1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপীয় ইউনিয়নের চাই এক মানবিক শরণার্থী নীতি

ব্যার্ন্ড রিগার্ট/এসি২৫ ডিসেম্বর ২০১৪

এ বছর সারা বিশ্বে শরণার্থীদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, ২০১৫ সালেও সে প্রবণতা বজায় থাকবে৷ ইউরোপকে দুর্গে পরিণত করা চলবে না, আবার সীমান্ত পুরোপুরি খুলে দেওয়াও সম্ভব নয়, বলে ব্যার্ন্ড রিগার্ট-এর মত৷

Bis zu 700 tote Flüchtlinge bei Schiffsunglücken im Mittelmeer
ছবি: picture-alliance/dpa/Ettore Ferrari

২০১৪ সালে ইউরোপে যত শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী এসেছেন, ১৯৪৫ সাল যাবৎ তা আর দেখা যায়নি৷ সিরিয়া, ইরিট্রিয়া, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ ইউরোপ অভিমুখে পলায়ন করেছেন৷ ভূমধ্যসাগর, এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভূ-সীমান্ত পার হওয়ার প্রচেষ্টায় হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷ পূর্বনির্ধারিত কোটার উদ্বাস্তু হিসেবে ইউরোপে না এলে, রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা না করে উপায় নেই – এবং তা শুধু ইউরোপে পৌঁছানোর পরেই করা যায়৷ অর্থাৎ ‘অ্যাসাইলাম'-এর আবেদন দাখিল করার আগে উদ্বাস্তুদের আগে বেআইনিভাবে ইউরোপে ঢুকতে হবে – এ এক আজব পরিস্থিতি৷

মানুষপাচারকারীরাই সাধারণত সেই বেআইনি অনুপ্রবেশের ব্যবস্থা করে থাকে৷ যে অপরাধীরা বোটে করে শরণার্থীদের লিবিয়া থেকে ইউরোপ অভিমুখে পাঠায়, শুধুমাত্র তারাই এই বেআইনি ব্যবসা থেকে কোটি কোটি ডলার মুনাফা করে থাকে৷ একটা অসহ্য পরিস্থিতি, এবং তা শুধু ২০১৪ সাল থেকেই নয়: ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা বহুদিন আগেই উপলব্ধি করেছেন যে, ইইউ-তে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান এবং শরণার্থী সংক্রান্ত নীতি বদলাতে হবে৷

ছবি: picture-alliance/dpa

‘‘ইউরোপ দুর্গ'' ভেঙে দাও?

বিশেষ করে উদ্বাস্তু ত্রাণ সংগঠনগুলির দাবি হলো, ইউরোপকে ‘‘দুর্গ'' বানিয়ে না রেখে, অবাধ অভিবাসনের অনুমতি দাও৷ এই দাবি মানবিক ভাবে বোধগম্য হলেও, রাজনৈতিক ভাবে কার্যকরি করা সম্ভব নয়৷ ইউরোপের অধিবাসীদের মধ্যে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ শরণার্থী গ্রহণ করে তাদের সমাজের অঙ্গ করে তোলার প্রস্তুতি – এক কথায় – অনুপস্থিত৷ ইতিমধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহু দেশে ‘‘সমুচ্চ'' বলে অনুভূত রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা ক্ষোভ ও প্রতিরোধের সৃষ্টি করেছে৷

কিছু কিছু দেশে বহিরাগত বিদ্বেষী গোষ্ঠীগুলির জনপ্রিয়তা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে৷ এই পরিস্থিতিতে এ কথা বলে কোনো লাভ নেই যে, সিরিয়ার প্রত্যক্ষ প্রতিবেশিদের তুলনায় ইউরোপ খুব কম উদ্বাস্তুকেই স্থান দিয়েছে৷ লেবাননের প্রতি চতুর্থ বাসিন্দা নাকি আজ একজন উদ্বাস্তু৷ ইউরোপকে সেই পরিমাণ উদ্বাস্তু নিতে হলে তাদের সংখ্যা দাঁড়াত সাড়ে বারো কোটি! বাস্তবিক ইউরোপে স্থান পেয়েছেন সাকুল্যে পাঁচ লাখ উদ্বাস্তু৷ শরণার্থীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যাটাকে মেনে নেওয়া তো দূরের কথা, তা-কে বর্তমান পর্যায়ে রাখার সদিচ্ছাও আজ ইউরোপে অবর্তমান৷

ব্যার্ন্ড রিগার্ট

ইইউ স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে যে, ইউরোপে বৈধ অভিবাসনের আরো বেশি সুযোগ দেওয়া আবশ্যক, যা-তে শরণার্থীদের মানুষ পাচারকারীদের হাত থেকে রক্ষা করা যায় এবং শরণার্থীরা বিপজ্জনক পন্থায় ইউরোপে আসার চেষ্টা না করেন৷ কিন্তু বৈধভাবে ইউরোপে আসার পন্থা বাড়লে, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, রাশিয়া, ইউক্রেন কিংবা সার্বিয়া থেকে আরো বেশি মানুষ ইইউ-তে আসার চেষ্টা করবেন৷ এই উভয়সংকটের সমাধান কী, তা আপাতত অজ্ঞাত৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীবর্গ ২০১৫ সালেও তা নিয়ে মাথা ঘামাবেন৷ যে সব দেশ থেকে শরণার্থীরা আসছেন, তাদের জন্য কোটার ব্যবস্থা করা যেতে পারে, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করে থাকে৷ বাদবাকিদের বিনা ব্যতিক্রমে ফেরৎ পাঠাতে হবে৷ সেটা কি খুব ন্যায্য হবে?

কে থাকবে, কে যাবে

ইউরোপীয় ইউনিয়নে যারা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন, তাদের মধ্যে গড়ে ৫০ শতাংশ বাস্তবিক সেই স্বীকৃতি পান৷ তবে শরণার্থীরা কোন দেশ থেকে আসছেন, তার উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে: বর্তমানে সিরিয়া থেকে আসা প্রায় সব উদ্বাস্তুর আবেদন মঞ্জুর হচ্ছে, সার্বিয়া থেকে আসা প্রায় সব আবেদন নাকচ হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে শরণার্থীরা ইইউ-তে প্রবেশ করার আগেই তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় পাবার সম্ভাবনা বিবেচনা করে দেখার প্রস্তাবটি আবার আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে, এবং জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস দেমেজিয়ের তার পুনরুল্লেখও করেছেন৷

ইইউ-এর সদস্যদেশগুলি বর্তমানেই শরণার্থীদের পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে পারে, যদি তারা চলতি ডাবলিন নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করে৷ ডাবলিনের নীতিমালা বলছে, শরণার্থীরা প্রথমে যে দেশে পৌঁছাবে, সেই দেশই তাদের দায়িত্ব নেবে এবং তাদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বিবেচনা করবে৷ কিন্তু ইটালি, গ্রিস, হাঙ্গেরি এবং অপরাপর দেশ তা মেনে চলে না৷ এ বছর ইটালি হাজার হাজার শরণার্থীকে নথিভুক্ত পর্যন্ত না করে অবৈধ অবস্থাতেই আল্পস পর্বতমালা পার হয়ে উত্তরে যেতে দিয়েছে৷

এভাবেই, বাস্তবিক কত মানুষ যে বেআইনিভাবে ইইউ-তে প্রবেশ করে ইউরোপের জনসমুদ্রে মিলিয়ে যাচ্ছেন, তা কারো জানা নেই৷ ইউরোপীয় শরণার্থী পরিষদের মতে, সরকারিভাবে ইউরোপে শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের যে সংখ্যা দেখানো হয়, বাস্তবিক সংখ্যা তার তিন থেকে চারগুণ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ