1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোকে না বলে প্রস্তর যুগে প্রত্যাবর্তন

রল্ফ ভেংকেল/এসবি৬ জুলাই ২০১৫

যুক্তির বিরুদ্ধে মতাদর্শের জয় হলো৷ সঞ্চয় না করেই অর্থসাহায্যের স্বপ্ন দেখে চলেছে গ্রিসের মানুষ৷ ‘না' ভোট দিয়ে ‘বেইলআউট'-এর সম্ভাবনাও প্রত্যাখ্যান করেছে তারা৷ ডয়চে ভেলের রল্ফ ভেংকেল অবশ্য মনে করেন, স্বপ্নভঙ্গ ঘটতে বাধ্য৷

Greichenland Alexis Tsipras Parteivorsitzender SYRIZA
ছবি: picture-alliance/dpa/Orestis Panagiotou

এমনটাই হবার ছিল৷ অপ্রত্যাশিতভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রিকরা দাতাদের সঙ্গে আপোশের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন৷ অথচ আপোশ ছাড়া আগামী ৩০শে জুনের পর দাতারা আর কোনো অর্থ দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিল৷ তাছাড়া তৃতীয় দফার সাহায্য কর্মসূচি নিয়েও কোনো আলোচনা হবে না৷ সেক্ষেত্রে গ্রিসের আর্থিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার৷

গ্রিসের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইউরো ধরে রাখতে চান বটে, কিন্তু তাঁরা যে ধাপে ধাপে ইউরো এলাকার বাইরের দিকে সরে যাচ্ছেন, সে বিষয়ে তাঁরা সচেতন বলে মনে হচ্ছে না৷ কারণ আগামী ২০শে জুলাই ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে রাষ্ট্রীয় বন্ড বাবদ ৩৫০ কোটি ইউরো পরিশোধ করার কথা৷ অথচ তার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নেই৷ সেটাই সমাপ্তির সূচনা৷ কারণ ইসিবি সে ক্ষেত্রে মানতে বাধ্য হবে যে, গ্রিক রাষ্ট্র এবং সে দেশের ব্যাংকগুলি দেউলিয়া হয়ে গেছে৷ ব্যাংকগুলি আর ইউরো না পেলে গ্রিসের ইউরো-সদস্যপদ কার্যত শেষ হয়ে যাবে৷

রল্ফ ভেংকেল, ডয়চে ভেলেছবি: Getty Images/AFP/M. Bureau

আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ

ঋণদাতাদের সঙ্গে বোঝাপড়া না হলে গ্রিস আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ কাজ চালিয়ে যেতে পারবে৷ লেনদেনের উপর নিয়ন্ত্রণের কারণে ব্যাংকে নগদ অর্থের ভাণ্ডার কমে আসছে, তবে একেবারে শেষ হয়ে যায়নি৷ প্রতিদিন কয়েক কোটি ইউরো সরবরাহ করা হচ্ছে, কারণ ব্যাংকের উপর মানুষের আর ভরসা নেই৷ গ্রিসের সরকার সরকারি কর্মী, অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ও সরবরাহকারীদের জন্য ঋণপত্র দিতে পারে বটে, ২০০৯ সালে যেমনটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় করা হয়েছিল৷ এই সমান্তরাল মুদ্রার বিনিময় মূল্য কিন্তু ইউরোর তুলনায় অনেক কম হবে৷ অনেক বিশেষজ্ঞ গ্রিসকে আবার দ্রাখমা ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দিচ্ছেন৷ তাঁদের মতে, এর ফলে প্রতিযোগিতার বাজারে রপ্তানিকারীদের সুবিধা হবে৷

কঠিন সময়

ভবিষ্যতে যাই হোক না কেন, আপাতত কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে গ্রিসের মানুষকে৷ ৩০, ৪০ বা ৫০ শতাংশ অবমূল্যায়ন ঘটলে গ্রিসের ঋণভারও সেই অনুপাতে বাড়বে৷ তাছাড়া অবমূল্যায়নের পরেই রপ্তানির ক্ষেত্রে দ্রুত সাফল্য পাওয়া যাবে, এমনটা বিশ্বাস করা কঠিন৷ জলপাই ও সিমেন্ট ছাড়া গ্রিসের রপ্তানি করার তেমন কোনো পণ্য নেই৷

ফ্রান্সের ‘ল্য মোঁদ দিপ্লোমাতিক' পত্রিকা আরও একটি কঠিন বিষয়ের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে যে, গ্রিসের স্থিতিশীলতা সম্পূর্ণ বিনষ্ট করতে পারে৷ তাদের মতে, দ্রাখমায় ফিরে গেলে মূল্যস্ফীতি অনিবার্য৷ তখন সমাজের চরম বঞ্চিত মানুষ সেই সব ধনী মানুষের কবজায় এসে পড়বে, যাদের হাতে বিপুল পরিমাণ ইউরো রয়েছে৷ তারা তখন গোটা দেশটাই কার্যত কিনে ফেলবে৷ এমন অবস্থায় হয়ত ধনসম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বৈষম্য ঘটবে, যেমনটা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে ধনতন্ত্র প্রবেশ করার পর আর কেউ দেখে নি৷

নতুন আলোচনা

এই সব কারণেই হয়ত ইউরো গ্রুপের শীর্ষ নেতারা মরিয়া হয়ে আবার গ্রিসের সঙ্গে নতুন করে আলোচনার হাত বাড়িয়ে দিতে বাধ্য হবেন৷ গ্রিসের শাসকরা হয়ত ইউরো সামলাতে পারেন না, কিন্তু জুয়া খেলায় তাদের জুড়ি নেই৷ তাঁরা বিলক্ষণ জানেন যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ন্যাটো, ওইসিডি – সব জায়গায় তাঁদের সদস্যপদের প্রয়োজন রয়েছে৷ তাই সব সময়ে তাঁরা ‘শেষ সুযোগ' পাবেন৷ সাধারণ ঋণীরা এমন খাতির পায় না৷ তাই আমরাও এই নাটকের অন্ত দেখতে পাবো না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ইউরোপ