ইউরোপের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ সংরক্ষণ কেন্দ্রটি এখন জার্মানিতে৷ জার্মানির অর্থমন্ত্রী জিগমার গাব্রিয়েল এটির উদ্বোধন করেন৷ ৬০ লক্ষ ইউরো ব্যয়ে তৈরি করা এই বিদ্যুৎ সংরক্ষণ কেন্দ্র বিদ্যুতের অপচয় রোধে বড় ভূমিকা রাখবে৷
প্রতীকী ছবিছবি: AP
বিজ্ঞাপন
মেকলেনবুর্গ-ফোরপমার্ন রাজ্যের শোয়েরিন শহরে সদ্য তৈরি করা বিদ্যুৎ সংরক্ষণ কেন্দ্রটি চলবে ২৫ হাজার লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির সহায়তায়৷ প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হলেও কেন্দ্রটি খুব বেশি বড় নয়, ছোটখাট একটা স্কুল ঘরের আকারের৷ জার্মানিতে বাতাস আর সূর্যের আলোকে কাজে লাগিয়ে প্রচুর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়৷ কিন্তু সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ সবসময় যথাযথভাবে ব্যবহার করা যায়না৷ জার্মানির উত্তরের রাজ্য মেকলেনবুর্গ-ফোরপমার্নে এই সমস্যা দূর করতেই শোয়েরিনে গড়ে তোলা হয়েছে ইউরোপের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ সংরক্ষণ কেন্দ্র৷
আকাশে আগুন: বজ্র এবং বিদ্যুৎ চমকানো
গ্রীষ্ম, সূর্য - বজ্রপাত: মাত্রাতিরিক্ত গরমের পর প্রায়ই ঝড় ওঠে, যেমনটা জার্মানিতে দেখা যাচ্ছে৷ বাংলাদেশ বা ভারতে অবশ্য এই প্রবণতা বহু আগে থেকে৷ চলুন বজ্রপাত আর বিদ্যুৎ চমকানোর কয়েকটি বিশেষ দিক জানা যাক৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আকাশে ‘শর্ট সার্কিট’
রাতের আকাশে এমন দৃশ্য বিরল নয়৷ বিদ্যুৎ চমকানোর ব্যাপারটি অনেকটা ‘শর্ট সার্কিটের’ মতো ব্যাপার৷ আর একেকটি বিদ্যুৎ চমক ৫০০ মিলিয়ন ভোল্ট পর্যন্ত শক্তিশালী হতে পারে৷ জার্মানিতে প্রতি বছর গড়ে বিশ লাখের বেশি বার বিদ্যুৎ চমকায়৷ এতে অবশ্য ভয়ের কিছু নেই৷ কেননা অধিকাংশই মাটি স্পর্শ করে না৷ বরং মেঘ থেকে মেঘে স্থানান্তর হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বজ্রপাত থেকে বাঁচার উপায়
ছবিতে থাকা এই মানুষটি বজ্রপাতের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না৷ কেননা তাঁর ধাতব স্যুট বিদ্যুৎ চমক প্রতিরোধে সক্ষম৷ এই স্যুটের নীতি হচ্ছে ‘ফ্যারাডে কেজ’৷ ধাতু বিদ্যুৎ চমক থেকে সৃষ্ট বিদ্যুতের প্রবাহ প্রতিরোধ করতে পারে৷ তাই বিমান কিংবা গাড়িও ‘লাইটনিং বোল্ট’ বা বিদ্যুৎ চমকের আঘাত থেকে নিরাপদ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মাটিতে ফিরিয়ে নেয়া
সাধারণত উঁচু জায়গায় বজ্রপাত ঘটে৷ যেকারণে প্রায় সব বড় গির্জা বা বহুতল ভবনে ‘লাইটনিং রড’ রয়েছে, যা আর্থিং হিসেবেও পরিচিত৷ এই ব্যবস্থার ফলে বজ্রপাতের কারণে ভবনের ক্ষতি হয় না৷ বরং বিদ্যুৎ সরাসরি ভূমিতে চলে যায়৷ ১৭৫২ সালে বেনজামিন ফ্রাঙ্কলিন ‘লাইটনিং রড’ আবিষ্কার করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ধ্বংসাত্মক প্রাকৃতিক আচরণ
২০১৩ সালে বজ্রপাতের কারণে জার্মান বিমা সংস্থাগুলোর ২৮০ মিলিয়ন ইউরোর মতো গুনতে হয়েছে৷ তবে সরাসরি ঘরবাড়ির উপর বজ্রপাতের কারণে এটা হয়নি৷ আসলে অনেক সময় বাড়ির কাছাকাছি বজ্রপাত হলে বাড়তি বিদ্যুৎ সাধারণ বৈদ্যুতিক লাইনের মাধ্যমে ঘরের মধ্যে চলে যায়৷ ফলে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়৷ তাই পরামর্শ হচ্ছে, বিদ্যুৎ চমকালে টিভি, ফ্রিজের মতো পণ্যের প্লাগ খুলে রাখুন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘বল লাইটনিং’ এর অস্তিত্ব আছে
এটা প্রকৃত ‘বল লাইটনিং’ নয়৷ তবে বাস্তবেও এটা সম্ভব! যদিও এমন বিদ্যুৎ চমকানোর ছবি প্রকৃতি থেকে এখনো তোলা যায়নি, তবে বিজ্ঞানীরা বিষয়টি প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আকর্ষণ এবং আতঙ্কের মাঝামাঝি
গ্রীষ্মের আকাশে বিদ্যুৎ চমকানো দেখে অনেকে রোমাঞ্চ অনুভব করেন৷ তবে কেউ যদি বিদ্যুৎ চমকানোর কথা শুনেই ঘামতে শুরু করেন তাহলে তাকে বলে ‘এস্ট্রাফোবিয়া৷’ বজ্রপাত এবং বিদ্যুৎ চমকানো নিয়ে যাদের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে তারা এস্ট্রাফোবিয়ায় আক্রান্ত৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শিল্পীদের প্রেরণা
‘লর্ডস অফ লাইটনিং’ এর মতো শিল্পীরা বজ্রপাতের সৌন্দর্যকে এভাবেই স্টেজে ফুটিয়ে তুলেছেন৷ বিভিন্ন চিত্রকর্মেও বিদ্যুৎ চমকানোর দৃশ্য একেছেন শিল্পীরা৷ নিরাপদ দূরত্বে বসে প্রকৃতির এই খেয়াল উপভোগ্য নয় বৈকি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
7 ছবি1 | 7
দেশের মোট চাহিদার শতকরা অন্তত ২৫ ভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে জার্মানি৷ এর মাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে ২০৩৫ সাল নাগাদ শতকরা ৫৫ থেকে ৬০ ভাগ করতে চায় দেশটি৷ বিদ্যুৎ সংরক্ষণের সুব্যবস্থার অভাব এ লক্ষ্য পূরণের পথে বড় এক বাধা৷ শোয়েরিনের কেন্দ্রটি মেকলেনবুর্গ-ফোরপমার্ন রাজ্যে এ সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখবে৷
২০১৩ সালে এ রাজ্যে বাতাস থেকে ( মূলত উইন্ড পার্কের মাধ্যমে) তৈরি বিদ্যুতের শতকরা মোট ৮০ ভাগ কাজে লাগানো সম্ভব হয়েছিল৷ নবনির্মিত সংরক্ষণ কেন্দ্রটির কারণে এ বছর উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই কাজে লাগানো যাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷