ইউরোপে অভিবাসনের সুযোগ সম্পর্কে ডয়চে ভেলেকে বিস্তারিত বলেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলে : ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত কয়েকদিন আগে বলেছেন দালালদের পেছনে টাকা খরচ না করে বৈধভাবেই বাংলাদেশিরা ইতালি যেতে পারেন৷ বাংলাদেশের সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তি আছে৷ সেই চুক্তিটার বিষয়ে একটু বলবেন?
ইমরান আহমদ : আমার জানা মতে এমন কোনো চুক্তি এইক্ষেত্রে নেই৷ যেটা আছে, ওদের বিভিন্ন সিস্টেমে যে অর্ডার দেয়, সেইভাবে কার্যক্রম চলে যাচ্ছে৷ কথা হলো, সরাসরি এখান থেকে ম্যানপাওয়ার হিসেবে ইতালিতে খুব কম মানুষ গেছে৷ এখন এগ্রিকালচার ওয়ার্কার হিসেবে যে কিছু মানুষ নিচ্ছে সেটাও একটা সিস্টেমে নিচ্ছে৷
ইউরোপের কোনো দেশের সঙ্গে কি বাংলাদেশের এমন চুক্তি আছে?
আমার জানা মতে নেই৷ এই ধরনের কোনো চুক্তি এখন পর্যন্ত কারো সঙ্গে নেই৷ অবশ্য আমরা চেষ্টা করছি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে এমওইউ করার জন্য, যাতে করে আমাদের শ্রমিকদেরকে এখান থেকে বৈধভাবে পাঠাতে পারি৷
বৈধভাবে দক্ষকর্মী ইউরোপে পাঠাতে সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে?
ইউরোপে একটা সুবিধা আছে, ওখানে ইংরেজি মোটামুটি প্রচলিত আছে৷ বিশেষ করে জার্মানিসহ অনেক দেশ আছে সেসব দেশের ভাষা জানা না থাকলে যারা যান তাদের জন্য অসুবিধা হয়৷ যে চাহিদা এই মুহুর্তে ইউরোপে আছে, নার্সসহ বিভিন্ন সেক্টরে, সেখানে কিন্তু যারা যাবে তাদের মানুষের সঙ্গে মিশতে হবে, ফলে ভাষাটা ভালোভাবে শিখে যেতে হবে৷ সেই হিসেবে আমরা ইউরোপের বেশ কয়েকটা দেশের ভাষাটা শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছি৷ এবং এর সাথে ইউরোপের চাহিদা মোতাবেক সার্টিফিকেশন, এটা যদি আমরা এখানে থেকে দিতে পারি এবং সেটা ওখানে যদি গ্রহণযোগ্য হয়, এমন উদ্যোগও কিন্তু আমরা হাতে নিয়েছি৷
‘ইউরোপের বেশ কয়েকটা দেশের ভাষাটা শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছি’
জার্মানিসহ ইউরোপের অনেক দেশ তো নার্সিংসহ নানা খাতে প্রশিক্ষিত কর্মী নিতে চায়৷ এক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগ কী?
ইতিমধ্যে না, আগে থেকেই দেশ থেকে নার্স বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটা নিষেধাজ্ঞা ছিল৷ এই নিষেধাজ্ঞা কিন্তু তুলে নেওয়া হয়েছে৷ এখন নার্স যেতে পারে৷ কিন্তু সমস্যা হলো ভাষা৷ এই ভাষা শেখানোর জন্য আমরা পদক্ষেপ হাতে নিচ্ছি, যাতে নার্সিং ডিগ্রির সঙ্গে ওরা ভাষাটাও শিখতে পারে এবং সেটা ওখানে গ্রহণযোগ্য হয়৷
রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো অনেক বেশি অর্থ নেওয়ার কারণে মানুষ অবৈধভাবে যেতে উৎসাহিত হচ্ছেন৷ এ ব্যাপারে আপনাদের পদক্ষেপ কী?
সত্যি কথা বলতে কী, আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ আসেনি৷ তবে আমি বলতে পারি, আমাদের কাছে যদি এমন কোনো অভিযোগ আসে, এই মন্ত্রণালয় কিন্তু জিরো টলারেন্সে বিশ্বাস করে এইসব অন্যায়ের ব্যাপারে৷ সঙ্গে সঙ্গে আমরা অ্যাকশনে চলে যাবো৷
ইউরোপে বাংলাদেশিদের যাওয়ার মূল কারণ কী? কেবল জীবিকা, নাকি স্থায়ী বাসের জন্য?
সত্যি কথা বলতে গেলে, দেশের যে বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা তাতে মানুষ যে পরিমান উপার্জনের জন্য বিদেশে যায়, ওই উপার্জন কিন্তু দেশেও করতে পারে৷ তাই জীবিকার জন্য মনে হয় না৷ তবে হয়ত উন্নত জীবনের কথা চিন্তা করে বিদেশে যান৷
ইউরোপে বৈধ অভিবাসন: যে তথ্যগুলো জানা দরকার
উন্নত জীবনযাত্রা, কর্মসংস্থান, উচ্চশিক্ষা, আশ্রয়- নানা কারণেই অনেকের স্বপ্নের গন্তব্য ইউরোপ৷ প্রতিবছর অনেক মানুষ ইইউভুক্ত ২৭টি দেশে বসবাস ও কাজের সুযোগ পান৷ অন্যদিকে অবৈধভাবে আসা বড় একটি অংশকে ফেরতও পাঠানো হয়৷
ছবি: DW/Ani Ruci
অভিবাসীর সংখ্যা
দুই কোটির বেশি অভিবাসী মানুষের বসবাস ইউরোপের ২৭টি দেশে৷ এ অঞ্চলের শ্রমবাজারে নিযুক্ত রয়েছেন ৮৮ লাখ৷ ২০১৯ সালে ইইউ সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে প্রথমবার রেসিডেন্স পারমিট বা বসবাসের অনুমতি পাওয়া তৃতীয় দেশের মানুষের সংখ্যা ছিল ৩০ লাখ৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/N. Economou
কারা অনুমতি পান
৩৮ ভাগ অভিবাসী রেসিডেন্স পারমিট পেয়েছেন পরিবারের কোনো সদস্য ইউরোপে থাকার কারণে৷ কাজের সূত্রে থাকার অনুমতি পেয়েছেন ১৭ ভাগ৷ আশ্রয়াপ্রার্থী ছিলেন নয় ভাগ৷ শিক্ষাগত কারণে সুযোগ পেয়েছেন চার ভাগ৷ বাকি ৩২ ভাগ অন্যান্য৷
ছবি: Wolfgang Kumm/dpa/picture alliance
অভিবাসীদের দেশ
২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো রেসিডেন্স পারমিট পাওয়াদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিলেন ইউক্রেনের নাগরিক৷ প্রথম দশের মধ্যে বাকিরা যথাক্রমে মরক্কো, চীন, ব্রাজিল, সিরিয়া, রাশিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও বেলারুশের নাগরিক৷
ছবি: DW/V. Muscella
কর্মসংস্থান
তৃতীয় কোনো দেশ থেকে ইউরোপে চাকুরি নিয়ে আসা দক্ষ কর্মীরা পান ব্লু কার্ড৷ এটি নির্ভর করে চাকরির চুক্তিপত্র, পেশাগত যোগ্যতা ও বেতনের উপরে৷ ২০১৯ সালে ৩৭ হাজার বিদেশি নাগরিক ব্লু কার্ড পেয়েছেন ইউরোপে৷ এর বাইরে প্রতি বছর এক লাখের বেশি মানুষ মৌসুমি কর্মী হিসেবে বিভিন্ন খাতে কাজের জন্য আসেন৷ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ও কারখানার কর্মী বা স্বনিয়োজিত কাজেও ইউরোপে বসবাসের সুযোগ পান অনেকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Karmann
পারিবারিক পুনর্মিলন
কোনো অভিবাসী ইউরোপে বৈধভাবে বসবাস ও নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদেরও আনতে পারেন৷ স্বামী বা স্ত্রী, অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান এবং কিছু ক্ষেত্রে অবিবাহিত সঙ্গী, প্রাপ্তবয়স্ক নির্ভরশীল সন্তান, নির্ভরশীল বাবা-মা, দাদা-দাদি কিংবা নানা-নানিও অনুমতি পেয়ে থাকেন৷ নির্দিষ্ট দেশে পৌঁছানোর পর তাদেরকে রেসিডেন্স পারমিট নিতে হয়৷ শিক্ষা, কর্মসংস্থানের সুযোগ কিংবা প্রশিক্ষণও নিতে পারেন তারা৷
ছবি: picture-alliance/W. Rothermel
উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা
এজন্য আগ্রহীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তির অনুমতি, হেলথ ইন্সুরেন্স, অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে অভিভাবকের অনুমতি, কিছু ক্ষেত্রে ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণসহ প্রয়োজনীয় শর্তগুলো পূরণ করে ইউরোপের কোনো দেশে আসার আবেদন করতে পারেন৷ কিছু দেশে পড়াশোনার টিউশন ফি নেই, আছে বৃত্তির সুযোগও৷ এছাড়াও খরচ মেটানোর জন্য শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ১৫ ঘণ্টা কাজের সুযোগ রয়েছে৷ পড়াশোনা বা গবেষণা শেষে কর্মসংস্থানের জন্য মেলে নয় মাস সময়৷
ছবি: Getty Images/J. Juinen
দীর্ঘমেয়াদী রেসিডেন্স
ইউরোপের কোনো দেশে টানা পাঁচ বছর অবস্থানের পর নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ সাপেক্ষে অভিবাসীরা দীর্ঘ মেয়াদে বসবাসের অনুমতি পেতে পারেন৷ এর ফলে কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, সামাজিক নিরাপত্তা ও সহায়তা এবং পণ্য ও সেবাপ্রাপ্তির মতো কিছু ক্ষেত্রে ইউরোপের নাগরিকদের মতোই অধিকার ভোগ করতে পারবেন৷ তবে এক্ষেত্রে আলাদা অভিবাসন ও আশ্রয় নীতি অনুসরণ করে আয়ারল্যান্ড ও ডেনমার্ক৷
ছবি: picture-alliance/Geisler-Fotopress
আশ্রয়প্রার্থী
২০১৯ সালে প্রায় সাত লাখ মানুষ ইউরোপে আশ্রয়ের আবেদন জানিয়েছেন৷ প্রথমবারের মতো যারা এমন আবেদন করেছেন, তাদের ১২ ভাগই সিরিয়ার নাগরিক৷ আফগানিস্তানের আট দশমিক ছয় ভাগ, ভেনেজুয়েলার সাত দশমিক এক ভাগ, কলম্বিয়ার পাঁচ ভাগ, পাকিস্তানের ছিলেন প্রায় চার ভাগ৷ ঐ বছর দুই দশমিক এক ভাগ বা ১৩ হাজার ১৯০টি আবেদন পড়েছিল বাংলাদেশিদের৷ ২০২০ সালে প্রথম দশ মাসে ইউরোপে মোট তিন লাখ ৯০ হাজার মানুষ আশ্রয়ের আবেদন জানিয়েছেন৷
ছবি: AFP
অবৈধদের ফেরত
২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এক লাখ ১৪ হাজার ৩০০ জন অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করেছেন৷ এটি তার আগের বছরের একই সময়ে চেয়ে ১০ ভাগ কম৷ যারা এভাবে আসেন, তাদের একটি বড় অংশকে এক পর্যায়ে ফেরত পাঠানো হয়৷ ২০১৯ সালে চার লাখ ৯১ হাজার জনকে ইউরোপ ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল৷ এক লাখ ৪২ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/G. Papaniko
9 ছবি1 | 9
ইউরোপে ঢুকতে গিয়ে কতজন বাংলাদেশি মারা গেছেন বা কতজন ফিরে এসেছেন এমন কোনো পরিসংখ্যান আছে?
সত্যি কথা হলো কোনো পরিসংখ্যান নেই৷ কারণ, আমরা নিজেরাও জানি না, অনেকে যারা মারা যায়, তাদের খবর আমরা পাই না৷ এছাড়া তাদের কোনো তথ্যও সংগ্রহ করা হয়নি৷ তবে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি, এই তথ্যগুলো যদি সংগ্রহ করতে পারি, তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷ আগামীতে হয়ত জানাতে পারবো৷
যারা মারা যাচ্ছে এবং যারা ফিরে আসছে তাদের বিষয়ে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে থাকে?
এখানে দুইটা হিসেব আছে৷ যারা বৈধ পথে যান আর সেখানে গিয়ে মারা যান, তাদের জন্য এখানে ব্যবস্থা রেখেছি৷ লাশ এলে ৩৫ হাজার টাকা এয়ারপোর্টেই দেওয়া হয় দাফন-কাফনের জন্য৷ আর পরবর্তীতে পরিবারকে আমরা তিন লাখ টাকা দেই৷ অবৈধভাবে যারা ওখানে গিয়ে থাকে, তাদের ব্যাপারে এখনো আমাদের কোনো সুনির্দিষ্ট সিস্টেম করা নেই৷ তবে বিষয়টি আমরা বিবেচনায় রাখছি, যদি কোনোভাবে ওদের হিসেবে আনা যায়৷
যারা অবৈধভাবে গেছে, তাদের বিষয়টি সরকারের নজরে আনার পর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়?
বেশিরভাগ যারা অবৈধভাবে যায়, তারা নিজেরাও কিন্তু স্বীকার করতে চায় না৷ ফলে তাদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়াও কিন্তু কঠিন৷ কিন্তু যারা অবৈধভাবে যায় এবং ওখানে ধরা খায়, ওরা এসে যদি আমাদের কাছে অভিযোগ করে, তাহলে নিশ্চয়ই সরকারি আইন মোতাবেক আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো৷
অবৈধভাবে বিদেশে যারা লোক পাঠায়, সরকার তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে?
সুনির্দিষ্টভাবে যদি আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসে, তাহলে কিন্তু আমরা তাৎক্ষণিকভাবে কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি৷ প্রথমত মোবাইল কোর্ট করে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি৷ সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ওদের লাইসেন্সও স্থগিত করে দিচ্ছি৷ পাশাপাশি ফাইন করছি এবং জেলও দিচ্ছি৷
অভিভাসন বিশেষজ্ঞরা বলেন, মানবপাচারকারীদের যথাযথ শাস্তি হয় না বলেই মানবপাচার বন্ধ হচ্ছে না, এটা কি ঠিক?
মানবপাচার বলতে গেলে, যারা পাঠায় শুধু ওদের কারণে হয় না৷ যারা যেতে চায় ওদের কারণেও হয়৷ ইচ্ছা না থাকলে তো মানবপাচার হয় না৷ টাকা দিয়ে তো হয়ত ইউএইতে বা মধ্যপ্রাচ্যে গেল, ওখান থেকে তুরস্কে বা অন্য কোনো দেশে গেল, এভাবে যাচ্ছে৷ এটা কিন্তু ওয়ানওয়ে ট্রাফিক৷ লাখ লাখ টাকা খরচ করে যাওয়াটা নিশ্চয় শুধু মানবপাচারকারীর কারণে না, যারা পাচার হতে চায় ওদেরও কিন্তু একটা ব্যাপার আছে৷ কিন্তু আমাদের যে আইনগুলো করা আছে, এখানে যে কেউ ধরা পড়লেই, এই যে লিবিয়ায় যারা ধরা পড়েছে ওদের বিরুদ্ধে কিন্তু সিরিয়াস অ্যাকশন হয়েছে৷ আর আমরা যেহেতু ব্যবস্থা করে রেখেছি, ট্রাইব্যুনালও করা আছে৷ এখানে ছাড় দেওয়ার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই৷
গতবছর জুনের ছবিঘরটি দেখুন...
জার্মানিতে বাংলাদেশিদের পরিসংখ্যান
জার্মানির পরিসংখ্যান অফিস ‘ডেস্টাটিস’ বলছে, ২০১৯ সালে ২২৫ জন বাংলাদেশি জার্মানির নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন৷ জার্মানিতে বাংলাদেশিদের বসবাসের সংখ্যাও জানিয়েছে তারা৷
ছবি: DW/A. Mita
রেকর্ড সংখ্যক বাংলাদেশি
জার্মানির পরিসংখ্যান অফিস ‘ডেস্টাটিস’ বলছে, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী ১৫ হাজার ৭১০ জন জার্মানিতে ছিলেন, যা যে-কোনো সময়ের চেয়ে বেশি৷ ছবিতে কেমনিৎস প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Privat
২০১৫ থেকে দুই অংকে
ডেস্টাটিসের কাছে ১৯৮১ সাল থেকে বাংলাদেশিদের হিসাব রয়েছে৷ এতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো জার্মানিতে থাকা বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীর সংখ্যা ১০ হাজারের মাত্রা অতিক্রম করে৷ ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর সংখ্যাটি ছিল ১১ হাজার ৪৮৯ জন৷ এরপর প্রতিবছর সংখ্যাটি বেড়েছে৷ ছবিতে গ্যোটিঙ্গেন শহরে বাংলাদেশিদের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের দৃশ্য দেখতে পাচ্ছেন৷
ছবি: Azizur Rahman
দক্ষিণ এশিয়ার হিসাব
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর জার্মানিতে বাংলাদেশির সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৭১০৷ ঐদিন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ দুই লাখ ৬৩ হাজার ৪২০ জন জার্মানিতে ছিলেন৷ এছাড়া ভারতের ছিলেন এক লাখ ৪৩ হাজার ৭২৫ জন, পাকিস্তানের ৭৫ হাজার ৪৯৫ ও নেপালের আট হাজার ১২০ জন৷
ছবি: DW/Ravi Ranjan
নাগরিকত্বের হিসাব
২০১৯ সালে ২২৫ জন বাংলাদেশি জার্মানির নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন৷ নাগরিকত্ব বিষয়ে ডেস্টাটিসের কাছে ২০০০ সাল থেকে হিসাব পাওয়া যায়৷ এতে দেখা যাচ্ছে, ২০০৮ সালে ১০১ জন বাংলাদেশি জার্মানির নাগরিকত্ব নিয়েছিলেন, যা সর্বনিম্ন৷ আর সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি জার্মানির নাগরিক হয়েছেন ২০০১ সালে (২৭০ জন)৷
ছবি: DW/A. Mita
দক্ষিণ এশীয়দের নাগরিকত্ব গ্রহণ
২০১৯ সালে আফগানিস্তানের দুই হাজার ৬৭৫ জন জার্মানির নাগরিকত্ব নেন, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ৷ এরপরে আছে ভারত, দুই হাজার ১৩০ জন৷ এছাড়া পাকিস্তানের এক হাজার ৭৯০, শ্রীলঙ্কার ৬৬০ ও নেপালের ১০৫ জন জার্মানির নাগরিকত্ব নিয়েছেন৷ ছবিতে স্টুটগার্টে অনুষ্ঠিত ভারতীয় চলচ্চিত্র উৎসবের একটি দৃশ্য দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: DW/V. Kumar
বিশ্বের হিসাব
২০১৯ সালে ১৮৩ দেশের এক লাখ ২৮ হাজার ৯০৫ জন জার্মানির নাগরিকত্ব নেন, যা ২০০৩ সালের পর সর্বোচ্চ৷ ঐ বছর এক লাখ ৪০ হাজার ৭০০ জন জার্মানির নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন৷
ছবি: Imago/STPP
সবচেয়ে বেশি তুরস্কের
২০১৯ সালে তুরস্কের ১৬ হাজার ২০০ জন জার্মানির নাগরিক হয়েছেন, যা সর্বোচ্চ৷ এরপরেই আছে ব্রিটেন (১৪ হাজার ৬০০), পোল্যান্ড (ছয় হাজার) ও রোমানিয়া (পাঁচ হাজার ৮০০)৷