ইউরোপে, বিশেষ করে জার্মানি এবং ব্রিটেনে আবার করোনা ভাইরাসের বেশি সংক্রামক বিএ২ সংস্করণের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) ইউরোপের বিভিন্ন দেশে করোনা বিধিনিষেধ শিথিলের সমালোচনা করেছে৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানি, ফ্রান্স, ইটালি এবং ব্রিটেনসহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত ‘‘নির্মমভাবে’’ নেয়া হয়েছে বলে মনে করছে ডাব্লিউএইচও৷
এই দেশগুলোতে এখন করোনা সংক্রমণ আবার বাড়ছে, যা সম্ভবত ভাইরাসটির বেশি সংক্রামক সংস্করণ বিএ২, যোগ করেছে ডাব্লিউএইচও৷
সংস্থাটির ইউরোপ অঞ্চলের পরিচালক হ্যান্স ক্লু জানিয়েছেন যে, মহাদেশটিতে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত অগ্রগতির বিষয়ে তিনি ‘‘আশাবাদী, কিন্তু সতর্ক’’৷
মলদোভায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘ডাব্লিউএইচও-র ইউরোপীয় অঞ্চলভুক্ত ৫৩টি দেশের ১৮টিতে ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে৷’’
‘‘যেসব দেশে আমরা সুনির্দিষ্টভাবে সংক্রমণ বাড়তে দেখছি, সেগুলো হচ্ছে যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, গ্রিস, সাইপ্রাস, ফ্রান্স, ইটালি এবং জার্মানি৷ এসব দেশ করোনা বিধিনিষেধ নির্মমভাবে অনেক বেশি থেকে অনেক কম করে ফেলেছে,’’ যোগ করেন তিনি৷
ডাব্লিউএইচও-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইউরোপে করোনা সংক্রমণের হার জানুয়ারির শেষের দিকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়৷ কিন্তু মার্চের শুরুর দিকে তা আবারো বাড়তে শুরু করে৷ গত সপ্তাহে ইউরোপে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হন ৫১ লাখ মানুষ, আর এই সময়ে করোনায় মারা গেছেন ১২,৪৯৬ জন৷
এআই/এসিবি (রয়টার্স, এপি)
সোমবারের ছবিঘরটি দেখুন...
দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় করোনা মহামারিতে চীন
চীনের কয়েকটি শহরে করোনা সংক্রমণ বাড়ায় লকডাউন দেয়া হয়েছে৷ গত দুই বছরের মধ্যে দেশটি সবচেয়ে বড় করোনা মহামারি দেখা দিয়েছে৷
ছবি: picture alliance/AP
ওমিক্রনের প্রভাব
বিশ্বে চীনে প্রথম করোনার প্রকোপ শুরু হলেও লকডাউন, গণহারে করোনা পরীক্ষা, কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি ব্যবস্থা নেয়ার মাধ্যমে করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছিল৷ কিন্তু সম্প্রতি দেশটিতে করোনার ওমিক্রন সংস্করণের প্রভাব দেখা যাচ্ছে৷ ফলে গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় করোনা মহামারিতে পড়েছে চীন৷
ছবি: Liau Chung-ren/ZUMA Wire/imago images
প্রথম মৃত্যু
এক বছরেরও বেশি সময় পর গত শনিবার চীনে করোনায় দুজনের মৃত্যু হয় বলে জানানো হয়েছে৷ ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে এ বছরের ১৮ মার্চ পর্যন্ত আট লাখ ১৮ হাজার ৬১২ জন করোনায় আক্রান্ত হন বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে জানিয়েছে চীন৷ এই সময়ে ১০ হাজার ৬২৫ জন মারা যান৷
ছবি: Tyrone Siu/REUTERS
সংক্রমণ কম হলেও কঠোর সিদ্ধান্ত
রোববার চীনে চার হাজারের বেশি মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হন৷ বৈশ্বিক বিবেচনা ও চীনের ১৪০ কোটির বেশি জনসংখ্যা বিচার করলে এই সংখ্যাটি খুবই কম৷ তারপরও করোনার প্রসার ঠেকাতে কঠোর সব সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন৷ ফলে বিভিন্ন শহরের লাখো মানুষ এখন লকডাউনের মধ্যে আছেন৷
ছবি: Shao Rui/Xinhua/AP/dpa/picture alliance
লকডাউনে জিলিন
রোববার চীনের নতুন সংক্রমিতের দুই-তৃতীয়াংশের বাস জিলিন রাজ্যে৷ এই রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর জিলিনের প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ সোমবার রাত থেকে তিনদিনের জন্য লকডাউনে থাকবেন৷ জিলিন রাজ্যটি রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার কাছে অবস্থিত৷ উপরের ছবিটি প্রতীকী৷
ছবি: Tao Ming/Xinhua/AP/picture alliance
দুইদিনে একবার বের হওয়ার অনুমতি
জিলিন রাজ্যের রাজধানী চ্যাংচুনে ৯০ লাখ মানুষের বাস৷ ১১ মার্চ থেকে সেই শহরের বাসিন্দারা খাবার কিনতে প্রতি দুই দিনে একবার ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন৷ এই নিষেধাজ্ঞা তিন দিনের জন্য আরও কঠোর করা হবে বলে শনিবার শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে৷ ১৫ মার্চের ছবিতে চ্যাংচুনের বাসিন্দাদের করোনী পরীক্ষার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Zhao Dandan/IMAGO
শেনজেনে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে
চীনের কয়েকটি বড় প্রযুক্তি কোম্পানি শেনজেনে অবস্থিত৷ সেখানে প্রায় পৌনে দুই কোটি মানুষ বাস করেন৷ সপ্তাহখানেক আগে সেখানে লকডাউন (ছবি) দেয়া হয়েছিল৷ সোমবার থেকে বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হয়েছে৷ গণপরিবহন চলতে দেয়া হচ্ছে৷ কিছু প্রশাসনিক ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়েছে৷
ছবি: picture alliance/AP
সাংহাইয়ে কঠোর ব্যবস্থা
চীনের বাণিজ্যিক কেন্দ্র সাংহাইতে টানা চতুর্থ দিনের মতো উপসর্গহীন করোনার সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে৷ রোববার সেখানে ২৪ জনের মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা গেছে৷ আর উপসর্গ নেই এমন সংক্রমণ দেখা গেছে ৭৩৪ জনের মধ্যে৷ এই অবস্খায় সেখানে স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ আবাসিক এলাকায় করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে৷
ছবি: Xinhua/Li Ziheng/picture alliance
সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহের লকডাউন
সাংহাইয়ের বিভিন্ন আবাসিক এলাকাগুলো করোনার প্রসার রুখতে নিজেরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে৷ কিছু এলাকায় মানুষজনকে দুই সপ্তাহ লকডাউনে থাকতে বলা হয়েছে৷ আর কিছু এলাকার মানুষ বলছে, কতদিন তাদের ঘরে থাকতে হবে সেটা জানানো হয়নি৷ ছবিটি প্রতীকী৷