চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল তাঁর নববর্ষের বার্তায় বলেছেন, জার্মানির উন্নয়নে ইউরোপের গুরুত্ব রয়েছে৷ সামগ্রিকভাবে ইউরোপের উন্নতি হলেই জার্মানিরও উন্নতি হবে বলে মনে করেন তিনি৷
বিজ্ঞাপন
The German Chancellor's New Year Address
06:10
২০১৪ সালকে স্বাগত জানিয়ে জার্মান নাগরিকদের উদ্দেশ্যে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন চ্যান্সেলর ম্যার্কেল৷ সেখানে তিনি প্রতিটি নাগরিককে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মানসিকতা অর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন৷ ম্যার্কেল বলেন, ‘‘আমরা নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকে নিজেদের জীবনে যা অর্জন করি, সেটা যত ছোটই হোক, বৃহত্তর পরিসরে তা আমাদের দেশকে প্রভাবিত করে৷'' তিনি বলেন, জার্মানি তথা ইউরোপকে এগিয়ে নিতে প্রতিটি জার্মানের ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধ ও উদ্যোগ – এই দুটো গুণ থাকা প্রয়োজন৷
জার্মান নির্বাচন বদলে দিল অনেক হিসাব
জার্মানির সাধারণ নির্বাচনে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল-এর খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী শিবির বিপুল জয় অর্জন করেছে৷ তবে বদলে গেছে অনেক হিসাবনিকাশ৷ চলুন দেখা যাক নির্বাচন পরবর্তী অবস্থা৷
ছবি: Reuters
বিজয়ী হাসি
২০১৩ সালের জার্মান নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতেছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং তাঁর দল খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী শিবির৷ তবে ভবিষ্যতে তাদের আগাতে হবে মুক্ত গণতন্ত্রী এফডিপির সঙ্গ ছাড়াই৷ নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল বলছে, অন্তত একটি দলকে সঙ্গে নিয়ে হলেও জোট বাঁধতে হবে ম্যার্কেলকে৷
ছবি: Reuters
একদিকে জয় অন্যদিকে বেদনা
২২শে সেপ্টেম্বর ভোটাভুটির পর জরিপের ভিত্তিতে প্রকাশিত আনুমানিক ফলাফলই বলে দিচ্ছিল খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রীদের সমর্থনে ভোট পড়েছে প্রচুর৷ স্বভাবতই এই ফলাফলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে দলের সমর্থকরা৷ কিন্তু অন্যদিকে এফডিপি ন্যূনতম পাঁচ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় ভেঙে গেছে খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রীদের জোট৷
ছবি: Reuters
উদারপন্থিদের বড় ব্যর্থতা
নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যায়, এফডিপি পাঁচ শতাংশ ভোটও পায়নি৷ ফলে ১৯৪৯ সালের পর এই প্রথম বারের মতো জার্মান সংসদ বুন্ডেসটাগ থেকে বাদ পড়লো সে দল৷ একই সঙ্গে তাদের নিয়ে সিডিইউ/সিএসইউ-র গড়া জোটও ভেঙে গেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
স্বপ্ন ভঙ্গ
সামাজিক গণতন্ত্রী দল এসপিডির চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী পেয়ার স্টাইনব্রুক সবুজ দলের সঙ্গে জোট গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন৷ কিন্তু নির্বাচনে এসপিডি আগের বারের চেয়ে খানিকটা ভালো করলেও সবুজ দল খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি৷ ফলে জোট গড়ার মতো অবস্থায় পৌঁছাতে পারেনি তারা৷ আর বাম দলকে সঙ্গে নিয়ে এসপিডি-সবুজ-বাম জোট গড়ার ইচ্ছা নেই স্টাইনব্রুকের৷
ছবি: Reuters
আপেক্ষিক বিজয়
সর্বশেষ নির্বাচনে আগের বারের চেয়ে আরো খারাপ করেছে বাম দল৷ তা সত্ত্বেও সামান্য ব্যবধানে সবুজ দলের ঠিক পরেই তাদের স্থান হয়েছে৷ প্রাথমিক ফলাফলে কিছুক্ষণের জন্য তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিল দলটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শুরুটা মন্দ নয়
ইউরো বিরোধী দল ‘আল্টারনেটিভে ফ্যুর ডয়চলান্ড’ বা ‘জার্মানির জন্য বিকল্প’ দল প্রথম বারের মতো নির্বাচনে অংশ নিয়েই প্রায় পাঁচ শতাংশ জনসমর্থন জুটিয়ে ফেলেছে৷ পুরো পাঁচ শতাংশ সমর্থন অর্জন হলে জার্মান সংসদে যেতে পারতো সে দল৷ এই অর্জনকে মোটেই খাটো করে দেখছেন না সে দলের চেয়ারম্যান ব্যার্ন্ট ল্যুকে৷ বরং নতুন একটি দলের জন্য এই অর্জন অনেক৷
ছবি: Reuters
অনেক সুযোগ
জার্মানিতে ভোটারের সংখ্যা ৬১.৮ মিলিয়নের মতো৷ সর্বশেষ নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ৭৩ শতাংশ ভোটার৷ মোট ৩৪টি দলের ৪,৫০০ প্রার্থী এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন৷ প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী, সিডিইউ, সিএসইউ, এসপিডি, সবুজ এবং বাম দল জার্মান সংসদে প্রবেশের যোগ্যতা অর্জন করেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
7 ছবি1 | 7
নাগরিকদের উদ্দেশে জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ‘‘আপনাদের ছাড়া রাজনীতি খুব অল্পই সফল হতে পারে৷''
তিনি তাঁর বার্তায় পরিবার প্রথাকে ‘সমাজের মধ্যমণি' হিসেবে আখ্যায়িত করে শিশু ও তরুণদের জন্য সবচেয়ে ভালো শিক্ষার ব্যবস্থা করার অঙ্গীকার করেন৷ এছাড়া জার্মানি যে ধীরে ধীরে আণবিক শক্তির উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বিকল্প জ্বালানির দিকে ঝুঁকছে, সেই কথাও উল্লেখ করেন ম্যার্কেল৷ উল্লেখ্য, ২০২২ সালের মধ্যে দেশের সব পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ম্যার্কেল সরকার৷
চ্যান্সেলর তাঁর বক্তৃতায় অতীতের কথাও উল্লেখ করেছেন৷ মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, ২০১৪ সাল হতে যাচ্ছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর শততম বার্ষিকী, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর ৭৫তম আর বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫তম বার্ষিকীর বছর৷
ম্যার্কেল বলেন, ‘‘কয়েকজনের স্বপ্ন আর অনেকের প্রচেষ্টার ফলে ইউরোপ এখন মিলিয়ন মিলিয়ন নাগরিকের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ আবাসে পরিণত হয়েছে৷''