1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ

৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২

১৯৭২ সালে গৃহীত হয় ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ চুক্তি৷ আজ এই ‘বিশ্ব সম্পদ'এর তালিকায় কোলোনের ক্যাথিড্রাল থেকে আলতাই পর্বতমালা, অনেক কিছুই স্থান পেয়েছে৷ কিন্তু ইউনেস্কো'র তালিকায় ওঠার কোনো ব্যবহারিক উপযোগিতা আছে কি?

ছবি: picture-alliance/Huber

বিগত শতাব্দীর ষাটের দশক৷ মিশরে তখন আসোয়ান বাঁধ তৈরি হচ্ছে এবং তার ফলে আবু সিম্বেল'এর তিন হাজার বছরের বেশি পুরনো মন্দিরটা জলমগ্ন হতে চলেছে৷ সারা বিশ্বে এই নিয়ে একটা ক্ষোভ এবং প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায়৷ ঐ পাথরের মন্দিরটিকে খণ্ড খণ্ড করে কেটে, আরো উঁচু একটি স্থানে নিয়ে গিয়ে জোড়া দেওয়ার জন্য আট কোটি ডলার সংগৃহীত হয়৷

আবু সিম্বেল'কে বাঁচানোর সেই অভূতপূর্ব প্রচেষ্টা ছাড়া ১৯৭২ সালে ইউনেস্কো'র ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ চুক্তি জন্ম নিতো কিনা সন্দেহ৷ চুক্তির পিছনে মূল চিন্তা ছিল, পৃথিবীতে এমন বহু আশ্চর্য স্থান আছে, যাদের মূল্য সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রটির সে দায়িত্ব বহন করার ক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যায়৷ ১৯৭৮ সালে এ'ধরনের ১২টি স্থানের নাম করা হয়, যার মধ্যে জার্মানির আখেন শহরের ক্যাথিড্রালটিও ছিল৷ ছিল ইথিওপিয়ার লালিবেলা'য় পাথরে খোদা গির্জা৷ আবার প্রকৃতির ক্রীড়াঙ্গণ থেকে গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ কিংবা উত্তর অ্যামেরিকার ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্ক৷

প্যারিসে ইউনেস্কোর সদর দপ্তরছবি: picture alliance/dpa

ধারণাটা হল, এই সব স্থাপনা এবং স্থানগুলিকে যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে৷ সেজন্য যেমন বহির্বিশ্ব সাহায্য করবে, তেমনই একক দেশগুলিকে কিছুটা ত্যাগ স্বীকার করতে হবে৷ কয়েকটি ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক লাভালাভ এবং আধুনিক সভ্যতা বাধা হয়ে দাঁড়ায়৷ সর্বাধুনিক দৃষ্টান্ত হল জার্মানির ড্রেসডেন শহরের কাছে এলবে নদীর উপত্যকা, ২০০৪ সাল থেকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ৷ এখানে একটি দ্বিতীয় সেতু তৈরি করতে চায় কর্তৃপক্ষ৷ ফলে ২০০৯ সালে সে খেতাব হারায় এলবে নদীর উপত্যকা৷ এর দু'বছর আগে ওমান'এরও একই দশা হয়, কেননা সেখানে এক ধরনের দুষ্প্রাপ্য হরিণ যে এলাকায় তাকে, সেই এলাকাটাকে কেটে ছোট করেছিল ওমান সরকার৷

বাদবাকি ক্ষেত্রে ইউনেস্কো একটি ‘লাল তালিকার' আশ্রয় নেয়৷ লাল মানে বিপন্ন৷ এর প্রখ্যাত বা কুখ্যাততম উদাহরণ হলো আফগানিস্তানে বামিয়ানের বুদ্ধমূর্তি, তালেবানরা যেটিকে বিস্ফোরক দিয়ে উড়িয়ে দেয়৷ ২০০৩ সালে ঐ বামিয়ান বুদ্ধ ওঠে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের লাল তালিকায় এবং সুবিশাল মূর্তিটিকে অন্তত অংশত পুনঃপ্রতিষ্টার কাজ শুরু হয়৷ ডিডাবলিউর প্রাক্তন শহর কোলোনের সুবিখ্যাত ক্যাথিড্রালকেও ২০০৪ সালে লাল তালিকায় উঠতে হয়েছে কেননা নগর প্রশাসন গির্জার কাছেই কয়েকটি হাইরাইজ বাড়ি তোলার অনুমতি দিয়েছিলেন৷ শেষমেষ পরিকল্পিত বহুতল ভবনগুলির উচ্চতা কমিয়ে কোলোন পার পায়৷

বামিয়ানের বিখ্যাত বুদ্ধমূর্তি এখানেই শোভা পেতছবি: AP

১৮৮টি দেশ আজ ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ চুক্তিতে সামিল৷ তালিকায় রয়েছে ৯৩৬টি স্থাপনা এবং স্থান৷ বিশেষ করে ইউরোপ-কেন্দ্রিক বলে ইউনেস্কোর তালিকার আজও দুর্নাম আছে৷ যেমন ইটালির ৪৭টি জায়গা ইউনেস্কোর তালিকায়, কিন্তু ভারতের মাত্র ২৮টি৷ বাংলাদেশে পাহড়পুরের বৌদ্ধ বিহার, বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ আর সুন্দরবনও বিস্ব সম্পদ হিসেবে স্বীকৃত৷ ইউনেস্কোর ওপরেও বিশ্ব রাজনীতি-অর্থনীতির ছায়া কিছুটা পড়ে বৈকি৷ এমনকি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজগুলির নামকরণেও৷ তবে হেরিটেজ রক্ষার জন্য ইউনেস্কো অর্থদান করে, এ' ধারণাটা ভুল৷ শুধুমাত্র দরিদ্র দেশগুলি সাহায্য পায়৷

অন্যদিকে ইউনেস্কোর ছাপ নিয়ে ব্যবসা, বিক্রিবাটা ভালো হয়৷ ট্যুরিস্টদের সংখ্যা বাড়ে, তা'তে ঐতিহাসিক স্থান কিংবা পরিবেশের যতো ক্ষতিই হোক না কেন৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ