1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপীয় ইউনিয়নেও উইগুর ‘নির্যাতনের’ প্রযুক্তি

২৭ অক্টোবর ২০২০

২০১২ সালে শান্তিতে নোবেল জিতেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)৷ চীনে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিশেষ করে উইগুর নির্যাতনের কঠোর সমালোচক এই জোটই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যবহার করছে হিকভিশনের প্রযুক্তি৷

ছবি: Mark Schiefelbein/AP Photo/picture-alliance

চীনের প্রতিষ্ঠান হিকভিশনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেই শিনজিয়াং প্রদেশে উইগুর মুসলমানদের কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়৷ এ কারণে উইগুর নির্যাতনে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে৷ অথচ নিজেদের ‘বিশ্বের প্রথম সারির ভিডিও নজরদারি পণ্য সরবরাহকারী’ হিসেবে দাবি করা হিকভিশন যে শুধু ইইউভুক্ত দেশগুলোতে চুটিয়ে ব্যবসা করছে তা-ই নয়, ইইউ-র দুটি প্রতিষ্ঠানেও ঢুকে পড়েছে তাদের পণ্য৷

নেদারল্যান্ডসে অফিস খুলে দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপে নিজেদের ব্যবসা ছড়াচ্ছিল হিকভিশন৷ করোনা সংকট শুরুর পর থেকে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এবং ইউরোপীয় কমিশনেও ব্যবহার করা হচ্ছে তাদের থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা৷ উন্নত প্রযুক্তির এই ক্যামেরা ছবি তোলার পাশাপাশি শরীরের তাপমাত্রাও মেপে নেয়৷ কেউ কোভিড-১৯-এ সংক্রমিত কিনা তা বুঝতে শুরুতে শরীরের তাপমাত্রা মাপতেই হয়৷ এ কারণে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট এবং ইউরোপীয় কমিশনেও ব্যবহার করা হচ্ছে এই ক্যামেরা৷ কারো শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা ৯৯ দশমিক ৮৬ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হলে তাকে আর ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয় না৷

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রবেশদ্বারে হিকভিশনের থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা ব্যবহৃত হচ্ছেছবি: James Franey/DW

এর ফলে ইইউ-র গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রতিষ্ঠানে সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব হয়েছে৷ তবে পাশাপাশি বড় হয়ে উঠেছে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে ছাড় দেয়া বা আপোষের বিষয়টি৷ প্রশ্ন উঠেছে, শান্তিতে নোবেল জয়ী ইইউ উইগুর নির্যাতনে ব্যবহৃত হিকভিশনের ক্যামেরা ব্যবহার করে কী করে?

যুক্তরাষ্ট্রে কালো তালিকায়

২০১৯ সালে হিকভিশনকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন৷ তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা এবং পররাষ্ট্র নীতির জন্য হুমকি হতে পারে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা ‘এনটিটি লিস্টেও’ লেখা হয় তাদের নাম৷ এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠান সরকারের অনুমোদন ছাড়া হিকভিশনের সঙ্গে কোনো লেনদেন করতে পারছে না৷

অভিযোগ অস্বীকার

হিকভিশন অবশ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনে ভূমিকার রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷ ডয়চে ভেলেকে ই-মেলে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র দাবি করেন, ‘‘হিকভিশন মানবাধিকার সংক্রান্ত সব প্রতিবেদনকেই খুব গুরুত্ব দেয় এবং মানুষকে রক্ষা করার দায়িত্বও স্বীকার করে৷ সারা বিশ্বে বিভিন্ন সরকারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নানা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভুল বোঝাবুখি দূর করার কাজ করি আমরা৷’’ তবে চীনের শিনজিয়াং প্রদেশে উইগুর নির্যাতনে তাদের পণ্য ব্যবারের অভিযোগ সম্পর্কে বিবৃতিতে কিছু বলা হয়নি৷

ইউরোপীয় কমিশনের একটি ভবনে ঢোকার মুখে হিকভিশনের ক্যামেরাছবি: privat

কঠোর কথা, নরম নীতি

মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রশ্নে চীনের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার ইইউ৷ উইগুর নির্যাতনেরও নিন্দা জানিয়ে এসেছে নিয়মিত৷ গত জুনে অনুষ্ঠিত ইউ-চীন সম্মেলনের সময়ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডেয়ার লাইয়েন স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘‘মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার বিষয়গুলো নিয়ে কোনো সমঝোতা হতে পারে না৷’’ অথচ ইউরোপীয় পার্লামেন্টেই চলছে হিকভিশনের ক্যামেরা৷

জার্মানির গ্রিন পার্টির রাজনীতিবিদ, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট-এর সদস্য রাইনার্ড ব্যুটিকোফার মনে করেন হিকভিশনের সঙ্গে ইইউর এই সম্পৃক্ততা ‘লজ্জাজনক’৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের আরেক সদস্য, বেলজিয়ামের রাজনীতিবিদ চার্লি ভাইমার্স মনে করেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনে ভূমিকা রাখা কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইইউর কোনো সম্পর্ক থাকা অনুচিত৷তার মতে, ‘‘নোবেল জয়ীদের আরো উঁচু মান বজায় রাখা উচিত৷’’

জেমস ফ্র্যানে/এসিবি

গত নভেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ