1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউরোপের অভিবাসন নীতি

সঞ্জীব বর্মন১৪ মে ২০০৮

অভিবাসী, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী, বে-আইনী অনুপ্রবেশকারী হিসেবে অনেক বিদেশী ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলিতে বসবাস করে৷ কিন্তু এখনো এক্ষেত্রে কোনো একক নীতি প্রণয়ন করা সম্ভব হয় নি৷

শুধু দক্ষ কর্মীদের জন্যই ইউরোপের দরজা খোলা হবে?ছবি: DW/picture-alliance/dpa

ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইটালি, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ইত্যাদি অনেক দেশেই বসবাস করেন অসংখ্য বিদেশী নাগরিক৷ ইদানীং ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্তরে বিদেশী নাগরিকদের ক্ষেত্রে নীতির সমন্বয় করতে নতুন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷

ইউরোপের সমস্যা

ইউরোপ মহাদেশে জন্মের হার পড়তির দিকে৷ অন্যদিকে মানুষের আয়ু বেড়ে চলেছে - যার অর্থ হল, কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ক্রমশঃ কমে যাচ্ছে৷ তাছাড়া যে সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর জন্য ইউরোপ বাকি বিশ্বের কাছে ঈর্ষার পাত্র, সেই কাঠামো চালু রাখার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন, কর্মজীবি মানুষের সংখ্যা কমে যাওয়ার ফলে তা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে৷ চারদিকে প্রশ্ন উঠছে, এই সমস্যার স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী সমাধান কী?

ইউরোপে জন্মের হার কমছে - গড় আয়ু বাড়ছেছবি: AP

জনসংখ্যা আচমকা বাড়ানো সম্ভব নয়৷ জন্মের হার বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশের সরকার নানা রকম পদক্ষেপের মাধ্যমে তরুণ দম্পতিদের উত্‌সাহ দেওয়ার চেষ্টা করছে৷ অন্যদিকে ইতিমধ্যে প্রায় সব মহলেই মোটামুটি একটা ঐক্যমত দেখা যাচ্ছে, যে ইউরোপের বাইরে থেকে অভিবাসীদের প্রবেশের পথ সুগম করতে হবে৷ আইনী পথে, দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী সুনিয়ন্ত্রিতভাবে যদি অভিবাসীদের আনা যায়, সেক্ষেত্রে তাঁরা কর ও সামাজিক সুরক্ষা বাবদ যে মাশুল দেবেন, তা আগের ভারসাম্য অনেকটাই ফিরিয়ে আনতে পারবে৷ তবে এমন অভিবাসীদেরই স্বাগত জানানো হবে, যাঁরা নিজেদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় স্বকীয়তা বজায় রেখেও সমাজের মূল স্রোতের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে সক্ষম৷ যাঁরা নিজেদের চারদিকে প্রাচীর তুলে মূল সমাজ থেকে নিজেদের ও নিজের পরিবারকে বিচ্ছিন্ন রাখতে চান, তাঁরা অনভিপ্রেত৷

বিদেশীদের পরিস্থিতি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলির নাগরিকেরা একে অপরের দেশে অবাধ যাতায়াত করতে পারেন, পাকাপাকি বসবাস করতে পারেন, উপার্জন করতে পারেন - এমনকী পৌর-নির্বাচনে ভোটও দিতে পারেন৷ শেঙেন চুক্তির কল্যাণে বিদেশীরাও ই.ইউ.-ভুক্ত বেশীরভাগ দেশেই অবাধ যাতায়াত করতে পারেন৷ অথচ এই সীমাহীন ইউরোপ সত্ত্বেও অভিবাসন নীতির ক্ষেত্রে এতদিন প্রতিটি দেশ নিজস্ব পথে এগিয়ে চলেছে৷ রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও একই রকমের বিচ্ছিন্ন নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে৷ এই জটিল পরিস্থিতির ফলে বাস্তবে বিদেশী সংক্রান্ত নীতির ক্ষেত্রে অচলাবস্থা কিছুতেই কাটছে না৷

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে পৌঁছনোর স্বপ্ন দেখেন অনেকেইছবি: dpa

অভিবাসী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী ছাড়াও ইউরোপে প্রতি বছর বে-আইনী পথে আসা অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যাও কম নয়৷ বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই এই সব মানুষ মরিয়া হয়ে জীবনধারণের সংগ্রাম চালিয়ে যান৷ অতি কম মজুরিতে তাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করেন৷ বলাই বাহুল্য, ন্যূনতম মজুরি, স্বাস্থ্য বীমা ইত্যাদি সুযোগ সুবিধা থেকে তাঁরা বঞ্চিত থাকেন৷ যারা তাদের কাজে লাগায়, তাদেরও এর ফলে বিশাল সুবিধা হয়৷ মাঝে মধ্যে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ধরপাকড় চালালেও এই প্রবণতা চলেই আসছে৷ শ্রমের এই কালো বাজার সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য বা পরিসংখ্যান না থাকলেও অর্থনীতিবিদরা এবিষয়ে মোটামুটি একমত যে এই বে-আইনী শ্রমিক ছাড়া অর্থনীতির বেশ কয়েকটি ক্ষেত্র প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে পারত না৷ বিশেষ করে বড় আকারের নির্মাণ প্রকল্পে এই অবৈধ শ্রমিকদের প্রায়ই দেখা যায়৷ প্রতিটি শ্রমিককে ন্যূনতম মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিলে নির্মাণ সংস্থার পক্ষে কাজ পাওয়াই কঠিন হয়ে পড়ত৷

এতো গেল যুক্তি-তর্ক-তথ্য-পরিসংখ্যানের কথা৷ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিদেশীদের সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে নানা রকমের ধারণা চালু আছে - যা কখনো ভিত্তিহীন, কখনো বা সত্য৷ ঔপনিবেশিক অতীতের প্রেক্ষাপটে ফ্রান্স, ব্রিটেন বা নেদারল্যান্ডস-এর মতো দেশে বাস করেন অনেক বিদেশী-বংশোদ্ভুত মানুষ৷ আবার জার্মানির মত দেশে অতিথি শ্রমিক হিসেবে বসবাস করতে এসেছেন তুরস্কের অনেক মানুষ৷ এঁদের সঙ্গে সমাজের মূল স্রোতের রসায়ন প্রতিটি দেশেই অনবদ্য৷

ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্তরে বিদেশী সংক্রান্ত নীতির ক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন নেদারল্যান্ডস-এর আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে Amsterdam School for Social science Research (ASSR)-এর গবেষক মালিনী শূর৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ