সাত ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয়েছে চীন এবং অ্যামেরিকার। রাশিয়াকে সাহায্য করলে চীনকে কড়া শাস্তির হুমকি দিল অ্যামেরিকা।
বিজ্ঞাপন
সোমবার রোমে প্রায় সাত ঘণ্টা বৈঠক হয়েছে মার্কিন কর্মকর্তা জেক সুলিভানের সঙ্গে চীনের কর্মকর্তা ইয়াং জিয়েছির। সুলিভান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা। ইয়াং চীনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা।
ওয়াশিংটন জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে 'ইনটেন্স' বা টান টান আলোচনা হয়েছে। রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযান নিয়েই মূলত কথা হয়েছে। এবং সেখানে অ্যামেরিকা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, চীন যদি রাশিয়াকে সাহায্য করে, তাহলে তার ফল মারাত্মক হবে। চীনকে কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হবে। বৈঠক নিয়ে ওয়াশিংটনে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, 'বেজিং যেভাবে মস্কোকে সাহায্য করছে, তা নিয়ে আমাদের স্পষ্ট অবস্থান চীনকে জানিয়েছি। এর ফলে শুধু অ্যামেরিকার সঙ্গে নয়, পিআরসি-র সঙ্গে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে পৌঁছাবে।' পিআরসি বলে এখানে পিপলস রিপাবলিক অফ চায়না বোঝানো হয়েছে।
ইউক্রেন রাশিয়ার স্বাভাবিক সম্পর্কের অতীত
রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের সম্পর্কের টানাপোড়েন দীর্ঘদিনের৷ তারপরও দুই দেশের মানুষের মধ্যে ছিল যোগাযোগ, কখনও কখনও সরকারের মধ্যেও ছিল স্বাভাবিক সম্পর্ক৷ দেখুন তেমনই কিছু ছবি৷
ছবি: Alexei Nikolsky/TASS/picture alliance
ইয়ানুকোভিচের সময়
চার মাসের রাজনৈতিক সংকটের অবসান ঘটিয়ে ২০০৬ সালে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী হন ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ৷ পরে ২০১০ সালে নির্বাচিত হন প্রেসিডেন্ট৷ তার সঙ্গে ছিলে পুটিন সরকারের নিবিড় সম্পর্ক৷ ছবিতে ২০১০ সালে রাশিয়ার তখনকার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের সঙ্গে বন্দর সংক্রান্ত একটি চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে দেখা যাচ্ছে তাকে৷ ২০১৪ সালে বিক্ষোভের মুখে ইয়ানুকোভিচ ক্ষমতা ছেড়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন৷
ছবি: AP
ইউক্রেনে পুটিন
২০০৯ সালে রাশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুটিন ও ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া টিমোশেঙ্কোকে করমর্দন করতে দেখা যাচ্ছে৷ রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট পুটিন সেসময় জ্বালানি সংক্রান্ত এক আলোচনার জন্য ইউক্রেনে আসেন৷
ছবি: AP
জ্বালানি চুক্তি
২০০৯ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গ্যাজপ্রমের সঙ্গে চুক্তি করে ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাফগ্যাজ৷ ছবিতে মস্কোতে প্রতিষ্ঠান দুইটির তখনকার দুই প্রধানকে চুক্তিপত্র বিনিময় করতে দেখা যাচ্ছে৷ পেছনে দাঁড়িয়ে রাশিয়ার তখনকার প্রধানমন্ত্রীর ভ্লাদিমির পুটিন ও ইউক্রেনের ইউলিয়া টিমোশেঙ্কো৷
ছবি: AP
খেলার ময়দান
খেলাধুলায় রাশিয়া আর ইউক্রেনের অ্যাথলিটরা মুখোমুখি হয়েছেন বারবার৷ এই ছবিটি ২০০৯ সালের৷ ইউরোপীয়ান ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে ইউক্রেনের স্বর্ণজয়ী ইহর শেমেচকো হাত ধরে আছেন রুশ ব্রোঞ্জজয়ী ইভগেনি পিসারেভ (ডানে) এবং জার্মানির সিলভারজয়ী আলমির ফেলাগিকের (বামে)৷
ছবি: picture-alliance/dpa
অলিম্পিকে প্রতিপক্ষ
২০১৮ সালের শীতকালীন অলিম্পিকে ফ্রিস্টাইল স্কিয়ার ইভেন্টে স্বর্ণপদক জয় করেন ইউক্রেনের আলেক্সান্ডার আব্রামেঙ্কো৷ ছবিতে তার সঙ্গে ইউক্রেনের পতাকা জড়িয়ে ফটোসেশনে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে ব্রোঞ্জজয়ী রাশিয়ার ইলিয়া বুরোভকে৷
ছবি: picture-alliance/Sputnik/R. Sitdikov
জেলেনস্কির সঙ্গে পুটিন
বর্তমান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ভালো নয়৷ যুদ্ধ থামাতে সম্প্রতি তিনি পুটিনকে তার সঙ্গে বৈঠকে বসার আহ্বান জানালেও সাড়া পাননি৷ তবে দুই নেতা এর আগে এক টেবিলে বসেছেন৷ যেমনটা এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে৷ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পূর্ব ইউক্রেন সংকট নিয়ে ফ্রান্সে চতূর্থ নরমান্ডি বৈঠক শেষের সংবাদ সম্মেলনে ফরাসী প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ ও জার্মানির তখনকার চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের সঙ্গে জেলেনস্কি ও পুটিন৷
ছবি: Alexei Nikolsky/TASS/picture alliance
6 ছবি1 | 6
অ্যামেরিকার অভিযোগ, ইউক্রেন অভিযানে রাশিয়ার দিকে সরাসরি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে চীন। রাশিয়া তাদের কাছে সেনা এবং অস্ত্র সাহায্য চেয়েছে। যদিও চীন এবং রাশিয়া দুই দেশই এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। চীনের বক্তব্য, অ্যামেরিকা এবং ন্যাটো ঠান্ডা লড়াইয়ের সময়ের মনোভাব নিয়ে বসে আছে। সে কারণেই সংঘাত বাড়ছে। অ্যামেরিকা সে কথা মানতে নারাজ। তবে সোমবার চীন এবং অ্যামেরিকার বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
সাবেক ডেপুটি প্রধানমন্ত্রীর বোমা
ক্রেমলিনের সাবেক ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী এবং একসময়ের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা আরকাদি দভরকোভিচও ইউক্রেন অভিযান নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। তিনি সরাসরি এটিকে 'যুদ্ধ' বলে ঘোষণা করেছেন। বস্তুত, রাশিয়া একে যুদ্ধ বলছে না। বিশেষ সেনা অপারেশন বলছে। দভরকোভিচ জানিয়েছেন, কোনো যুদ্ধই অভিপ্রেত নয়। সাম্প্রতিক সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ইউক্রেনের মানুষের পাশে আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এই প্রথম রাশিয়ার কোনো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা প্রকাশ্যে এমন কথা জানালেন।