পোল্যান্ডের চাষিদের অবরোধ সরানোর উদ্যোগ
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪রাশিয়ার হামলার দুই বছর পূর্তির ঠিক আগে আরো এক সমস্যার মুখে পড়েছে ইউক্রেন৷ অ্যামেরিকার সহায়তা থমকে গেলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছে৷ অথচ সেই রাষ্ট্রজোটের সঙ্গেই সংঘাতের আশঙ্কা ইউক্রেনের জন্য পরিস্থিতি আরো কঠিন করে তুলতে পারে৷
রাশিয়ার হামলার কারণে ইউক্রেন আর সহজে আগের মতো জাহাজের মাধ্যমে কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারছে না৷ কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনের বন্দরগুলিও হামলার মুখে পড়ছে৷ ফলে পোল্যান্ড ও রুমেনিয়ার মতো দেশের সঙ্গে স্থলসীমানা অতিক্রম করে কৃষিপণ্য রপ্তানি করতে বাধ্য হচ্ছে ইউক্রেন৷ সেইসঙ্গে ইউরোপের বাজারেও কৃষিপণ্য পাঠাচ্ছে সে দেশ৷ উল্লেখ্য, হামলার মুখে ইউক্রেনকে সাহায্য করতে ইইউ ২০২২ সালে সে দেশ থেকে আমদানির উপর শুল্ক তুলে নিয়েছিল৷ গত মাসে সেই সিদ্ধান্তের মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব এনেছে ইইউ কমিশন৷
ইইউ দেশগুলির তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম দামের সেই কৃষিপণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে পোল্যান্ডের চাষিদের রোষ বাড়ছে৷ তারা ইউক্রেন সীমান্ত অবরোধ করে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন৷ ইইউ কমিশনের সাম্প্রতিক কৃষি নীতির বিরুদ্ধেও রোষ দেখাচ্ছেন তাঁরা৷ পোল্যান্ডের সঙ্গে ইউক্রেনের স্থলসীমান্ত সামরিক সহায়তা পাঠানোর ‘লাইফলাইন' হয়ে উঠেছে৷ ফলে সেখানে অবরোধ পরিস্থিতি কঠিন করে তুলতে পারে৷ বর্তমানে কয়েক হাজার ট্রাক আটকে রয়েছে৷ মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা প্রথম বার বাস ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটিয়েছে৷এমন সংঘাত এড়াতে ইইউ তৎপর হয়ে উঠছে৷ সদস্য দেশগুলি বুধবার নিজস্ব চাষিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ সম্পর্কে ঐকমত্যে এসেছে৷ এর আওতায় ইইউ বাজারে গুরুত্বপূর্ণ বিঘ্ন ঘটলে দ্রুত পালটা ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা যাবে৷ বিশেষ করে পোলট্রি, ডিম ও চিনির মতো সংবেদনশীল পণ্যের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আমদানির পরিমাণ সীমিত রাখতে ‘এমার্জেন্সি ব্রেক' প্রয়োগ করা যাবে৷ তবে পোল্যান্ডের মতো ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী দেশ এখনো এই প্রস্তাব পুরোপুরি মেনে নিচ্ছে না৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে দরকষাকষির পর সেই আইন অনুমোদন করা সম্ভব হবে৷
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি রাশিয়ার হামলা মোকাবিলার মাঝে এমন সংকট নিয়ে উদ্বিগ্ন৷ সমস্যা মেটাতে তিনি পোল্যান্ডের সরকারের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, এমন সংকটে শুধু রাশিয়ার সুবিধা হচ্ছে৷ জেলেনস্কি প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিহালের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল পোলিশ সীমান্তে পাঠাতে চান৷ বুধবার তিনি ইউক্রেনীয় ও পোলিশ ভাষায় এক ভিডিও বার্তায় সেই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন৷ শনিবার রাশিয়ার হামলার দুই বছর পূর্তির আগেই তিনি মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের পাঠিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সীমান্তে অবরোধের সমস্যার সমাধান করতে চান৷ জেলেনস্কি পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যেও সীমান্তে এসে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন৷ ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি নিজেও সীমান্তে গিয়ে আলোচনা চালাতে প্রস্তুত৷ জেলেনস্কির মতে, সেই আলোচনায় ইইউ কমিশনের প্রতিনিধিদের থাকাও জরুরি৷
এসবি/কেএম (এএফপি, ডিপিএ)