সেপ্টেম্বরে ইউরোজোনের মূল্যস্ফীতি রেকর্ড ১০ ভাগে পৌঁছেছে৷ এই অঞ্চলে ইউরো সাধারণ মুদ্রা হবার পর থেকে এমনটা কখনো দেখেনি ইউরোপ৷
বিজ্ঞাপন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান এজেন্সি ইউরোস্ট্যাটের হিসাবে, সেপ্টেম্বরে ইউরোপের ১৯ সদস্য রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ব্লক ইউরোজোনের মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে রেকর্ড ১০ ভাগ হয়েছে৷ আগস্টে এটি ছিল শতকরা নয় দশমিক এক ভাগ৷ গত বছর ঠিক একই সময় মূল্যস্ফীতি ছিল তিন দশমিক দুই ভাগ৷
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি গ্যাসের দাম বাড়তে থাকায় এ অবস্থার তৈরি হয়েছে৷ এমনকি আগামী বছর অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কাও করা হচ্ছে৷
গত বছরের তুলনায় গ্যাসের দাম বেড়েছে ৪০ দশমিক ৮ ভাগ৷ সেপ্টেম্বরে খাদ্য, অ্যালকোহল ও তামাক জাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে ১১ দশমিক আট ভাগ, যা আগস্টে বেড়েছিল ১০ দশমিক ছয় ভাগ৷
ইউরোজোনে সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি হয়েছে এস্তোনিয়ায়, শকতরা ২৪ দশমিক দুই ভাগ৷ এক মাস আগে অবশ্য তা ২৫ ভাগের বেশি ছিল৷
লিথুনিয়া, লাটভিয়া ও নেদারল্যান্ডসে এর পরিমাণ যথাক্রমে শতকরা ২২ দশমিক পাঁচ ভাগ, ২২ দশমিক চার ভাগ ও ১৭ দশমিক এক ভাগ৷
ইউরোস্ট্যাট বলছে, জার্মানির মুদ্রাস্ফীতি ১০ দশমিক নয় ভাগ৷ ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানির দাম কমাতে গত বৃহস্পতিবার বার্লিন ২০ হাজার কোটি ইউরোর ভর্তুকি পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে৷
জেডএ/আরআর (ডিপিএ, এপি)
জিম্বাবোয়ে : যেখানে হাজার কোটি ডলারের চেয়েও গরুর কদর বেশি
জিম্বাবোয়েতে মুদ্রাস্ফীতি এমন পর্যায়ে যে, ব্যাংকের ওপর ভরসাই রাখতে পারছে না সাধারণ মানুষ৷ অনেকে এক হাজার কোটি টাকার দিকেও হাত না বাড়িয়ে ঝুঁকছেন গবাদি পশু পালনের দিকে৷ ‘হাম্বা ব্যাংক’ও হচ্ছে! বিস্তারিত ছবিঘরে...
ছবি: Tsvangirayi Mukwazhi/AP/picture alliance
কোটি টাকা হাতের ময়লা
জিম্বাবোয়ের অর্থনৈতিক অবস্থা অবশ্য দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ৷ ২০০৮ সালেও সে-দেশে ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছিল৷ জিম্বাবোয়ের মুদ্রার নাম জিম্বাবোয়ান ডলার৷ সেই মুদ্রার দাম এত কমে গিয়েছিল যে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তখন ১০০ বিলিয়ন ডলারের নোটও বাজারে ছেড়েছিল৷ এখন সেই ১০০ বিলিয়ন ডলারের নোট দিয়েও কেনা যাচ্ছে না অনেক পণ্য৷ তাই ব্যাংক এবং টাকার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন অনেকে৷
ছবি: AP
নেবেন স্বর্ণমুদ্রা?
গত জুনে জিম্বাবোয়েতে বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার ঠেকেছে শতকরা ১৯২ ভাগে৷ পরের মাসেই ওপরের ছবির মতো চকচকে স্বর্ণমুদ্রা ‘বিক্রি’ শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷ ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের নামানুসারে দেয়া দ্য মোসি-ওয়া-টুনিয়া নামের এই মুদ্রা জিম্বাবোয়ান ডলার এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের আরো কিছু দেশের মুদ্রার বিনিময়ে ক্রয় করা যায়৷
ছবি: Tsvangirayi Mukwazhi/AP/picture alliance
কেন হাজার কোটি ডলার নয়, স্বর্ণমুদ্রাও নয়...
জেনজেলে নডেবেলে একজন কৃষক৷ অনেকের মতো তিনিও এখন ব্যাংকে টাকা না জমিয়ে সেই টাকা গরুর পিছনে বিনিয়োগ করছেন৷ গরুর ব্যবসায় টাকা খাটানোর পক্ষে তার যুক্তিটা খুব সহজ, ‘‘গবাদি পশু নিয়ে কখন কী করবো তা আমি নিজে ঠিক করতে পারি৷ একটা হিসেবও করতে পারি আমি৷ আমি জানি, এক সময় গবাদি পশুর দাম বাড়তে থাকে৷ দাম বাড়লে চাইলে বিক্রিও করা যায়৷’’
ছবি: Shaun Jusa/Photoshot/picture alliance
সুদের হার একটা বাছুর
খরা হলে কিংবা রোগ দেখা দিলে গবাদিপশু বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে৷ সেক্ষেত্রে একটি গরুর মৃত্যু মানে, পুরোটাই ক্ষতি৷ জেনজেলে নডেবেলে জানেন, তবে তারপরও মনে করেন, গরুতে অনেক লাভ৷ স্ত্রী গরু প্রতি বছর একটি করে বাচ্চা দেয়৷ সেই বাচ্চা পুরুষ হলে পরে ষাঁড় হিসেবে বিক্রি করা যায়৷ কন্যা সন্তান হলে সে-ও বড় হয়ে সন্তান জন্ম দেয়৷ তাই জেনজেলে নডেবেলে মনে করেন, গরু ব্যবসায় পুরো বাছুরটাই লাভ, অর্থাৎ সুদের হার৷
ছবি: AP/picture alliance
‘হাম্বা ব্যাংক’
সাধারণ মানুষের মাঝে গবাদি পশুর পিছনে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখে কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে৷ সেরকম এক প্রতিষ্ঠানের নাম সিলভারব্যাক অ্যাসেট ম্যানেজার্স৷ অনেকে অবশ্য তাদের ‘মুইং ব্যাংক’ বা ‘হাম্বা ব্যাংক’ নামে ডাকেন, কারণ, সেখানে এখন টাকার মতো করে গবাদি পশু জমা রাখা যায়৷ প্রতি একশ কিলোগ্রাম গরুতে এক ইউনিট হিসেবে অনেকেই অনেক ইউনিট জমা করছেন অনেকে, বিনিময়ে লাভও পাচ্ছেন তারা৷