবং যুদ্ধাস্ত্রের ব্যাপারে তাদের অনেক বছরের নীতিগুলো থেকে সরে আসছে৷এটা তো ভালো লক্ষণ না৷ এখন একটা উত্তেজনা আছে, মানুষ কিছু মনে করছে না৷ কিন্তু একটা সময় তো মানুষ চিন্তা করবে এটা কী ঠিক ছিলো? যেমন জাপান যুদ্ধের ব্যাপারে তাদের যে নীতি ছিল সেখান থেকে সরে এসেছে৷
ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিচ্ছে যারা
ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে৷ রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে জ্যাভলিন অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক উইপন ও স্টিঙ্গার মিসাইল চেয়েছে ইউক্রেন৷
ছবি: Efrem Lukatsky/AP/dpa/picture alliance
যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনকে আরও অতিরিক্ত ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র দেয়ার নির্দেশ দেন৷ এর মধ্যে জ্যাভলিন (ছবি) এবং স্টিঙ্গারও রয়েছে৷ এছাড়া সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের জন্য বর্ম, ছোট অস্ত্র, অ্যান্টি-আর্মার থাকার কথা জানিয়েছে পেন্টাগন৷ ইতিমধ্যে জার্মানিতে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের সংগ্রহশালা থেকে সেগুলো পোল্যান্ড হয়ে ইউক্রেনে পাঠানো হচ্ছে৷
ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইইউ নেতারা কিয়েভে ৪৫০ মিলিয়ন ইউরোর অস্ত্র সরবরাহ করতে একমত হয়েছেন৷
ছবি: John Thys/AFP/Getty Images
জার্মানি
সংঘাত চলছে এমন জায়গায় এতদিন অস্ত্র না পাঠানোর নীতি অনুসরণ করত জার্মানি৷ তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনে এক হাজার অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক উইপন ও ৫০০ স্টিঙ্গার সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি৷ এছাড়া সোভিয়েতদের তৈরি ২,৭০০ ‘স্ট্রেলা’ অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট মিসাইলও (ছবি) পাঠানোর অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে৷
ছবি: gemeinfrei
ফ্রান্স
ইউক্রেনের অনুরোধে ডিফেন্সিভ অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট ও ডিজিটাল উইপন পাঠিয়েছে ফ্রান্স৷
ছবি: Reuters/P. Wojazer
যুক্তরাজ্য
গত জানুয়ারিতে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস ইউক্রেনকে হালকা অ্যান্টি-আর্মার ডিফেন্সিভ উইপন সিস্টেম দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন৷ ২৩ ফেব্রুয়ারি ডাউনিং স্ট্রিট ‘লিথাল ডিফেন্সিভ উইপন’ দেয়ার অঙ্গীকার করে৷ ছবিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনকে ইউক্রেনের পতাকার রংয়ে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Jeff J Mitchell/Getty Images
পোল্যান্ড
কয়েক হাজার শেল ও আর্টিলারি অ্যামুনিশন, অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট মিসাইল, লাইট মর্টার (প্রতীকী ছবি) এবং শত্রুপক্ষের অবস্থান জানার জন্য ড্রোন ও অস্ত্র পাঠানোর অঙ্গীকার করেছে পোল্যান্ড৷
ছবি: Sgt Paris/Capers /UPI Photo/imago
সুইডেন, ডেনমার্ক
নিরপেক্ষ থাকার নীতি ভেঙে পাঁচ হাজার ‘এটি৪ অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক উইপন’ (ছবি) পাঠাচ্ছে সুইডেন৷ ডেনমার্ক পাঠাচ্ছে দুই হাজার ৭০০টি অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক উইপন৷
ছবি: StockTrek Images/imago images
নরওয়ে
নরওয়ে হেলমেট ও বর্ম ছাড়া প্রায় দুই হাজারের মতো এম৭২ অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক উইপন (ছবি) পাঠাচ্ছে৷
ছবি: U.S. Marines/ZUMA Wire/imago images
এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া
এস্তোনিয়া জ্যাভলিন মিসাইল এবং লিথুয়ানিয়া ও লাটভিয়া স্টিঙ্গার সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল দিচ্ছে৷ ১২ ফেব্রুয়ারির এই ছবিতে লিথুয়ানিয়ার সৈন্যদের ইউক্রেনে পাঠানোর জন্য স্টিঙ্গার মিসাইল ও বর্ম বিমানে তুলতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Lithuanian Ministry of National Defense/AP/picture alliance
ফিনল্যান্ড
দেড় হাজার সিঙ্গেল শট অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক উইপন, আড়াই হাজার অ্যাসল্ট রাইফেল (প্রতীকী ছবি), দেড় লাখ রাউন্ড গুলি পাঠাচ্ছে ফিনল্যান্ড৷
ছবি: Bernd Weißbrod/dpa/picture alliance
নেদারল্যান্ডস
২০০টি স্টিঙ্গার এয়ার ডিফেন্স রকেট (ছবি) এবং ৪০০ রকেটসহ ৫০টি অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক উইপন পাঠানো হবে বলে ২৬ ফেব্রুয়ারি সংসদকে জানায় সরকার৷
ছবি: LEILA GORCHEV/AFP/Getty Images
বেলজিয়াম
আরও তিন হাজার অটোমেটিক রাইফেল (প্রতীকী ছবি), ২০০ অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক উইপন ও ৩,৮০০ টন জ্বালানি পাঠাচ্ছে৷
কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেনে চার হাজার মর্টার, ৩০ হাজার পিস্তল, সাত হাজার অ্যাসল্ট রাইফেল, তিন হাজার মেশিন গান, অনেকগুলো স্নাইপার রাইফেল (প্রতীকী ছবি) ও দশ লাখ বুলেট পাঠানো হবে বলে শনিবার জানিয়েছিল দেশটি৷
ছবি: Bundeswehr/Walter Wayman
14 ছবি1 | 14
বাংলাদেশে কী প্রভাব পড়তে পারে?
মূলত, আমাদের যেসব লোক সেখানে আছে তাদের উপর প্রভাব পড়ছে৷ বড় আকারে যেটা হচ্ছে অর্থনৈতিক প্রভাব৷ যেমন তেলের দাম বেড়ে গেছে, সেটা আমাদের প্রভাবিত করতে পারে৷ এছাড়া গম, সার এগুলোর দাম বেড়ে যেতে পারে৷ সাপ্লাই চেইন বাধাগ্রস্থ হতে পারে৷ রাশিয়ায় আমরা যথেষ্ট রপ্তানি করছি, সেখানে সমস্যা হতে পারে৷ রাশিয়ার সঙ্গে যেসব প্রজেক্ট আছে সেগুলো বাধাগ্রস্থ হতে পারে৷ সাধারণভাবে সারা পৃথিবীতে যদি ব্যবসা বাণিজ্যে মন্দা দেখা যায়, ক্ষতি হয় এবং জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যেতে পারে৷ সেটার নেতিবাচক প্রভাব তো আমাদের উপর পড়বেই৷
ইউক্রেন যদি রাশিয়ার আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে ইউরোপে এর প্রভাব কেমন হবে?
আমি তো ওইদিকে যেতেই চাই না৷ ইউক্রেনে তো এক সময় রাশিয়ার প্রভাব ছিলই, এখন সেখান থেকে তারা বের হয়ে আসছে৷ তারা যদি নিরপেক্ষ থাকে তাহলে তো সেখান থেকে বের হওয়া সম্ভব৷ সেই চেষ্টাটা কেন তারা করছে না৷ তার বন্ধুদেশগুলোও তাকে সেইখানে যাওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করছে না কেন? আমার কাছে সেটা আশ্চর্য্য লাগে৷ যদি তাদের খারাপ অবস্থা হয়, যদিও আমার মনে হয় ততদূর গড়াবে না৷ তাহলে সেটাও শেষ অবস্থা নয়৷ কোন দেশ যদি জোর করে কারও উপর প্রভাব বিস্তার করে সেই প্রভাব বেশিদিন টেকে না৷
ইউক্রেনে ব্যর্থ হলে পুতিন বা রাশিয়া কতোটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে?
রাশিয়ার ক্ষতি করার জন্য তো সবাই উঠে পড়ে লেগেই আছে৷ আমার মনে হয় না, কেউ এমন কিছু করবে যে, রাশিয়াকে ভেঙে চুরে ধ্বংস করে দেবে৷ সেটা করার চেষ্টা মনে হয় কেউ করবে না৷ যদি তেমনই হয়, তাহলে রাশিয়া মনের মধ্যে সেটা পুষে রাখবে এবং একটা সময় তারা ব্যবস্থা নেবে৷ তখন আবার যুদ্ধের সম্ভাবনা থেকে যাবে৷ সব পক্ষ খুশি থাকে এমন একটা সমাধান বের করতে পারলে সেটা সবার সঙ্গে মঙ্গলজনক হবে৷