1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরমাণু

৫ অক্টোবর ২০১২

সেটা যাচাই করতেই ইউরোপীয় কমিশন একটি ‘স্ট্রেস টেস্ট', অর্থাৎ আপৎকালীন নিরাপত্তা পরীক্ষার ব্যবস্থা করে৷ এখন সেই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ স্থগিত রাখা হয়েছে৷ কিন্তু কেন?

ছবি: AP

উত্তর-চেরনোবিল, উত্তর-ফুকুশিমা দুনিয়াতে ইউরোপের আণবিক চুল্লিগুলির স্ট্রেস টেস্ট৷ তার ফলাফল যে ধামাচাপা দেওয়া যাবে, এ'রকম প্রমাদ কেউই করতে পারে না৷ ইতিমধ্যেই গণমাধ্যমের কাছে খবর পৌঁছে গেছে যে, স্ট্রেস টেস্টে ফেলের হার নাকি ব্যাপক, কারোর ফার্স্ট ক্লাস কি ফার্স্ট ডিভিশন পাবার তো কোনো কথাই ওঠে না৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জ্বালানি কমিশনার গুইন্থার ওয়েটিংগার পড়েছেন বিপাকে৷ ব্রাসেলসে যাবার আগে তিনি ছিলেন জার্মানির বাডেন-ভ্যুর্টেনবের্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী৷ তখন তিনি নিজেই বিভিন্ন আণবিক চুল্লির পারমিটে দস্তখত করেছেন৷ আজ সেই ওয়েটিংগারকেই জার্মানি সহ গোটা ইউরোপের আণবিক চুল্লিগুলি নিরাপদ কিনা, তাই নিয়ে রিপোর্ট পেশ করতে হচ্ছে৷

‘স্ট্রেস টেস্ট'এ ফলাফল মোটেই ভালো নয়ছবি: dapd

রিপোর্ট অবশ্য কয়েক মাস আগেই পেশ হওয়ার কথা ছিল৷ তারপর তারিখ ঠিক করা হয় তেসরা অক্টোবর৷ কিন্তু তার দু'দিন আগেই ওয়েটিংগারের দপ্তরের এক মুখপাত্র জানালেন, সে তারিখও পিছিয়ে ১৮ই অক্টোবর করে দেওয়া হচ্ছে, কেননা ‘স্টাডি'-টা নাকি এখনও সমাপ্ত হয়নি৷ ওদিকে গণমাধ্যমে ততক্ষণে স্ট্রেস টেস্টে আণবিক চুল্লিগুলির পর্যায়ক্রমে ফেল হবার কথা ছড়াতে শুরু করে দিয়েছে৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নে ৬৮টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আছে৷ সেগুলিতে সব মিলিয়ে ১৩৪টি রিয়্যাক্টর কাজ করে৷ ইইউ'এর ২৭টি দেশের মধ্যে ১৪টিতে পরমাণু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়ে থাকে৷ জাপানের ফুকুশিমা বিপর্যেয়র পর স্বভাবতই ইউরোপের মানুষের মনেও প্রশ্ন জাগে, তাদের আণবিক চুল্লিগুলি ঠিক কতটা নিরাপদ৷

ইওখেন স্টাই হলেন ‘‘আউসগেস্ট্রাল্ট'' বা ‘রশ্মিবিহীন' নামধারী একটি পরমাণু বিরোধী সংগঠনের মুখপাত্র৷ ইউরোপীয় কমিশনের রিপোর্টের উপর তাঁর কোনোদিনই বিশেষ আস্থা ছিল না, ডয়চে ভেলে'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বললেন স্টাই, কেননা:

‘‘স্ট্রেস টেস্ট'এর সমস্যাটা হল এই যে, বুনিয়াদি তথ্যগুলি সরবরাহ করছে তারা, যারা নিজেরাই আণবিক চুল্লিগুলি চালায়৷ তাদের কাছে একটি প্রশ্নাবলী পাঠানো হয়েছে এবং তারা নিজেই উত্তর দিচ্ছে, আণবিক চুল্লিগুলির নিরাপত্তা কেমন৷...পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে মাত্র এক-তৃতীয়াংশে পরিদর্শক পাঠানো হচ্ছে৷''

আবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বাদ থেকে গেছে৷ যেমন: কোনো বিমান যদি কোনো আণবিক চুল্লির উপর ভেঙে পড়ে কিংবা সেখানে গিয়ে ধাক্কা খায়, তবে কি হবে৷ অবশ্য প্রশ্নটা বাদ দেবার একটা কারণ এই হতে পারে যে, উত্তরটা ইতিপূর্বেই জানা ছিল৷ জার্মানির রিয়্যাক্টর নিরাপত্তা কমিশন তো ইতিপূর্বেই ঘোষণা করেছে, জার্মানির কোনো আণবিক চুল্লি ঐ ধরণের বিমান দুর্ঘটনা থেকে সুরক্ষিত নয়৷

গ্রিনপিস’এর প্রতিবাদছবি: picture-alliance/dpa

আণবিক চুল্লিকে বিমান দুর্ঘটনা থেকে সুরক্ষিত করাটা খুব সহজ কাজও নয়৷ স্টাই বললেন:

‘‘সব আণবিক চুল্লিকে বিমান ভেঙে পড়া থেকে সুরক্ষিত করতে গেলে যা খরচ পড়বে, তা দেওয়া সম্ভব নয়৷ তাহলে পরমাণু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আর কোনো মুনাফা থাকবে না৷''

জার্মানির ‘দি ভেল্ট' দৈনিকের খবর অনুযায়ী, অপ্রকাশিত রিপোর্টে যে সব ঘাটতির কথা বলা হয়েছে, সে সব দূর করতে হলে ২৫ বিলিয়ন ইউরো অবধি খরচা হতে পারে৷ এবং স্পষ্টতই বিমান দুর্ঘটনা থেকে সুরক্ষিত করার ব্যাপারটা তার মধ্যে ধরা নেই৷ এ তো গেল অর্থের দিকটা৷ অন্যদিকে রিপোর্টে ইইউ কর্মকর্তারাই অভিযোগ করেছেন যে, ১৯৮৬ সালে চেরনোবিল বিপর্যয়ের পর যে সব পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ছিল, তার কিছুই করা হয়নি৷ এবং এবারেও ঠিক তাই হবে, বলছেন ইওখেন স্টাই:

‘‘জনসাধারণকে বোঝানো হচ্ছে, আমরা একটা স্ট্রেস টেস্ট করলাম; আমরা নিরাপত্তার নতুন আইনকানুন করলাম; আমরা ঝুঁকির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছি৷ কিন্তু শেষমেষ কিছুই বাস্তবায়ন করা হবে না৷''

কাজেই তেসরা অক্টোবর না হয়ে ১৮ই অক্টোবরই হোক, আর রিপোর্টে স্ট্রেস টেস্টের ফলাফল অতটা শঙ্কাজনক হোক আর নাই হোক, তাতে কিছু এসে যাবে না, বলছেন স্টাই৷ ইউরোপীয় কমিশনের ঐ স্ট্রেস টেস্ট আসলে একটা সেডেটিভ ছাড়া আর কিছু নয়৷

প্রতিবেদন: ডির্ক কাউফমান/এসি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ